উন্নত হচ্ছে বাংলাবান্দা স্থল বন্দরের সড়ক নেটওয়ার্ক
১১ মার্চ ২০১৯ ০৮:২৯
।। জোসনা জামান।।
পঞ্চগড়ে অবস্থিত বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যদিয়ে আমদানি রফতানি কার্যক্রমে ভারী যানবাহনের ব্যবহার এবং জনসাধারণের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এজন্য ‘নীলফামারী-ডোমার সড়ক ও বোদা-দেবীগঞ্জ সড়ক (নীলফামারী অংশ) এবং ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর সড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ২৫০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। সম্পূর্ণ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এই খরচ মেটানো হবে। আগামী মঙ্গলবার প্রস্তাবিত প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত বছরের ১৫ অক্টোবর পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেয়া বেশ কিছু সুপারিশ প্রতিপালন করায় এখন একনেকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের সঙ্গে সরাসরি এবং দ্রুততম সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর-সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়ক ও ডোমার-দেবীগঞ্জ-পঞ্চগড় সড়ক রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট এন্ড মেইনটেনেন্স (আরএনআইএমপি-২) প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এই প্রকল্পে ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর-নীলফামারী-ডোমার ও বোদা-দেবীগঞ্জ মহাসড়ক এর ৩১ দশমিক ২৩৩ কিলোমিটার সড়কাংশও অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই প্রকল্প মেয়াদ শেষ হওয়ায় সড়কের উন্নয়ন কাজ অসমাপ্ত রয়ে যায়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় সড়ক ৩টি ৫ দশমিক ৫০ মিটার প্রস্থ হতে ৭ দশমিক ৩০ মিটার প্রস্থে উন্নীতকরণসহ উভয় পাশে ১ দশমিক ৫মিটার করে হার্ডশোল্ডার নির্মাণের জন্য সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ হতে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে মোট ২২৯ কোটি ৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এবং গত বছরের জুলাই হতে ২০২১ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের চলতি বছরের ১ আগস্ট প্রকল্প মুল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভার সুপারিশ অনুযায়ী গঠিত কমিটি গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা করে।
প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর গত বছরের ১৫ অক্টোবর পুনরায় পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ ডিপিপি পুনর্গঠন করা হয়েছে। পুনর্গঠিত ডিপিপিতে মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ২৫০ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম গুলো হচ্ছে, এক দশমিক ৪৭ কিলোমিটার বিদ্যমান পেভমেন্ট মজবুতিকরণ, ২০ দশমিক ২১ কিলোমিটার বিদ্যমান পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ, ৩ কিলোমিটার নতুন পেভমেন্ট নির্মাণ, ২ দশমিক ৭৯ কিলোমিটার বাঁক সরলীকরণ, ২৬ কিলোমিটার সার্ফেসিং, ৩১ দশমিক ২৩ কিলোমিটার হার্ডসোল্ডার নির্মাণ, ৪৬ মিটার আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, ১ হাজার ৬৫০ মিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল, ৭ হাজার ২০০ মিটার আরসিসি প্লেট প্যালাসাইডিং, ৮ হাজার ১১৫ বর্গমিটার রোড মার্কিং, ২০ কিলোমিটার নির্মাণকালীন রক্ষণাবেক্ষণ, ২ হাজার ৩৫০ বর্গফুট অফিস ভবন সম্প্রসারণ এবং ২টি রেলওয়ে লেভেল ক্রসিং নির্মাণ করা হবে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নীলফামারী ও দিনাজপুরের মধ্যে বিরাজমান সড়ক নেটওয়ার্কের মান উন্নয়ন তথা নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়াকৃ স্থাপনসহ প্রকল্প এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।
সারাবাংলা/জেজে/জেএইচ