যুবলীগ নেতা হত্যায় আসামি রানার ছয় মাসের জামিন
৬ মার্চ ২০১৯ ১৭:৪৫
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: যুবলীগের দুই নেতার হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
তবে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় জামিন আবেদন শুনানির জন্য সোমবার পর্যন্ত সময় নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
বশির উল্লাহ বলেন, রানার বিরুদ্ধে দু’টি মামলা আজ কার্যতালিকায় ছিল। এর মধ্যে যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় আদালত তাকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় জামিন আবেদন কার্যতালিকায় রয়েছে। এটি শুনানির জন্য আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত।
জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপিল করা হবে বলেও তিনি জানান।
ফারুক হত্যা মামলায় ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগ থেকে জামিন পান রানা। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। ওই বছরের ১৯ অক্টোবর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ জামিনের স্থগিতাদেশ চলমান রেখে ৪ সপ্তাহের মধ্যে রুল নিষ্পত্তির আদেশ দেন।
সেই আদেশ অনুযায়ী, শুনানি শেষে রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট বিভাগ। পরবর্তীতে নতুন করে বিচারিক আদালতে জামিন আবেদন করেন রানা।
বশির উল্লাহ জানান, ফারুক হত্যা মামলায় ৫ সেপ্টেম্বর এবং যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় ৩০ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতে জামিন নামঞ্জুর হলে হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করেন আমানুর রহমান খান রানা।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদ ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তৎকালীন এমপি রানা ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করেন। তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায় টাঙ্গাইলের বিচারিক আদালত।
এই মামলায় ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর দণ্ডবিধির ৩০২, ১২০ ও ৩৪ ধারায় সংসদ সদস্য রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন আদালত। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই টাঙ্গাইল শহর থেকে নিখোঁজ হন। ঘটনার পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ তদন্ত শেষে পুলিশ ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তা মামলা হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
এরপর শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার খন্দকার জাহিদ গত বছর ১১ মার্চ, শাহাদত হোসেন ১৬ মার্চ এবং হিরন মিয়া ২৭ এপ্রিল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা বলেন, এমপি আমানুর রহমান খান রানার দিক দিকনির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
সারাবাংলা/এজেডকে/এটি