Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বীকৃতি চান মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন


৭ মার্চ ২০১৯ ০২:০৬

।। ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট।।

রাবি: মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি চেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক কর্মচারী মো. মকবুল হোসেন (৬৫) সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বুধবার (৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে তিনি এ দাবি জানান।

মকবুল হোসেন এখন নগরের বোয়ালিয়া থানার মেহেরচন্ডী এলাকায় থাকেন। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। মকবুল হোসেন তার ছেলে আল-আমিনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা এলাকায় চায়ের দোকানে কাজ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে মকবুল হোসেন জানান, ১৯৬২ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় ক্যান্টিন বয় হিসেবে যোগদান করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক আব্দুল হক, গণিত বিভাগের শিক্ষক আফতাবুল রহিম, রসায়ন বিভাগের শিক্ষক জিল্লুর রহমান ও ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক এনায়েতুর রহমান মকবুল হোসেনসহ কয়েকজনকে মুক্তিযোদ্ধাদের বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করার পরামর্শ দেন। পরে তিনিসহ উপাচার্য বাসভবনের মালি গেদু, বাংলা বিভাগের প্রহরী মফিজ, সাবিরুল হক প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে চলে যান। ফিরে এসে তিনি ও গেদু ৭ নম্বর সেক্টরে ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন চৌধুরীর অধীনে বার্তাবাহকের কাজ শুরু করেন। এ ছাড়াও, তিনি রাজশাহী অঞ্চলের টেলিফোন শাখা বিচ্ছিন্নকরণের কাজ করতেন।

মকবুল হোসেন বলেন, ‘১৮ আগস্ট মুখে করে কাগজ নিয়ে যাওয়ার সময় বিনোদপুর গেটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়ি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমিসহ অনেকজনকে চোখ বেঁধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেককে হত্যা করা হয়। এ অবস্থান আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পাকিস্তানিরা আমার গলায় গ্রেনেড বেঁধে লাথি মেরে পানিতে ফেলে দেয়। পরদিন সকালে জেগে উঠে ঘণ্টাখানেক পর ভারতীয় বাহিনীর একটি গাড়ি দেখতে পাই। পরে তারা আমার চিকিৎসা করায়।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘২০০৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ থেকে অবসর পাই। ২০০৪ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম তোলার চেষ্টা করেছি। ২০১৭ সালে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে অংশগ্রহণ করেছি।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের কাছে ১৯৭২ সালে ভারতীয় এক ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেনের দেওয়া টেলিফোন শাখায় কাজের স্বীকৃতিপত্র। ১৯৯৪ সালের ভোটার পরিচয়পত্র, ২০১৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে অংশগ্রহণের কাগজপত্র দেখান।

জানতে চাইলে মকবুল হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর সবাই কাগজ করাচ্ছিল। আমি তো আর জানি না কাগজের এত মূল্য। সেই সময়ে আমার স্ত্রী ও বড় ছেলে মারা যায়। তাই ওসব করার মানসিকতাও ছিল না। আমার কোনো চাওয়া পাওয়া নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি স্বীকৃতিটা দেয় তাহলেই আমি খুশি।’

সারাবাংলা/একে

মকবুল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর