সেতু আছে সড়ক নেই, দুর্ভোগে ১৭ গ্রামের মানুষ
২৩ মার্চ ২০১৯ ০৯:০৪
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের পুরানটেপরী গ্রাম। এই গ্রামের কবরস্থানের পাশে চরনরিনা-নওকৈর ডিগ্রিরচর সড়কের উপর ১৮ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল ৪০ ফুট দীর্ঘ একটি কংক্রিটের সেতু।
তবে এটি কখনোই ব্যবহার করা হয়নি। কারণ এই সেতুর দু’পাশে নেই সংযোগ সড়ক। তাই সেতুটি অনেকটা দ্বীপের মতোই একা জেগে আছে পুরো এলাকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০০ সালে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে। এরপর ১৮ বছর পেরিয়েছে, কিন্তু সেতুর দু’পাশে তৈরি করা হয়নি কোনো সংযোগ সড়ক। ফলে সেতুটি এলাকাবাসির কোন কাজেই আসছে না। এরই মধ্যে সেতুটির রেলিং ভেঙ্গে পড়েছে। অনেক স্থানে ভেঙে গেছে, শ্যাওলা আর ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে সেতুর চারপাশ।
পরিত্যাক্ত এ সেতুটিতে এখন কাপড় আর জ্বালানির জন্য গোবর শুকানোর কাজ করেন এলাকাবাসি।
শুধুমাত্র সংযোগ সড়ক না হওয়ায় নরিনা, চরনরিনা, টেপরী, চরটেপরী, বারইটেপরী, পুনারটেপরী, নবীপুর, বওশাগাড়ি, সাতবাড়িয়া, আগনুকালি, জয়রামপুর, চিলাপাড়া, ডিগ্রিরচর, কালিপুর, চরনবীপুর, নওকৈর ও রাজপুর গ্রামের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ কষ্ট করছেন। বিশেষ করে বর্ষাকালে তাদের যাতায়াত হয়ে যায় আরো কঠিন।
সেতুটির বিষয়ে কথা হয় চর নরিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ, সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, সাইদুল ইসলাম, কেয়া খাতুন ও স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আব্দুস সেলিমের সঙ্গে। তারা জানান, চর নরিনা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নরিনা হাইস্কুল, সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ, সাতবাড়িয়া কারিগরি কলেজ ও চর নরিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিদিন যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় শুধুমাত্র ওই সংযোগ সড়ক না থাকায়।
এ ছাড়া চর নরিনা বাজার, নরিনা বাজার, সাতবাড়িয়া বাজার ও তালগাছি বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রতিদিন যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে সেতুটির নিচে পানি শুকিয়ে গেলে তাও যাওয়া আসা করা যায়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি নিয়ে ও অনেক কষ্ট করে নৌকায় পার হতে হয়। এতে অর্থ ও সময় দুটোরই অপচয় হয়।
তবে গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় শিগগিরই সেতুটির সংযোগ সড়ক তৈরি করে দেয়া হবে। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমূল হুসেইন বলেন, এলাকাবাসি যদি বিষয়টি নিয়ে লিখিত আবেদন করেন তাহলে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতোদিন কেন বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া হয়নি সে সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
সারাবাংলা/এসএমএন