Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাংলাদেশের অর্জন অলৌকিক, উন্নয়নের পথে ৪ চ্যালেঞ্জ’


৫ মার্চ ২০১৯ ২০:৪১

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: শিল্পায়ন, অবকাঠামো, ক্ষুদ্র ঋণ ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি অভূতপূর্ব। তবে এতসব অর্জন সত্ত্বেও বাংলাদেশের সামনে চার ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে— শহরায়ন দুর্যোগ, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং বৈষম্য অন্যতম ঝুঁকি।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ‘ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ মিরাকল অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক এক গবেষণা গ্রন্থে এসব কথা বলা হয়েছে। ওই গবেষণায় উল্লিখিত খাতগুলোতে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে ‘অলৌকিক’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ওই বইয়ের প্রকাশনা উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলা হয়েছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা প্রফেসর ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ হিতোয়েসি হিরাতা।

গবেষণা গ্রন্থটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন এডিবির চিফ ইকোনোমিস্ট ড. ইয়াসোয়াকী সোয়াদা। আলোচনায় ছিলেন বিশ্বব্যাংকের লিড ইকনোমিস্ট ড. জাহিদ হেসেন, বিআইডিএসের রিসার্চ ডিরেক্টর ড. বিনায়ক সেন ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।

সেমিনারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এভাবে দেশের উন্নয়ন করা যাবে, ২০ বছর আগেও অনেকেই এটা বিশ্বাস করত না। কিন্তু আমরা সেটা করে দেখাতে পেরেছি। এটা সত্যিই অলৌকিক। আর এটা সম্ভব হয়েছে সরকারের ধারাবাহিকতা ও সঠিক নেতেৃত্বের কারণে।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী বলেন, সুশাসন নিয়ে সবাই কথা বলে। আমি মনে করি, দারিদ্র্য বিমোচন, সামাজিক সুরক্ষা ও মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করতে পারলে সুশাসন এমনিতেই চলে আসবে। নেতৃত্বের জন্য গবেষণা হওয়া প্রয়োজন এবং সঠিক নেতৃত্ব একটি জাতিকে এগিয়ে দিতে পারে কি না— সেটিও জানা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য বিশ্বাসযোগ্যতা এখন বড় প্রশ্ন। এটি কেবল মানুষে মানুষে নয়, এটি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও প্রযোজ্য। বিশ্বাসযোগ্যতা সুশাসন নিশ্চিত করতে পারে। তবে বিশ্বাসযোগ্যতায় আমরা অনেক দূরে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় আমরা বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে পারিনি। এটি অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ।

বিশ্বব্যাংকের লিড ইকনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, প্রত্যাশার তুলনায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে এবং এর অর্জনও ব্যাপক। এ অর্জনগুলোর কারণ বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। এখন সময় এসেছে অর্জনগুলোকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখার। কারণ আমাদের আকাঙ্ক্ষা বেড়েছে, চাহিদা বেড়েছে। আমাদের সমতুল্য যেসব দেশ আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে গেছে, তাদের কোন কৌশলগুলো আমরা অনুসরণ করতে পারিনি, সেগুলোর দিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, গত ১০ বছর প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। ৯০ দশকের পর থেকে ৬০ শতাংশ দারিদ্র্য কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। টেকসই উন্নয়নের পথে এ দেশ এখন সঠিক পথে আছে। তবে রফতানি পণ্যের স্বল্পতা এখনও বাংলাদেশের জন্য আশঙ্কার কারণ। এছাড়া জনশক্তির দক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকেও উচ্চ অবকাঠামোগত সুবিধা ও গুণগত স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে শহরে আসার পথ বন্ধ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বিনায়ক সেন বলেন, ধারাবাহিকভাবে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও সুশাসন, গণতন্ত্র এও বং বাড়তে থাকা বৈষম্য আমাদের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। উন্নয়নের পথে এগুলো বড় বাধা। আর্থিক খাতেও নতুন করে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আর্থসামাজিক খাতে বাংলাদেশ এগিয়েছে ঠিকই, তবে এখনও এ খাতে বরাদ্দ অপ্রতুল্য।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

পরিকল্পনামন্ত্রী পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বাংলাদেশের অর্জন বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ বিআইডিএস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর