কাগজপত্র নেই, ডিএমপির স্টিকারযুক্ত বাইক আটকাল শিক্ষার্থীরা
২০ মার্চ ২০১৯ ১৬:৩৪
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজধানী শাহবাগ মোড় অবরোধ করে। বুধবার (২০ মার্চ) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের কারণে বিকেল পর্যন্ত শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ হয়েছিল। এদিন শাহবাগ চত্বরের দিকে যেসব গাড়ি আসে সবগুলোর লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র যাচাইয়ের কাজ করে শিক্ষার্থীরা। তাই প্রয়োজনীয় কাগজ সঙ্গে না থাকায় ডিএমপির জিপ ও বাইক আটকে দেওয়ারও ঘটনা ঘটেছে শাহবাগে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছাত্র-ছাত্রীরা ডিএমপির একটি জিপ ও একটি বাইক আটকে দেয়। এর আগে, একটি পুলিশ ভ্যানও আটকে দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সেই পুলিশ ভ্যানের গাড়ি চালকের লাইসেন্স ছিল না।
শিক্ষার্থীরা লাইসেন্স-বিহীন পুলিশের গাড়ি আটকে দেওয়ার পর ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগান তুলতে থাকে।
ডিএমপির স্টিকারযুক্ত গাড়ি আটকানোর বিষয়ে সারাবাংলাকে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা কাগজপত্র চেক করার জন্য পুলিশের গাড়ি আটকাই। উনি বলছেন যে, তার কাগজপত্র নেই। তার যদি কাগজপত্র না থাকে সে কিভাবে অন্যদের গাড়ির কাগজপত্র চেক করবে!
এসময় অন্য এক শিক্ষার্থীরা বলেন, কালকে আমাদের ভাই মারা গেছে। প্রশাসনের যদি গাড়ির লাইসেন্স না থাকে তাহলে বিচার কিভাবে হবে!
তবে শিক্ষার্থীদের কাছে আটক হওয়া বাইকটিতে থাকা সার্জেন্ট রাসেল জানান, তিনি কাগজপত্র ভুলে বাড়িতে রেখে এসেছেন।
ডিএমপির ভুয়া লোগো লাগানো বাইক
এদিন, আরও একটি বাইক আটকায় শিক্ষার্থীরা যেটিতে ডিএমপির লোগো লাগানো থাকলেও বাইকে থাকা ব্যক্তিটি পুলিশের কোন সদস্য ছিলেন না।
ওই ব্যক্তি জানান, তার ভাগিনা পুলিশের সার্জেন্ট। এজন্য তিনি পুলিশের লোগো ব্যবহার করে লাইসেন্স-বিহীন বাইক চালাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনুনয়-বিনয় করার পর ওই বাইকটিসহ সকল গাড়ি ছেড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
বিকেলে শাহবাগ চত্বরে আসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সহসম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেন। তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সাদ্দাম সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের ছাত্র আবরারের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘সড়ক হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সড়কে মৃত্যুর মিছিল যতদিন পর্যন্ত না বন্ধ হবে ততদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে এই আন্দোলনে আমাদের সমর্থন থাকবে।
এছাড়া, ২৩ তারিখ দায়িত্বগ্রহণের পরপরই ডাকসু নেতারা নৈতিকভাবেই প্রথম কর্মসূচি হিসেবে নিরাপদ সড়কের জন্য কাজ করবে বলে তিনি জানান।
সাদ্দাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাকা যান চলাচল বিষয়ে একটি সার্বিক মডেল প্রণয়ন করা হবে। এক্ষেত্রে গাড়ি চালাতে লাইসেন্স ও মোটরবাইকের ক্ষেত্রে হেলমেট পরিধানসহ বিষয়গুলোতে নজর দেওয়া হবে।
নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাদ্দাম আরও বলেন, শুধু ঢাকা নয় সারাদেশে সড়ক চলাচলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সারাবাংলা/কেকে/এজেডকে/এনএইচ