সলিমুল্লাহ হলেও পূর্ণ প্যানেলে জয়ী ছাত্রলীগ
১১ মার্চ ২০১৯ ২০:৪৪
।। ঢাবি করেসপন্ডেন্ট ।।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের পর স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের হল সংসদেও পূর্ণ প্যানেলে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এই হলের সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন মো. মুজাহিদ কামাল (৯৬৬ ভোট), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হয়েছেন জুলিয়াস সিজার (৮৯৫ ভোট)।
সোমবার (১১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সলিমুল্লাহ হলের নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। তাতে দেখা যায়, হল সংসদের ১৩টি পদের সবগুলোতেই বিজয়ী হয়েছেন ছাত্রলীগের প্যানেলের প্রার্থীরা।
আরও পড়ুন- বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসায় ভিপিসহ ৩ পদে স্বতন্ত্র জয়ী
ভিপি ও জিএস ছাড়া এই প্যানেল থেকে বিজয়ী বাকি প্রার্থীরা হলেন— সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে নওশের আহমেদ (৮০৩ ভোট), সাহিত্য সম্পাদক পদে আকিব মুহাম্মদ ফুয়াদ (৫৯১ ভোট), সংস্কৃতি সম্পাদক পদে মিশাদ (৫৬৯ ভোট), পাঠকক্ষ সম্পাদক পদে সোহরাব হোসেন (৮৯৯ ভোট), অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া সম্পাদক পদে কাহহার ফাহিম (৭১৬ ভোট), বহিঃক্রীড়া সম্পাদক পদে জাহিদ হাসান (৬৯২ ভোট), সমাজসেবা সম্পাদক পদে মিলন খান (৮৬২ ভোট) এবং সদস্য পদে সৈকত (৮১৯ ভোট), লিমন (৬২৫ ভোট), রাকিব (৭৩৫ ভোট) ও সেজান (৭০৫ ভোট)।
আরও পড়ুন- সর্বাঙ্গীন সুষ্ঠু হয়নি, নতুন তফসিলের দাবি পর্যবেক্ষক শিক্ষকদের
এর আগে, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের হল সংসদে পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে জয় পায় ছাত্রলীগ। অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলে ভিপি-জিএসসহ ১১ পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রলীগের প্রার্থীরা। আর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হলে ভিপি, সাহিত্য সম্পাদক ও সংস্কৃতি সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এই হল সংসদের বাকি ১০ পদে জয় পেয়েছে ছাত্রলীগ।
এর আগে, সোমবার (১১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের দু’টি হল বাদে বাকি ১৬টি হলে সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের ভোটগ্রহণ শুরু হয় সকাল ১১টা ১০ মিনিটে। বিকেল ৫টার দিকে শেষ হয় হলটির ভোটগ্রহণ।
আরও পড়ুন- মুহসীন হলে পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে ছাত্রলীগের জয়
এদিকে, রোকেয়া হলের ভোটগ্রহণ সকাল ৮টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয় এক ঘণ্টা পর। আবার দুপুর ১২টার দিকে রোকেয়া হল থেকে ব্যালট ভর্তি বাক্স উদ্ধারের পর ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। বিকেল ৩টার পর রোকেয়া হলে আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ওই হলের ভোটগ্রহণ সন্ধ্যা ৬টার পর শেষ হবে।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক আবদুল বাছির জানান, রোকেয়া হল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের ভোট দেরিতে শুরু হওয়ায় হল দু’টোর ভোটগণনা শুরু হবে সন্ধ্যায়।
আরও পড়ুন- নুর শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন ছিনতাই করেছে: রাব্বানী
এদিকে, ডাকসু নির্বাচনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমি শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ দিই। তারা শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছে। আমি এটির ভূয়সী প্রশংসা করি।’ এ নির্বাচনের মাধ্যমে সামনের দিনগুলোতেও গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি নতুন মাত্রায় এগিয়ে নেওয়ার অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
তবে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ছাত্রলীগ ছাড়া ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া সবগুলো ছাত্র সংগঠনের প্যানেলই নির্বাচন বর্জন করেছে। দুপুর ১টায় মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের প্রতি ‘ঘৃণা’ জানিয়ে ডাকসু নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেয় চার জোট। এসময় বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর দুই জোট ‘প্রগতিশীল ছাত্র জোট’ ও ‘সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য’ লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেয়। বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ভিসির পদত্যাগ ও ফের ডাকসু নির্বাচন চেয়ে বিক্ষোভ করেন।
আরও পড়ুন- ডাকসু’র ‘কলঙ্কিত’ নির্বাচন বাতিল চায় ঢাবি সাদা দল
তবে ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ছাত্রলীগের বিপক্ষে ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রলীগ। বিকেলে মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, ছাত্রলীগকে ঠেকাতে এবং নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে ছাত্র ইউনিয়নের লিটন নন্দী, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর ও ছাত্রদলের অনিক একজোট হয়েছে ষড়যন্ত্র মঞ্চায়ন করেছে। বিভিন্ন জোটের পক্ষ থেকে নতুন করে ডাকসু নির্বাচনের দাবিকে হাস্যকর বলে আখ্যা দেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
সারাবাংলা/কেকে/টিআর
ডাকসু নির্বাচন ঢাবি স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হল হল সংসদ নির্বাচন