পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে সড়কে নামছে পুলিশের বিশেষ টিম
২৩ মার্চ ২০১৯ ১৫:১০
ঢাকা: পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে আগামীকাল রোববার (২৪ মার্চ) থেকে রাজধানীর প্রতিটি পরিবহন ইন্টারসেকশন রুটে পুলিশের বিশেষ টিম নামানো হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
তিনি বলেন, বিশেষ এই টিম আগামী সাত দিন সড়কে চলাচলকারী পরিবহন কোম্পানিগুলোর প্রতিযোগিতা রোধ, যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা ও কৃত্রিম যানজট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোচ্চার থাকবে।
শনিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর ডেমরার মাতুয়াইল এলাকায় অবস্থিত শামছুল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী শিক্ষার্থী-অভিবাবক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কমিশনার আছাদুজ্জামান বলেন, আগামী সাত দিন এই ঢাকার শহরে যতগুলো ইন্টারেকশন আছে, সবগুলোতে স্পেশাল পুলিশ দাঁড় করিয়ে দেওয়া হবে। যদি কোনো পরিবহন কোম্পানির কোনো গাড়ি প্রতিযোগিতা করে, রাস্তার মাঝখানে দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করে, কৃত্রিম যানজট তৈরি করে, স্টপ লাইন বরাবর গাড়ি দাঁড় করায়, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালায়, লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চালায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এ বিশেষ টিম। সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, ডিটিসিএর সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা এই কাজগুলো করব।
আগামী দুয়েকমাসের মধ্যে পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় জানিয়ে এ কাজে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, আমরা শুধু আইন প্রয়োগ করি। কিন্তু রাস্তা তৈরি করে সিটি করপোরেশন, গাড়ির ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন দেয় বিআরটিএ। তাই তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি। তাই সবার সহযোগিতা কাম্য।
মাদকের কুফল তুলে ধরে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, মাদকাসক্ত কোনো ব্যক্তি কেবল নিজেকে নয়, পুরো পরিবারকে ধ্বংস করে। এমন মাদকাসক্ত সন্তান পরিবারের জন্য অভিশাপ। তাই মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে অবস্থান নিতে হবে। আজ মাদকের ছোবল থেকে কেউ নিরাপদ নয়। আপনার-আমার সবার সন্তান এ ঝুঁকির মধ্যে আছে।
মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। আসুন, এ মাদকের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি, তাতে ‘৭১-এর মতো আরেকবার আমরা বিজয়ী হই। শুধু তাই নয়, মাদকে জড়ালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোনো পুলিশ সদস্য মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে কিংবা তাদের পক্ষ নেয়, তবে তার শুধু চাকরি যাবে না, সঙ্গে মামলা দিয়ে জেলে ঢুকানো হবে। এটা আমার অঙ্গীকার।
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের স্থান নেই উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, জঙ্গিবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। তার ডাকে সাড়া দিয়ে সারাদেশের মানুষ ধর্ম-শ্রেণি-পেশা-বর্ণ নির্বিশেষে এক অভূতপূর্ব নাগরিক ঐক্য গড়ে তুলেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোয়াত টিম, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট মিলে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত একের পর এক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছি। আমরা জঙ্গি নেটওয়ার্কে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ওয়ারী জোনের ডিসি ফরিদুর রহমান, ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মাসুদ, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায়, স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিল্লুর রায়হানসহ অন্যরা। অনুষ্ঠানে ওয়ারী জোনের এসি, যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানার ওসিসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসটি/টিআর
ডিএমপি কমিশনার ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া পরিবহন খাত পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা সড়কে শৃঙ্খলা