রোহিঙ্গাদের বেশিদিন বহন করতে পারবে না বাংলাদেশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
২২ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৩
ঢাকা: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সেদেশে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরুর উদ্যোগ নিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ও বিশ্বনেতৃবৃন্দের সহযোগিতা চেয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, সহিংসতায় নির্যাতনের কারণে পালিয়ে আসা মিয়ানমার নাগরিকদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার পরিচয় দিয়েছিলেন। মাত্র দুই মাসের মধ্যে আসা প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গাদের জন্য দ্রুত আবাসন, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ সরকার।
তিনি আরও বলেন, সীমিত সম্পদের দেশ বাংলাদেশ অতিরিক্ত এই বিশাল জনগোষ্ঠীর চাপ দীর্ঘদিন বহন করতে পারবে না। যত দ্রুত সম্ভব তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বিশ্বনেতৃবৃন্দ এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘বিতাড়িত মিয়ানমার নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবায় সহায়তা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের চারটি সংস্থার মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং ইউএনএফপিএ, ইউনিসেফ, আইওএম এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিগণ স্মারকে স্বাক্ষর করেন। স্মারক অনুযায়ী বিশ্ব ব্যাংকের দেওয়া ৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার অনুদান রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা সেবা কার্যক্রমে ব্যয় করা হবে। সরকারের এই কার্যক্রমে জাতিসংঘের চার সংস্থা সহযোগিতা করবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ও চিকিৎসা বঞ্চিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন পালিয়ে বাংলাদেশে আসে তখন তারা ছিল আরো দুদর্শাগ্রস্থ। তাদের উপর চালানো হয়েছিল শারীরিক নির্যাতন, যাদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। এতো বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য দ্রুত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ছিল আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সরকার সেই চ্যালেঞ্জ সফলভাবেই মোকাবেলা করেছে। আকস্মিক এই মানবিক দূর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ডানডান চেন বলেন, মিয়ানমারের নাগরিকদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আশ্রয়, আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ বিশাল উদারতা প্রদর্শন করেছে। এতো বিপুল সংখ্যক অতিরিক্ত মানুষের জন্য মৌলিক সেবা সহায়তা দিতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পাশে আছে। বিশ্ব ব্যাংক থেকে শিগগিরই আরো প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার সাহায্য আসবে বলে এসময় তিনি জানান।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জিএম সালেহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. কাজী মোস্তফা সারোয়ার, ইউএনএফপি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর আসা টরকেলসন ইউনিসেফ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং আইওএম এর প্রতিনিধিসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জেএ/এমআরপি