Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘খালেদাকে চিকিৎসা করাতেও ভয় পাচ্ছে সরকার’


৬ মার্চ ২০১৯ ১৭:০৮

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আওয়ামী লীগ মনে করে, খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিতে গেলেও তারা ক্ষমতা হারাবে। তাই তারা তাকে চিকিৎসা করাতেও ভয় পাচ্ছে।”

বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে ঢাকা জেলা বিএনপি এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তার মৌলিক অধিকার। আজকে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরা বারবার বলছি, খালেদা জিয়ার যেখানে পছন্দ সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু সরকার সেটা করছে না।”

ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংগঠনকে শক্তিশালী করে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তবেই দেশনেত্রীকে আমরা মুক্ত করতে পারব। জনগণকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি, চিকিৎসা এবং গণতন্ত্র উদ্ধারে রাজপথে নামতে হবে।”

বিএনপি

তিনি বলেন, “এই দখলবাজ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এক বছরের বেশি সময় ধরে সম্পন্ন বেআইনিভাবে খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে। আমরা জানি, খালেদা জিয়ার প্রত্যেকটি ‘মিথ্যা’ মামলা ও জামিনযোগ্য। কেননা, মামলার অন্যান্য আসামিরা জামিন পেয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে। কারণ একটাই— তিনি গণতন্ত্রের মা।”

ফখরুল বলেন, “গত নির্বাচনে কেউ ভোট দিতে পারেনি। আগের রাতে সব ভোট দখল করে নিয়েছে। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে। সেখানে কেউ ভোট দিতে যায়নি। এতে প্রমাণ হয়, দেশের মানুষ তাদের ওপর আস্থা হারিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা হারিয়েছে।”

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, “পরিষ্কারভাবে বলছি, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমরা প্রত্যাখান করেছি। নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করতে হবে। পুনরায় নিরপেক্ষ কমিশনের তত্ত্বাবধায়নে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আবার নির্বাচন দিতে হবে।”

বিএনপি

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “৭৩ বছর বয়সের একটা মানুষকে বিনা চিকিৎসায় নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে। তাকে তিলে তিলে শেষ করার ষড়যন্ত্র চলছে। সরকারের মন্ত্রীদের বিদেশ থেকে ডাক্তার এসে চিকিৎসা সেবা দেয়। আর খালেদা জিয়া চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কারাগারে থাকার সময় প্যারোলে মুক্ত হয়ে বিদেশে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। সরকারের অবহেলার কারণে খালেদা জিয়ার কোনো ক্ষতি হলে এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।”

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, “এই নিষ্ঠুর ও ফ্যাসিবাদী সরকারের আচরণে আমরা উদ্বিগ্ন। খালেদা জিয়াকে তাদের নিজেদের উদ্যোগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার ছিল। তিনি যাতে দুর্বল হয়ে পড়েন এবং নেতৃত্ব দিতে না পারেন, সে জন্য সরকার এটা করছে। কিন্তু জনগণ এই ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না। রাজপথের মাধ্যমে এর মুক্তি আসবে। আন্দোলন ছাড়া হবে না।”

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “কাদেরকে অকারণে সিঙ্গাপুর নিয়ে দেশের কত কোটি টাকা নষ্ট হয়েছে, সরকারকে তার হিসাব দিতে হবে। হাইকোর্ট বলেছে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করাতে, কিন্তু করাচ্ছে না। এতে সরকারের গাফিলতি প্রমাণ হয়েছে। খালেদার বিরুদ্ধে অন্যায় করা হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে জামিন দিতে হবে।”

মির্জা আব্বাস বলেন, “সাধারণ আসামিরা যেসব সুযোগ-সুবিধা পায়, খালেদা জিয়া সেটাও পাচ্ছেন না। এ জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হবে। খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সেই গণতন্ত্র আজ হারিয়ে গেছে।“

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, “ওবায়দুল কাদেরের যেমন চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে, তেমনিভাবে খালেদা জিয়ারও চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে। তাকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। খালেদার কিছু হলে সরকারকে সেই দায়ভার নিতে হবে।”

ড. মঈন খান বলেন, “খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও রাজনৈতিক মামলা দিয়ে আটকানো হয়েছে। আমরা আফ্রিকা জঙ্গলে আছি। গায়ের জোরে ও বন্দুকের জোরে সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে। সংবিধানে প্রত্যেকটি নাগরিকের চিকিৎসার অধিকার রয়েছে। কিন্তু এই সরকার সংবিধানকে লঙ্ঘন করছে।”

নজরুল ইসলাম খান বলেন, “খালেদা জিয়া বিচারিক কারণে নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কারাগারে। অধিকার এবং গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাইলে গণআন্দোলন তৈরি করতে হবে। হয় মা-কে ফিরিয়ে আনব, না হয় সবাই জেলে যাব।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “খালেদা জিয়া তথা গণতন্ত্রের মা’কে জেলে রেখে গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর এই গণতন্ত্র ফিরে পেতে হলে দেশের মানুষকে সমন্বিত করে আমাদেরকে আন্দোলন করতে হবে। গণতন্ত্রের মাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।”

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালামসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এসজেড/এজেড/এটি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর