Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডাকসু নিয়ে নানা অভিযোগে ঢাবি কর্তৃপক্ষের জবাব


১৬ মার্চ ২০১৯ ১৭:৩০

।। ঢাবি করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শনিবার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ জবাব পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচন আনন্দঘন পরিবেশে হয়েছে। একে প্রশ্নবিদ্ধ করা কোনোক্রমেই কাম্য নয়।

এর আগে, ডাকসু নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে অন্তত আটটি প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে। পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষর্থীরা মঙ্গলবার থেকে গতকাল রাত ১১টা পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি পালন করে। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তারা অনশন ভঙ্গ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের হেনস্তা, আগে থেকেই সিল মেরে রাখা ব্যালট উদ্ধারসহ নানা বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও মন্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। তাই বিভ্রান্তি দূর করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনো কোনো মহল/ব্যক্তি ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে মনগড়া মন্তব্য ও ব্যাখ্যা দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। এটা কোনোক্রমেই কাম্য হতে পারে না। দু’একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ছাড়া ডাকসু নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে।

‘দীর্ঘ প্রায় তিন দশক পর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের মতো এক বিরাট কর্মযজ্ঞের আয়োজনে ও ব্যবস্থাপনায় অনিচ্ছাকৃত কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে’-বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একথা লিখিত এবং বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে বারবার জানিয়েছে। পাশাপাশি ব্যবস্থাপনার নীতিমালায় কিছু অস্পষ্টতা ও অপর্যাপ্ততা ছিল বলেও স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ। তবে ভবিষ্যতের জন্য ভাবনার অনেক সুযোগ করে দিয়েছে এবারের ডাকসু নির্বাচনের অভিজ্ঞতা।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ লাইন, কালক্ষেপণ প্রভৃতি বিষয়ে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগে কর্তৃপক্ষ জানায়, হল প্রশাসন শুরু থেকেই বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছিল, যাতে কোনো কৃত্রিম সংকট বা ভোগান্তি না হয়। সেজন্য ভোটদানের সময় ও ভোটার সংখ্যা আমলে নিয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক বুথ ও ব্যালট পেপার সরবরাহ-টেবিল বসানো হয়েছিল। কেউ ভোট দিতে পারেননি, কারো ভোট অন্য কেউ দিয়েছেন, কেউ হেনস্তা হয়েছেন-এমন কোনো অভিযোগ কোনো রিটার্নিং অফিসার পাননি।

কুয়েত-মৈত্রী হলে সিল মারা ব্যালট পেপার পাওয়াকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ও পীড়াদায়ক’ মন্তব্য করে কর্তৃপক্ষ জানায়, কুয়েত-মৈত্রী হলে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। অবশ্য ভোট শুরুর আগেই এটি চিহ্নিত হওয়ায় বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়। চিফ রিটার্নিং অফিসার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান। হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষকে তাৎক্ষণিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে উপাচার্য একজন নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ দেন। এ ঘটনা অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের কমিটিও করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর।

তবে রোকেয়া হলের ব্যালট পেপার উদ্ধারের বিষয়টি ‘অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর’ বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বলা হয়, ওই ব্যালট পেপার ব্যালট বাক্সে ছিল না। চিফ রিটার্নিং কার্যালয় থেকে পাঠানো ট্রাঙ্কের মধ্যে ছিল। সেসব ব্যালটে কোনো সিল মারা ছিল না। তা ছিল অক্ষত, অব্যবহৃত। ব্যালট পেপারের নিরাপত্তার জন্য এটিই সর্বোত্তম পন্থা। রোকেয়া হলে ব্যালট বাক্সের সংখ্যা নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে। মূলত সেখানে ছিল ছয়টি ব্যালট বাক্স (যাতে ভোট নেওয়া হয়)। আর তিনটি ব্যালটের ট্রাঙ্ক ছিল অক্ষত, অটুট। তাই ৯টি ব্যালট বাক্সের ৬টি পাওয়া গেল, ৩টি গোপন করা হয়েছে- এই বক্তব্য অসার ও মনগড়া।

বিজ্ঞাপন

ঢাবি কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আয়োজন ও পরিচালনার সঙ্গে চিফ রিটার্নিং অফিসার ও তার টিম ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪৫০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত ছিলেন। তারা সবাই আন্তরিকতা-স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়ম অনুসরণ করেছে। এখানে এককভাবে বা বিচ্ছিন্নভাবে কারো কোনো কাজের সুযোগ ছিল না। এখন পর্যন্ত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনো অভিযোগ জানায়নি।

ডাকসু নির্বাচনের ফল দেরিতে প্রকাশ নিয়েও ‘ধোঁয়াশা সৃষ্টি’র চেষ্টা করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে বলা হয়, কুয়েত-মৈত্রী ও রোকেয়া হলের উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এ দু’টো হলে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম সাময়িক বাধাগ্রস্ত হয়। সেজন্য ভোটগ্রহণের সময় দেরি হয়।

এছাড়া, ভোট গণনার মেশিন সংখ্যা কম থাকায় এক হলের ভোট গণনার পর অন্য হলের ভোট গণনা করতে হয়েছে। তাই কোনো কোনো হলের ভোট গণনা শেষ করতে দেরি হয়েছে। সর্বশেষ সুফিয়া কামাল হলের ফলাফল পাওয়া যায় রাত প্রায় ১২টায়। এভাবে ১৮টি হলের প্রাপ্ত ফলাফল সমন্বয় করে ডাকসুর চূড়ান্ত ফল তৈরি করতে সময় লাগে রাত ৩টা পর্যন্ত। এরপর ভোর রাত সাড়ে ৩টায় ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

চিফ রিটার্নিং অফিসার ‘বিব্রত বোধ করেছেন’-গণমাধ্যমে পরিবেশিত এমন খবর নিয়ে কেউ কেউ মনগড়া ব্যাখ্যা করে চলেছেন বলে উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষ। তিনি (চিফ রিটার্নিং অফিসার) সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বিব্রতবোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন। এটিকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার কোনো সুযোগ নেই।

বিজ্ঞপ্তিতে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে যদি ভোটের কোনো অনিয়ম-জালিয়াতির বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ কারো কাছে থাকলে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর কথা বলা হয়। এরইমধ্যে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থী/প্যানেল থেকে পাওয়া অভিযোগ কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে। এছাড়া ডাকসুর মাধ্যমে এক নতুন গণতান্ত্রিক যাত্রার বিকাশে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়।

সারাবাংলা/এমও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

২ দিনে আয় ২৮৯ কোটি টাকা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৩২

মৌসুমী হামিদের সংসার যেমন চলছে
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৬

সম্পর্কিত খবর