Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধর্ষণ মামলায় জামিন ‘ভয়ংকর’: ফখরুল


২৩ মার্চ ২০১৯ ১৭:০৯

ঢাকা: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গণধর্ষণের নির্দেশদাতার জামিনের বিষয়টিকে ‘ভয়ংকর’ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘কী ভয়ংকর কথা! নোয়াখালীর সুবর্ণচরে যে ব্যক্তির নির্দেশে গণধর্ষণ করা হলো, সেই আওয়ামী লীগ নেতাকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয়েছে। অথচ ওখানে আমাদের শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করা হয়েছে এবং তাদেরকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিচে আয়োজিত গণঅনশনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলা বিএনপি এ গণঅনশন আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু (যুবদলের সাধারণ সম্পাদক), আব্দুস সালাম পিন্টু (বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান) ১০ বছর ধরে মিথ্যা মালায় কারাগারে আটক রয়েছেন। হাবিব-উন-নবী খান সোহেল (বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব) একবছর ধরে কারাগারে রয়েছেন, তাকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। অথচ জামিন দেওয়া হয় মোফাজ্জল হোসেন মায়া, মহিউদ্দীন খান আলমগীর, আব্দুর রবহমান বদিকে, যারা দুর্নীতিবাজ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।’

বর্তমান সরকার ও পাক হানাদার বাহিনীর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। জোর করে, বন্দুক পিস্তল ব্যবহার করে, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে তারা ক্ষমতা দখল করে আছে। তাদের সঙ্গে পাক হানাদার বাহিনীর কোনো পার্থক্য আমরা খুঁজে পাই না।’

কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই নেত্রী (খালেদা জিয়া) যতবার নির্বাচনে দাঁড়ান, কোনোদিন হারেন না। পাঁচটি/তিনটি আসন থেকে নির্বাচন করে প্রতিটি আসনে তিনি জয়ী হয়েছেন। অথচ আওয়ামী লীগের সভাপতি বিভিন্ন আসনে বহুবার হেরেছেন। সমস্যাটা ওখানেই।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই নেত্রী (খালেদা জিয়া) জনগণের কাছে এত প্রিয় যে তার জন্য তারা রোজা রাখে, তার মুক্তির জন্য কাঁদে। সেটাই হচ্ছে প্রতিহিংসার কারণ। সেই প্রতিহিংসার কারণেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটক করে রাখা হয়েছে।’

‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা সম্ভব হবে না’— এমন প্রত্যয় জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, শুধু বিশ্বাস-ই করি না, আমরা প্রমাণ করব যে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মুক্ত করে আনবে।’

বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চলেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। এখানে আইন নেই, কোথাও কোনো বিচার নেই, কোনো শাসন নেই। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে।’

বাংলাদেশকে একটা নতজানু ও পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসাচিব। তিনি বলেন, ‘সমগ্র বিশ্বের পরাশক্তির কাছে তারা (সরকার) বিক্রি হয়ে গেছে। তারা আজকে পরাশক্তির দাসে পরিণত হয়েছে।’

ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে গণঅনশনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদসহ অন্যরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে অনশনরত নেতাকর্মীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান মির্জা ফখরুল  ইসলাম আলমগীর।

এর আগে, জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তিনি বিএনপি মহাসচিব। সদ্য প্রয়াত কবি আল মাহমুদের স্মরণে আয়োজিত ওই সভায় তিনি বলেন, ‘আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। কিন্তু এই কঠিন সময় ‘সহজ সময়’ হয়ে আসবে যদি আমরা সবাই মনে করি, হ্যাঁ, আমরা পারব। আমরা এই নৈরাজ্যকে দূর করতে পারব। আমাদের বুকের ওপর যে পাথর আছে, সেই পাথর আমরা সরাতে পারব।’

স্মরণ সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার, দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, কবি আব্দুল হাই সিকদার, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হেলাল খানসহ অন্যরা। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাসাস নেতা বাবুল আহমেদ।

সরাবাংলা/এজেড/টিআর

গণঅনশন বিএনপি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর