নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় করের টাকা বিনিয়োগ করতে হবে
১৯ মার্চ ২০১৯ ২০:২৮
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় করের টাকা বিনিয়োগ করার দাবি জানিয়েছে ইক্যুইটিবিডিসহ ১৮টি সংগঠন। তাদের দাবি, বিশ্বজুড়ে খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, বিনোদন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগে পুরুষরা অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অসম নিয়োগ, বৈষম্যমূলক পদোন্নতি-মজুরি কাঠামো এবং আরও নানামুখী বৈষম্যের শিকার নারী। যদিও প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। অন্যদিকে নারীদের গৃহস্থালী ও সেবামূলক শ্রমকে অদৃশ্যশ্রম হিসেবে বিবেচনা করে জাতীয় অর্থনীতির বাইরে রাখা হয়েছে।
গ্লোবাল ডেইজ অব অ্যাকশন উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর ন্যায্যতা এবং নারীর অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ইক্যুইটিবিডি এর আয়োজন করে।
সঞ্চালনা করেন ইক্যুইটিবিডি’র সমন্বয়কারী মোস্তফা কামাল আকন্দ। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়কারী ফেরদৌস আরা রুমী।
বক্তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানি, বিদ্যুৎখাতের বেসরকারিকরণ বন্ধ; সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ; দক্ষ নারী শ্রমিক তৈরির উদ্যোগ; নারীপ্রধান পরিবারকে করের আওতামুক্তকরণ; নারীর সব কাজের আর্থিক মূল্য বিবেচনা; নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং ডে কেয়ারের ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
মানববন্ধনে ফেরদৌস আরা রুমী বলেন, অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ও অবদান দিন দিন বাড়লেও প্রাতিষ্ঠানিক খাতে নারীর অংশগ্রহণ এখনো আশানুরূপ নয়। অথচ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে জড়িত শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ নারী। পুরুষের তুলনায় মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কম ভোগ করেন নারীরা। যদিও এই নারীদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি একই দামে কিনতে হয়। তার জন্য নেই বিশেষ কর মওকুফের ব্যবস্থা বা করনীতি, যা কি না হবে নারীবান্ধব।
বাংলাদেশ কিষাণী সভার সভাপতি রেহানা আকতার বলেন, নগরীর হাতে গোনা দু-একটি গার্মেন্টস ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া কর্মজীবী মায়ের সন্তানদের জন্য নেই শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র (ডে-কেয়ার সেন্টার)। কর্মক্ষেত্রে সমতা আনতে হলে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ ও ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনে সরকারের বিনিয়োগ বাড়ানো উচিত।
বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি বদরুল আলম প্রাতিষ্ঠানিক খাতে নারীদের কর্মসংস্থান আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে বলেন, রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন কাঠামোয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ এবং অবদানকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
ইক্যুইটিবিডি’র প্রধান সঞ্চালক রেজাউল করিম চৌধুরী নারীর গৃহস্থালী কার্যক্রমের আর্থিক স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নারীর গৃহশ্রম ও সেবামূলক কাজকে যদি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়, তাহলে পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে নারী-পুরুষের সমমর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। এর ফলে পুরুষদের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবে পরিবর্তন আসবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক বরকত উল্লাহ মারুফ, ভাসমান নারী শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজা বেগম।
সারাবাংলা/জেএ/এটি