‘প্রযুক্তির প্রসার না ঘটালে ৩ বছরের মধ্যে পোশাকখাতে ধসের শঙ্কা’
২১ মার্চ ২০১৯ ১৯:৩৫
ঢাকা: দেশের তৈরি পোশাকখাতে প্রযুক্তির প্রসার না ঘটালে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে খাতটিতে ‘বড় ধরনের ধস’ নামবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ১৫তম বেসিস সফটএক্সপোর শেষ দিনে বিজনেস লিডারশিপ মিট অনুষ্ঠানে তিনি এ আশঙ্কার কথা জানান।
দেশে তথ্য-প্রযুক্তি খাতের তিনদিনের সবচেয়ে বড় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। সফট এক্সপোর পার্টনার হিসেবে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। তথ্য-প্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় এই আসরের পর্দা নামছে রাতে।
এ বিষয়ে বেসিস সভাপতি আলমাস কবীর বলেন, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে সামনে রেখে দেশের তৈরি পোশাক খাতে যদি প্রযুক্তির প্রসার ঘটাতে না পারি তবে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে খাতটিতে ধস নামবে বলে আমি মনে করি। ফোরআইআর-এর (রোবটিক, আইওটি) জন্য আমরা যদি নেসেসারি স্কিল ডেভেলপমেন্ট করতে না পারি, তবে আমরা বিশ্ব থেকে অনেক পিছিয়ে থাকবো। আমরা হয়তো রোবটের সফটওয়্যার বানাবো, রোবট রফতানি করবো; কিন্তু সেই রোবট দিয়ে আমেরিকা পোশাক তৈরি করবে।’ এছাড়া পরবর্তী প্রজন্মকে দক্ষ করে তুলতে পাঠ্যপুস্তকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার আহবান জানান বেসিস সভাপতি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেন, ‘প্রযুক্তি খাতে আমাদের আরও দক্ষতা বাড়াতে হবে। আমরা সঠিক পথেই আছি। খাতটিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রযুক্তিখাতে আমরা আমাদের সুযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছি। টু-জি থেকে ফোর-জি ফাইভজিতে আমরা যত দ্রুত গিয়েছি, পার্শ্ববর্তী অনেক দেশও তা করতে পারিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওষুধ শিল্পে প্রযুক্তির আরও প্রসার ঘটাতে হবে। গার্মেন্টেসে রোবটিক ও আইওটি কীভাবে ব্যবহার করতে পারি তা এখনই ভাবতে হবে। আমরা ভ্যাট অনলাইন চালুর উদ্যোগ নিয়েছি, সেখানে সবাই প্রাইভেট সেক্টরের, তাই প্রযুক্তির প্রসারে বেসরকারি খাতকে আরও এগিয়ে আসতে হবে।’
ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল মুক্তাদির বলেন, ‘ওষুধশিল্পে বিশ্বের বহু উন্নত দেশ থেকে আমরা এগিয়ে আছি। প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও খাতটিতে আমরা এগিয়ে আছি। বাংলাদেশের ওষুধের ওপর বহুদেশ নির্ভরশীল। ওষুধটা নকল না আসল তা কি-ওয়ার্ড দিয়ে যাচাই করা যায়। কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক মানুষের হাতে এখনো স্মার্টফোন নেই। তাই খাতটিতে প্রযুক্তির আরও বেশি প্রসার ঘটাতে আরও সময় লাগবে। স্থানীয় সফটওয়্যার কোম্পানি যদি আমাদের সাপোর্ট না দেয় তবে বাইরে থেকে সফটওয়্যার নিয়ে এসে আমরা কাজ করতে পারবো না।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ওসামা তাসীর ও বাংলাদেশ জাপান আইটির সিইও মো. আকবর জেএম ও ইউসেপের প্রেসিডেন্ট পারভীন মাহমুদ।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমআই