রাঙামাটির ৩ উপজেলায় পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন
১৮ মার্চ ২০১৯ ১৫:০৭
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
রাঙামাটি: রাঙামাটিতে বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর ও কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। একইসঙ্গে সাত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীও তাদের ভোট বর্জনের খবর জানিয়েছেন। ভোট বর্জন করে নির্বাচন স্থগিতের আবেদন করেছেন তারা।
রাতে ভোট গ্রহণ ও দিনে বেলায় ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে না দেওয়ার অভিযোগ এনে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরুর একঘণ্টা পরেই ভোটবর্জনের ঘোষণা দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বড়ঋষি চাকমা এবং তিন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। এ উপজেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দুটি অংশের প্রভাবশালী দুই নেতা বড়ঋষি চাকমা ও সাবেক চেয়ারম্যান সুদর্শন চাকমা মুখোমুখি হয়েছিলেন এবার চেয়ারম্যান পদে।
ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও এবারের প্রার্থী বড় ঋষি চাকমা অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল রাতেই বিভিন্ন কেন্দ্রে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। আজ সকাল থেকেই আমার সমর্থক ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেয়া হয়। জনসংহতি সমিতির (এমএনলারমা) বিপুল সংখ্যক বহিরাগত ও সশস্ত্র কর্মী এলাকায় অবস্থান নিয়ে ভোট সন্ত্রাস করলেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলাম। আমার সাথে আরও তিন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীও নির্বাচন বর্জন করেছে।’
নানিয়ারচরের চেয়ারম্যান প্রার্থী রূপম দেওয়ান অভিযোগ করেছেন, রাতেই বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে গেছে এবং দিনের বেলায় ভোটাররা কেন্দ্রেই যেতে পারছেন না। সঙ্গত কারণেই নির্বাচনে থাকার কোনো মানে নেই। তাই তিনিসহ তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং চার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্জন করে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন।
রূপম দেওয়ান জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী জোন্তিনা চাকমা, পঞ্চানন চাকমাও নির্বাচন বর্জন করেছেন। বর্জনকারি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন রণ বিকাশ চাকমা, সুজিত তালুকদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোয়ালিটি চাকমা ও কনিকা চাকমা।
এদিকে কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনসংহতি সমিতি সমর্থিত প্রার্থী অর্জুন মনি চাকমা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এই উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামীলীগের শামসুদ্দৌহা ও জনসংহতি সমিতির প্রার্থীর অর্জুন মনি চাকমার মধ্যে অর্জুন মনি চাকমা ভোট বর্জন করেন। তিনি জানান, ব্যাপক ভোট কারচুপি ও ভোট প্রদানে ভোটারদের বাধার কারণে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
নানিয়াচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসউদ পারভেজ মজুমদার বলেন, ‘তিন চেয়ারম্যান ও চার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন স্থগিত করার জন্য আমার কাছে একটি আবেদন জমা দিয়েছেন। বিষয়টি আমি রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়েছি।’
রাঙামাটির রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এসএম শফি কামাল বিষয়টি শুনেছেন বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, বাঘাইছড়ি উপজেলায় দুই আঞ্চলিক সংগঠন জনসংহতি সমিতি বড়ঋষি চাকমা ও জনসংহতি সমিতি(এমএন লারমা) সমর্থিত প্রার্থী সুদর্শন চাকমা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে নানিয়ারচর উপজেলায় ৫ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। এদের মধ্যে বর্জনকারী তিন চেয়ারম্যাপন প্রার্থী বাদে রূপম দেওয়ান এবং বর্তমান চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা দুজনই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি( এমএললারমা)র প্রার্থী হিসেবে প্রচার ও দাবি করে আসছিলেন। এই দুই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর কোনও প্রার্থী নেই।
সারাবাংলা/এসএমএন