জব্দ হচ্ছে টেলিটকের ব্যাংক হিসাব
১০ মার্চ ২০১৯ ০১:২০
।। শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: থ্রি-জি স্পেকট্রাম সেবা নিয়ে ৭৯ কোটি ২৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বকেয়া পরিশোধ না করায় টেলিটকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটিকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
গত ৩ মার্চ এনবিআরের নিয়ন্ত্রণাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) এর পক্ষ থেকে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, টেলিটক জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিয়ন্ত্রণাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) অন্তর্ভুক্ত। সেই কারণে এলটিইউ থেকে টেলিটককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড বিটিআরসির কাছ থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে থ্রি-জি স্পেকট্রাম সেবা নেয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এই সেবার বিপরীতে ৭৯ কোটি ২৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এনবিআরকে পরিশোধ করেনি। বকেয়া টাকা পরিশোধে টেলিটককে বারবার নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।
টেলিটকের কাছে পাঠানো চিঠিতে থ্রি-জি স্পেকট্রাম সেবার বিপরীতে প্রযোজ্য মূসক বাবদ ৭৯ কোটি ২৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা অনতিবিলম্বে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় ব্যাংক হিসাব জব্দসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছে থ্রি-জি স্পেকট্রাম অ্যাসাইনমেন্ট ফি বাবদ জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৮৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা বিটিআরসি’র বকেয়া রয়েছে। এ বকেয়া পাওনার ওপর এনবিআরের উৎসে মূসক বা ভ্যাটের পরিমাণ ৭৯ কোটি ২৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। বিপুল পরিমাণ এ সরকারি রাজস্ব আদায় না করেই বিটিআরসি টেলিটকের সেবা অব্যাহত রেখেছে- যা কাম্য নয়।
এ বিষয়ে বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কমিশনার মবিনুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, প্রথম চিঠিতে ৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বকেয়া পরিশোধের কথা বলা হয়েছে। যদি এর মধ্যেও টেলিটক টাকা পরিশোধ না করে তাহলে দ্বিতীয় চিঠি দিয়ে আবার ৭ দিন সময় দেওয়া হবে। এরপর টেলিটকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে।
সারাবাংলার পক্ষ থেকে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক সারাবাংলাকে বলেন, টেলিটক সরকারি প্রতিষ্ঠান। আমরা এনবিআরের চিঠি পেয়েছি। এনবিআরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুপারিশও করা হয়েছে। বিটিআরসির পক্ষ থেকে বকেয়া অর্থ পরিশোধে তাগিদ দেওয়া হবে। এরপরও যদি পরিশোধ না করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, কেউ যদি গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়, তাহলে সেটা অপরাধ। টেলিটক গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। বকেয়া অর্থ পরিশোধে প্রতিষ্ঠানটিকে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও উত্তর মেলেনি। যে কারণে এনবিআরের পক্ষ থেকে ব্যাংক হিসাব জব্দের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
সারাবাংলা/এটি