‘ইতিহাসের অংশ হলাম, গর্ব আর সম্মানবোধ করছি’
১১ মার্চ ২০১৯ ১৩:০৫
। তুহিন সাইফুল, স্টাফ করেসপন্ডেট।।
ঢাকা: সকাল এগারটা-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে ভোটারদের লাইন তখন ছাড়িয়ে গেছে শিক্ষাভবন পর্যন্ত। দীর্ঘ লাইনে লম্বা সময় ধরে সহপাঠীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন এই হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী রাইসা রহমান। সারাবাংলার এই প্রতিবেদক ডাকসুর ভোটার হিসেবে অনুভূতি জানতে চাইলে তার চোখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে আনন্দের ঝিলিক।
ব্যালট বাক্স ‘গায়েব’, রোকেয়া হলে ভোট স্থগিত
রাইসা বলেন, ইতিহাসের অংশ হলাম। আমারা কখনো আশা করিনি ডাকসু নির্বাচন হবে। অথচ আমি ছাত্র থাকা অবস্থাতেই এই নির্বাচন হচ্ছে। ভাবতেই অবাক লাগছে আমি ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এটা আমাদের জন্য অনেক গর্বের।
কথা হয় একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইংরেজি বিভাগের অদিতির সঙ্গে। উচ্ছ্বসিত অদিতি বলেন, এইমাত্র ভোট দিয়েছি। নিজের পছন্দমতো প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছি। কেউ প্রভাবিত করার চেষ্টা করেনি। আমি খুবই খুশি আর আপ্লুত।
রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মোনালিসা বলেন, প্রায় একঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। প্রথমে উদ্বেগ ছিল–আদৌ ভোট হবে কি-না? এখন ভাবতেই ভালো লাগছে যে কিছুক্ষণের মধ্যেই ইতিহাসের অংশ হয়ে যাব। নিজের ভেতরে অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে।
মহসিন হলের ছাত্র মেহেদি হাসান মিজান (জিএস প্রার্থী) বলেন, কোনো ভাবিনি ডাকসু নির্বাচন হবে। অথচ এখন এই নির্বাচনের প্রার্থী আমি। খুবই আনন্দিত। ভেতরে অন্যরকম উত্তেজনা কাজ করছে।
ডাকসু নির্বাচন শুরু হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে লম্বা লাইন
একই ধরণের অনুভূতি জানালেন। বললেন, দীর্ঘক্ষণ ধরে ভোট দেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। কখন যে ভোট দিতে পারব জানি না। শুধু মনে হচ্ছে কখন আমার ভোটটা দিতে পারব। হয়তো ভোট দেওয়ার পর মনে হবে–কিছুই না। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত ভোট দিতে না পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমি খুবই এক্সাইটেড ফিল করছি।
কবি সুফিয়া কামাল হল প্রভোস্ট সাবিতা রেজোয়ানা জানান, আমার হলে শুরুতেই বিশৃঙ্খলার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু এখন ভোটগ্রহণ স্বাভাবিক প্রকিয়ায় চলছে। শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহ নিয়ে ভোট দিচ্ছে। লাইনে দাঁড়ািনো শিক্ষার্থীর ভোট শেষ করতে ৬ টা বাজলেও তা নেওয়া হবে।
শামসুন্নাহার হলের আবাসিক শিক্ষিকা টুম্পা জম্মাদার বলেন, এখনও পর্যন্ত আমাদের হলে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। সুষ্ঠুভাবেই ভোট হচ্ছে। প্রত্যেক ছাত্র সংগঠন আমাদের সহযোগিতা করছে । আমরাও তাদের সহযোগিতা করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দীর্ঘ ২৮ বছর পর। এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এদিন সকাল ৮টায় শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বেলা ২টা পর্যন্ত। যদিও কুয়েত-মৈত্রী হল ও রোকেয়া হলে ব্যালট বাক্স গায়েব ও সিলমারা ব্যালট পেপার পাওয়ার অভিযোগে ভোট স্থগিত করা হয়।
সারাবাংলা/টিএস/জেডএফ