চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ড: মালিক-ভাড়াটিয়া দুজনেই দায়ী
৮ মার্চ ২০১৯ ১০:৫৬
।। উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর চকবাজার চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাড়ির মালিক ও গোডাউনের ভাড়াটিয়া উভয়েয় দায়ী বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই মুন্সী আতিকুর রহমান। তিনি জানান, ওয়াহেদ ম্যানশন নামের ওই বাড়িটিকে গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেওয়ায় মালিক হাসান ও সোহেল এবং গোডাউন তৈরি করায় ভাড়াটিয়া বোম্বাইয়াকে অভিযুক্ত করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বেশ কয়েকটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানান তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মুরাদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন- ওয়াহেদ ম্যানসনে কেমিক্যাল ব্যবসার অনুমতি ছিল না
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘যে কয়টি প্রতিবেদন জমা পড়েছে ও সংবাদমাধ্যমে নিউজ এসেছে, তাতে মনে হচ্ছে ওয়াহেদ ম্যানশনের দ্বিতীয় তলার কেমিক্যাল গোডাউন থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এক্ষেত্রে ভবনের মালিক ও গোডাউনের মালিক উভয়কেই অভিযুক্ত করা হবে। এখন দুজনকেই দায়ী করে আদালতে চার্জশিট প্রদানের কাজ করা হবে।
আগুনের ঘটনার পর বাড়ির মালিক হাসান ও সোহেল কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা ঘটনার দিনই নাকি ওই বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে। এরপর কোথায় আছে, তা কেউ বলতে পারছে না। পুলিশ সম্ভাব্য অনেক জায়গায় তাদের খোঁজ করেছে, কোথাও তার খোঁজ মেলেনি। অন্যদিকে দ্বিতীয় তলার গোডাউনের মালিক বোম্বাইয়া বলে পরিচিত তাকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বোম্বাইয়া একজন বিহারী। দীর্ঘদিন ধরে ওই বাসা ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে আসছিল। আগুনের ঘটনার সময় আদৌ বের হয়েছে নাকি সেখানেই মারা গেছে সেটাও কেউ বলতে পারছেন না।
চকবাজার থানার আরেক এসআই সারাবাংলাকে বলেন, ‘হাজি গোফরান আলী নামে একজন বোম্বাইয়ার ভাতিজা পরিচয় দিয়ে থানায় এসেছিল তার চাচাকে খুঁজতে। তারাও বোম্বাইয়াকে খুঁজে পাচ্ছে না। আর যদি মারা গিয়ে থাকে তাহলে তার মরদেহ যাবে কোথায়।’
গুরুত্বপূর্ণ এই মামলার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে চকবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মুরাদ আলী আরও বলেন, ‘এখনো আমরা কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি। অভিযান অব্যাহত আছে। এমনকি আত্মীয়স্বজনদেরও নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম অর রশিদ তালুকদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এই মামলার আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। তারা দেশের বাইরে চলে গেল কি-না তাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর চকবাজারে চুড়িহাট্টা এলাকায় ওয়াহেদ ম্যানশনের দ্বিতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে আশেপাশের কয়েকটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। এরপর ঘটনাস্থল থেকে ৬৭ জন নারী-পুরুষ ও শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মালিক হাসান ও সোহেলসহ ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আগুনের ঘটনায় নিহত জুম্মানের ছেলে আসিফ আহমেদ বাদী হয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চকবাজার থানায় অগ্নিকাণ্ডে মৃত জুম্মন নামে নিহত এক ব্যক্তির ছেলে আসিফ আহমেদ বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৩৩৪ (ক)/ ৪৩৬/ ৪২৭/ ৩৪ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর ৫০।
সারাবাংলা/ইউজে/এমআই
কেমিক্যাল গোডাউন চকবাজারের আগুন চুড়িহাট্টার আগুন হাজী ওয়াহেদ ম্যানসন