শাশুড়িসহ ৩ জনকে হত্যার দায়ে জামাইয়ের মৃত্যুদণ্ড
৫ মার্চ ২০১৯ ১২:৫১
।।স্টাফ করেসপেন্ডন্ট।।
ঢাকা: রাজধানীর চক বাজারে শাশুড়ি, তার মেয়ে এবং নাতনি হত্যা মামলায় আসামি মো. আল ইসলাম ওরফে জীবনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ-৮ এর বিচারক ফারহানা ফেরদৌস এ আদেশ দেন।
এছাড়া, মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
ওই হত্যাকাণ্ডে নিহতরা হলেন, এ মামলার বাদী মো. শাহবুদ্দিনের বড় বোন রাশিদা বেগম (৬০), তার মেয়ে সীমা (৩০) ও নাতনি বন্যা (২৩)। আসামি জীবন তাদের রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। তার উপস্থিতিতে এদিন রায় ঘোষণা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. মাজহারুল হক জানান, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা হয়েছে।
অপরদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী জামিল আহামেদ এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এ রায় সঠিক বিচার হয়নি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তিনি।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের দিকে চকবাজার এলাকায় রাশিদা বেগম তার মেয়ে সীমা, নাতনি বন্যা, তার জামাই সোহাগ, নাতনি জুঁই ও নাতি সানীকে নিয়ে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।
রাশিদা বেগম তার ছোট মেয়ে সুমীকে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানার নূরুল হক সরদারের ছেলে আল ইসলাম জীবনের সঙ্গে বিয়ে দেন। তাদের দুই সন্তান জুঁই ও সানী। দ্বিতীয় সন্তান সানী জন্মের সময় সুমী মারা যায়।
মৃত্যুর আগে স্বামী আল ইসলাম জীবনকে খুব খারাপ লোক উল্লেখ করে সুমী তার দুই সন্তানকে দেখে রাখতে বলে তার মা রাশিদা বেগমকে। এদিকে, সুমী মারা যাওয়ার পর জীবন তার সন্তানদের নিজের কাছে নেওয়ার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত বাচ্চাদের রাশিদা বেগমের কাছে রাখার আদেশ দেন। তবে জীবন সময়ে-অসময়ে বাচ্চাদের দেখার কথা বলে রাশিদা বেগমের বাসায় যাতায়াত করতো।
২০১৬ সালের ৪ জুলাই ওই বাসায় এসে বাচ্চাদের নেওয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাশিদা বেগম কুপিয়ে জখম করে জীবন। রাশিদা বেগমের মেয়ে সীমা এবং তার নাতনি বন্যা ঠেকাতে গেলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করে সে। রাশিদা বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান। ওই দিন বিকেলে বন্যা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আর ৬ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সীমা।
ওই ঘটনায় রাশিদা বেগমের ছোট ভাই সাহাবুদ্দিন ২০১৬ সালের ৬ জুলাই চকবাজার থানায় জীবনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট আসামি জীবনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর দুইদিনের রিমান্ডের পর জীবন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে।
২০১৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হক তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ৯মে আদালত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে আদালত চার্জশিট ভুক্ত ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য-গ্রহণ করেন।
সারাবাংলা/এআই/এনএইচ