চিকিৎসা নিতে আসা ৫ থেকে ৭ শতাংশ শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত
১০ মার্চ ২০১৯ ২৩:৩২
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শিশু রোগীদের মধ্যে ৫ থেকে ৭ শতাংশ শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রতিবছর বহির্বিভাগে ৭ হাজার শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেয়। ভর্তি হয় বছরে ৬ শতাধিক শিশু। আর এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর মৃত্যুহার ১ শতাংশ বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
রোববার (১০ মার্চ) শিশু কিডনি সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত ডায়ালাইসিস কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এবারের শিশু কিডনি দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘সুস্থ কিডনি সবার জন্য, সর্বত্র’।
শিশুদের কিডনি রোগের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ও শিশুদের কিডনি রোগ প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের শহীদ ডা. মিলন হলে এ অনুষ্ঠানের আয়েজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের শিশু নেফ্রোলজি বিভাগের হেড অ্যান্ড সিনিয়র প্রফেসর এবং ইন্টারন্যাশনাল পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ইয়াপ হুই কিম। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু কিডনি বিভাগের অধ্যাপক ও পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মাঈন উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নবজাতক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা, পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের (পিএনএসবি) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন খান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু কিডনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রণজিত রঞ্জন রায়।
অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া শিশু কিডনি সপ্তাহ ২০১৯ ও ডায়ালাইসিস কর্মশালার শুভ উদ্বোধন করে বলেন, এই ধরনের কর্মশালা তরুণ চিকিৎসকদের মাঝে শিশু কিডনি রোগ বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে শিশু কিডনি রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিশু কিডনি রোগীদের চিকিৎসাসেবার প্রসারেও বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
অধ্যাপক ডা. গোলাম মাঈন উদ্দিন দেশের হাসপাতালগুলোতে আগত শিশু রোগীর ৫ থেকে ৭ শতাংশ শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত বলে জানান। তিনি বলেন, আক্রান্ত শিশু কিডনি রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ৬০ থেকে ৭০ জন শিশু কিডনি রোগ বিষয়ক চিকিৎসক বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
বর্তমানে দেশে বিএসএমএমইউ, জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা শিশু হাসপাতালে শিশু কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বছরে প্রায় ২ থেকে আড়াই হাজার ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া হচ্ছে।
ডা. গোলাম মাঈন উদ্দিন আরও বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপন ক্রনিক শিশু কিডনি রোগীদের প্রধান চিকিৎসা। এই চিকিৎসা শুধু বিএসএমএমইউয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১১ জন শিশুর কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ দেশের চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রমকে প্রসারিত করার জন্য পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি জার্নাল অব বাংলাদেশ নাম জার্নাল নিয়মিত প্রকাশ করে আসছে বলে জানান তিনি।
সারাবাংলা/জেএ/টিআর