Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শাহজালাল যেন মশাদের অভয়ারণ্য!


১৩ মার্চ ২০১৯ ০৮:২৪

।। শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিমানবন্দরের ভেতরে কিংবা বাইরে শান্তিতে বসার কোনো উপায় নেই। চারিদিকে মশা আর মশা। দিন কিংবা রাত নয়, ২৪ ঘণ্টাই মশার উপদ্রব। আর মশার কামড়ে অতিষ্ঠ যাত্রী, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই। এ যেন মশাদের অভয়ারণ্য!

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, মশা নিধনে তারা কাজ করছে। তবে বাস্তবে তার কোনো সুফল চোখে পড়েনি।

এদিকে শাহজালালে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলছেন, বিমানবন্দরের ভিআইপি ওয়েটিং রুম, বিমানে ওঠার আগে বিশ্রামাগার, বোডিং পাস কাউন্টার, ইমিগ্রেশন, টয়লেট রুম, কাস্টমস এরিয়া, এয়ারপোর্ট এপিবিএন অপারেশন রুম সব জায়গায় মশা আর মশা।

আরও পড়ুন:  শাহজালাল বিমানবন্দরে মশা নিধনে রুল

সরেজমিনে বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব দেখা গেছে। দিনে মশার দাপট কিছুটা কম থাকলেও বিকেল থেকে শুরু হয় মশার উপদ্রব। আর বিদেশ থেকে আসা প্রিয়জনদের জন্য যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করেন, তাদেরকে মশার কামড় খেয়েই সময় পার করতে হয়।

২০১৮ সালের ২৩ জুন রাতে একঝাঁক মশা থামিয়ে দেয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার কথা ছিল মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের এমএইচ ১৯৭ নম্বর ফ্লাইটটির। ফ্লাইটটিতে দেড়শ যাত্রী ছিল। কিন্তু বিমানটি যখন রানওয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন বিমানের ভেতরে থাকা যাত্রীরা মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে যান। তখন বিমানটি আবার ফ্লাই না করে বে এরিয়ায় ফিরে আসে। এরপর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। তবে শাহজালালে মশার প্রকোপ কমেনি।

বিজ্ঞাপন

শাহজালালে মশার উৎপাত প্রসঙ্গে টার্মিনাল-১ এর সামনে কথা হয় হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার আঙ্কেল বিদেশ যাবে। সে জন্য রাত ১০টার দিকে শাহজালালে আসছি। ১ ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করছি। কিন্তু মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। আন্তর্জাতিকমানের একটি বিমানবন্দরের অবস্থা যদি এরকম হয় তাহলে অবশ্যই এটি লজ্জাজনক।’

এ বিষয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উপ-পরিচালক বেনী মাধব বিশ্বাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘মশা নিধন করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করা হচ্ছে। বিমানবন্দর এলাকার জলাশয়-জঙ্গল পরিষ্কার করানো হয়েছে। নিয়মিত টার্মিনাল এলাকায় ফগার মেশিনে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। আমরা মশা নিধন করতে এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছি। গতকাল (৫ মার্চ) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেশিন দিয়ে বিমানবন্দরের আশেপাশে ওষুধ ছিটিয়েছি। মশা মরছে কি না সেটা আমরা পর্যবেক্ষণও করছি।’

‘বিমানবন্দরের ভেতরে আমরা যতই মশা মারতে ওষুধ ছিটায় কি না তাতে কাজ হবে না। কারণ বিমানবন্দরের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে জলাশয় রয়েছে। সেগুলো থেকে মশার উৎপত্তি হচ্ছে। আর এখান থেকে যে মশার উৎপত্তি হচ্ছে সেটা কন্ট্রোল করার কোনো সুযোগ আমাদের নেই’ বলেন বেনী মাধব বিশ্বাস।

সিটি করপোরেশনের কর্মীরা শাহজালাল বিমানবন্দরে মশা নিধনে ওষুধ ছিটাতে পারে না এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অবশ্যই পারে। সিটি করপোরেশন থেকে যখনই লোক আসে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকি। ফলে সিটি করপোরেশনের লোক শাহজালালে ওষুধ দিতে পারে না এই অভিযোগ ঠিক নয়।’

বিজ্ঞাপন

শাহজালাল বিমানবন্দরে মশার উৎপাত বেড়েই চলেছে এই প্রসঙ্গে সিটি করপোরেশন কোনো উদ্যোগ নেবে কি না এমন প্রশ্ন করা হলে ঢাকা ‍উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিটি করপোরেশনের লোক প্রবেশ করতে পারে না। এ জন্য শাহজালালে মশা মারতে ওষুধ দিতে পারে না সিটি করপোরেশন। এরপর আমি মেয়র হয়েই মৌখিকভাবে শাহজালালে মশা নিধনে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘শাহজালাল বিমানবন্দরে কয়েকটি গ্রুপ কাজ করে। আমরা খুব দ্রুত সকলকে নিয়ে একটি আলোচনা সভা করব। সেখানে শাহজালালে কীভাবে মশা নিধন করা যায় সেটার উপায় বের করা হবে। আশা করছি, আমরা যখন উদ্যোগী হয়েছি তখন মশার যন্ত্রণা থেকে অবশ্যই যাত্রী সাধারণ ও বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা রেহাই পাবেন।’

সারাবাংলা/এসজে/একে/জেএএম

শাহজালাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর