ব্যালট বাক্স ‘গায়েব’, রোকেয়া হলে ভোট স্থগিত
১১ মার্চ ২০১৯ ১২:৪২
।। সারাবাংলা টিম।।
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের তালাবদ্ধ একটি কক্ষ থেকে ব্যালট বাক্স উদ্ধারের ঘটনায় ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। হলের ভেতরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সোমবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ব্যালট বাক্সগুলো উদ্ধার করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখে।
হল শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, রোকেয়া হল কেন্দ্রে ৯টি ব্যালট বাক্স থাকার কথা ছিল। কিন্তু সকাল থেকে তিনটি ব্যালট বাক্স পাওয়া যাচ্ছিল না। এই অবস্থায় দেরিতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
পরে শিক্ষার্থীরা হলের তালাবদ্ধ একটি রুম থেকে তিনটি ব্যালট বাক্স উদ্ধার করে। ওই বক্সগুলোতে ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ব্যালট বাক্স তিনটি ভেঙে ফেলেছে।
এর আগে সকাল ৮টায় ডাকসু নির্বাচনে রোকেয়া হল কেন্দ্রে ভোট শুরুর কথা থাকলেও এক ঘণ্টা পর ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
ব্যালট বাক্স উদ্ধার ঘটনার পর সেখানে যান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
তিনি এ ঘটনাকে পরিকল্পিত বলে অভিযোগ করেন।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নূর, লিটন, ছাত্রদলের অনিক এ কাজ করেছে। আজকে ছাত্রলীগের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। গণজোয়ার নসাৎ করার জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে এটি করেছে।’
এদিকে হল সংসদের স্বতন্ত্র্য প্রার্থী শ্রবণা শফিক দীপ্তি বলেন, ‘ছাত্রলীগকে জেতানোর জন্য রোকেয়া হল প্রশাসন এই কারসাজি করেছে। এর দায় একমাত্র হল প্রভোস্টের। উনি কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। আমরা তার পদত্যাগ চাই।’
রোকেয়া হলে বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ব্যালট বাক্স উদ্ধারের ঘটনায় রোকেয়া হলের ৭ মার্চ ভবনে জড়ো হন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। প্রহসনের নির্বাচন মানি না, প্রভোস্টের পদত্যাগ চাই স্লোগানে তারা সেখানে বিক্ষোভ করেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে সেখানে যান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তানজিম উদ্দীন, কামরুল ইসলাম মামুন ও তাহমিনা খানম। তারা ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেন। তবে আপাতত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তারা।
এদিকে রোকেয়া হলে মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। ব্যালট বাক্সে হামলা কেন লিটন নন্দী জবাব চাই স্লোগানে তারা মিছিল করেন তারা।
স্বতন্ত্য জোটের প্রার্থী অরণী সেমন্তী খান বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের নেত্রীরা আমাদের মারধর করেছেন।’
রোকেয়া হলের একজন ভোটার তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘ব্যালট পেপারে সিল নেই সত্য। কিন্তু ব্যালটপেপারগুলো কেন রুমে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এগুলো যদি বৈধ ব্যালট পেপার হতো তাহলে তা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে থাকবে।’
নাজমুন নাহার তামান্না নামে একজন ছাত্রী বলেন, ‘ব্যালট পেপারগুলো সিল মারার জন্য রাখা হয়েছিল। ছাত্রলীগও তো ভোটার তারা কেন এর প্রতিবাদ করছে না?’
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ।
রোকেয়া হলের সভাপতি লিপি আক্তার বলেন, ‘ব্যালট বাক্স যেটা উদ্ধার করা হয়েছে তা সিল মারা না। এটি থাকতেই পারে। এটি পরবর্তীতে যথাসময়ে কাজে লাগানো হতো।’
তার অভিযোগ, কোটা আন্দোলনকারী নেতা নুরু এসে এই ব্যালট বাক্স উদ্ধার করেছে। সে তার দলবল নিয়ে মেয়েদের হলে ঢুকে এ কাজ করেছে। আমরা অবিলম্বে ভোট চালু করার দাবি জানাচ্ছি।
হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী দিশা বলেন, ‘আমরা এই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’
সর্বশেষ খবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. মাহফুজুর রহমান রোকেয়া হল প্রশাসনের সঙ্গে করণীয় ঠিক করতে বৈঠকে বসেছেন।
সারাবাংলা/কেকে/টিএস/জিএস/একে
আরও পড়ুন
তিন ঘণ্টা পর কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটগ্রহণ শুরু
কুয়েত মৈত্রী হলের প্রভোস্ট বরখাস্ত
কুয়েত মৈত্রী হলে সিলমারা ব্যালট পেপার উদ্ধার, ভোটগ্রহণ স্থগিত