১২ দিন পর সরলো চকবাজারের ২ ভবনের ভস্মীভূত মালামাল
৪ মার্চ ২০১৯ ২০:৫২
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আগুন লাগার ১২ দিন পর চকবাজারের চুড়িহাট্টার হাজী ওয়াহেদ ম্যানসন ও রাজ্জাক ম্যানসনের আগুনে ভস্মীভূত মালামাল সরিয়ে ফেলেছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। ট্রাক দিয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া মালামালগুলো সরিয়ে নেন তারা। আগুন লাগার তিন দিন পর সড়কে থাকা পোড়া মালামাল সরিয়ে নিলেও ভবনের ভেতরে থাকা মালামালে হাত দেওয়া হয়নি। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা জানান, তদন্তের স্বার্থেই আলামত সংরক্ষণের অংশ হিসেবে এসব ভস্মীভূত মালামাল ভেতরেই রাখা ছিল।
সোমবার (৪ মার্চ) দুপুর থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একদল পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে মালামালগুলো সরিয়ে নিতে দেখা যায়।
ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ওয়াহেদ ম্যানসনের ভেতরে থাকা পুড়ে যাওয়া মালামালের ছাই বস্তায় ভরে ট্রাকে তোলা হয়েছে। একইসঙ্গে ওয়াহেদ ম্যানসনের বিপরীত দিকের রাজ্জাক ম্যানসনের নিচে ও ওপরে থাকা পুড়ে যাওয়া মালামালও সরিয়ে নিতে দেখা যায়।
হায়দার মেডিকো নামে যে ওষুধের দোকানটি থেকে ৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেই দোকানের ভেতরে থাকা পুড়ে যাওয়া সবকিছু বের করে আনা হয় এদিন। কেবল কাঠের র্যাক ছাড়া বাকি সবকিছু ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। দেখা যায়, দোকানের ভেতরে দেয়ালের টাইলসগুলোও খসে পড়েছে। দেখে বোঝার উপায় নেই, ঠিক এখানেই আগুনে পুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন মানুষ।
সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী কায়কোবাদ সারাবাংলাকে বলেন, ওপরের নির্দেশনা মেনে পুড়ে যাওয়া মালামাল সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ময়লার ভাগাড়ে নিয়ে এগুলো ফেলা হচ্ছে। এসব মালামাল সরিয়ে নিতে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে, আগুন লাগার ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও উৎসুক মানুষের কমতি নেই। আজও অনেক মানুষ এসে ওয়াহেদ ম্যানসন ভবনটি দেখে গিয়েছেন। কেউ ছবি তুলেছেন, আবার কেউ ভিডিও করেছেন। কেউ বা দেখিয়ে দিয়ে আরেকজনকে বলছেন, এখানেই ডাক্তার মারা গিয়েছিল। ওই যে, দুইতলার কেমিক্যাল গোডাউন থেকে আগুন লেগে ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই যে, রঙের দোকান পুড়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
অন্যদিকে চুড়িহাট্টার নন্দকুমার নামে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল শুরু হলেও ওয়াহেদ ম্যানসনের সামনে গেলেই ভয়ে আঁতকে উঠছেন অনেকেই। রিকশায় যাচ্ছিলেন আসাদুল হাবীব। হঠাৎ তিনি রিকশাওয়ালাকে বলে উঠলেন, এই যাও যাও, তাড়াতাড়ি যাও। একটু দূরে তাকে থামিয়ে কেন এমন করলেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেদিন ভয়াবহ অবস্থা দেখেছি। ওই অবস্থা দেখে চকবাজারের এসব সরু গলি দিয়ে চলাচল করতেই ভয় লাগে। তাই ওই ভবনের নিচে দিয়ে গেলে গা শিউরে ওঠে। এজন্য রিকশাওয়ালাকে তাড়াতাড়ি যেতে বলেছি। আবার যে এরকমটা ঘটবে না, তার কী গ্যারান্টি আছে— প্রশ্ন রাখেন তিনি।
চুড়িহাট্টার আশপাশের বেশ কয়েকটি সড়কে দোকানপাট খুললেও ক্রেতাদের তেমন একটা দেখা মেলেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ এলাকায় শোক চলছে। দোকান খুলে বসে আছি। কবে নাগাদ ব্যবসা শুরু হবে, তা কেউ জানে না।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর