Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রংমিস্ত্রি থেকে প্রতারক চক্রের সদস্য


১৫ মার্চ ২০১৯ ১৭:০০

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: সৌদি আরবের মুদ্রা রিয়াল বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি করার নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল সংঘবদ্ধ চক্রের সাত সদস্য। পেশায় তারা রংমিস্ত্রী, কিন্তু মূল কাজ প্রতারণা করে গ্রাহকদের ঠকানো। প্রতারণার মাধ্যমে তারা কোটি কোটি টাকা উপার্জনও করেছে। উত্তরা ও টঙ্গিতে অভিযান চালিয়ে এই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১)।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিং করে শুক্রবার (১৫ মার্চ) জানানো হয়, প্রতারক চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে গিয়ে রঙের কাজ করত। এই সুযোগে তারা সংশ্লিষ্ট বাড়িগুলোর বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ জমিয়ে বিশ্বাস অর্জন করে জানাত, তাদের কাছে সৌদি রিয়াল আছে। সেগুলো তারা কম দামে বিক্রি করতে চায়। তাদের টার্গেট ছিল মূলত সৌদি আরবগামী কিংবা হজযাত্রী।

প্রতারকচক্রের সদস্যরা হলো, দলপতি আবু শেখ, সহযোগী শাহিন মাতব্বর, মহসিন মিয়া, আবুল বাশার, কামরুল শেখ, ইশারত মোল্লা ও আব্দুর রহমান মোল্লা।

র‌্যাব-১-এর সিও (কমান্ডিং অফিসার) লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘প্রতারক চক্রের সদস্যরা রংমিস্ত্রির কাজ করার সুবাদে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে গিয়ে বয়স্ক লোকদের টার্গেট করত। এরপর তারা কম দামে রিয়াল বিক্রির কথা বলত। রিয়ালের বান্ডিলের মধ্যে দুই চারটি ভালো নোট দিয়ে বাকিগুলো সাদা কাগজ কিংবা অন্য কিছু দিয়ে এমনভাবে বান্ডিল করত, যা দেখে বোঝার কোনো উপায়  থাকত না। পরবর্তী সময়ে বান্ডিল খুলে গুনতে গিয়ে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ত।’

একইভাবে প্রতারকচক্রের সদস্যরা হজ মৌসুমে গ্রাম থেকে আসা হজযাত্রীদের টার্গেট করত। তারা রিয়াল বিক্রির সময় এমন পরিবেশ তৈরি করত যেন বেশি দেরি করলে পুলিশ চলে আসবে এই ভেবে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই তাড়াহুড়ো করত। রিয়াল বিক্রির পর প্রতারক সদস্য চলে গেলে বান্ডিল খুলে বুঝতে পারত যে, বান্ডিলে বেশিরভাগই সাদা কাগজ বা জাল নোট।

বিজ্ঞাপন

এমনিভাবে গুলশান-বনানীর ব্যস্ত সড়কে গাড়ি যখন যানজটে পড়ে থাকে তখন এই প্রতারক সদস্যরা গাড়ির লোকদের কম দামে রিয়াল বিক্রির প্রলোভন দেখাত। অল্পদামে বিদেশি মুদ্রা কিনতে পারায় ক্রেতারাও খুশি থাকতেন। কিন্তু গুনতে গিয়ে বুঝতে পারতেন, আসলেই তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

সিও বলেন, ‘এমন কিছু অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব অনুসন্ধানে নামে প্রতারক সদস্যদের পাকড়াও করতে। অবশেষে গত ১৪ মার্চ রাতে উত্তরা ও গাজীপুরের টঙ্গি এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের সাত প্রতারককে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ রিয়াল ও ১০টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।’

র‌্যাবের সিও আরও বলেন, ‘প্রতারকচক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। এরইমধ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে স্বীকার করেছে প্রতারকরা। শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

প্রতারকচক্র প্রতারণা র‍্যাব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর