নতুন এডিপিতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে ৪ বিষয়
২৪ মার্চ ২০১৯ ২৩:৪৩
ঢাকা: ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য নতুন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) তৈরির কাজ শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এতে প্রকল্পভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, কেবল অনুমোদিত প্রকল্প এডিপিতে বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করতে হবে। আর এতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে চারটি বিষয়ে— জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট, আগামী অর্থবছরে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত এবং অধিক অগ্রগতি সম্পন্ন প্রকল্প।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২০ মার্চ) নতুন এডিপি প্রণয়নের এই নীতিমালা জারি করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার, দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা এবং মধ্যমেয়াদি কৌশল ও লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা হয় এডিপির মাধ্যমে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এডিপির অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজি লক্ষ্য অর্জন। এসবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অগ্রাধিকার খাতগুলোতে পর্যাপ্ত সম্পদ বরাদ্দের মাধ্যমে উচ্চ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন, কর্মসংস্থান তৈরি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি উন্নয়ন, পরিবহন, পরিবহন, ভৌত ও গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, নগর উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতা, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া সম্ভব হবে।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নুরুল আমিন সারাবাংলাকে বলেন, সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং শত বছরের বদ্বীপ পরিকল্পনার দিকে নজর রেখে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে প্রকল্প নির্বাচনের অনুরোধ করা হয়েছে। তাছাড়া সরকারের যেসব অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মসূচি রয়েছে, সেগুলোর প্রতিও বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে— এমন প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সূত্র জানায়, এডিপিতে বরাদ্দহীন নতুন প্রকল্প যুক্ত করার ক্ষেত্রে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— নতুন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এর আগে অধিগ্রহণ করা অব্যবহৃত জমি কিংবা খাস জমি ব্যবহারের প্রস্তাব করতে হবে। তাছাড়া মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো (এমটিবিএফ) অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দের প্রক্ষেপণ বিবেচনায় নিয়ে নতুন প্রকল্প প্রস্তাব করতে হবে। তাছাড়া অঞ্চলভিত্তিক সুষম উন্নয়ন, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতা রোধে ড্রেজিং, নদী শাসন ও রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে পরিবেশ ও প্রতিবেশের বিষয়ও বিবেচনায় রেখে সমন্বিত প্রকল্প প্রণয়নে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এছাড়া ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সফটওয়্যার শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা বিকাশের মাধ্যমে রফতানি বাড়ানো ও কর্মসংস্থান তৈরিমূলক প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। বলা হয়েছে, এডিপিতে ৩০ শতাংশ প্রকল্প সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে উদ্যেগ নিতে হবে। চলতি অর্থবছরের বরাদ্দহীন অননুমোদিত প্রকল্প নতুন এডিপিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত হবে না। যেসব প্রকল্প এরই মধ্যে পরিকল্পনা কমিশন প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিবেচনা করেনি, সেসব প্রকল্পকেও অন্তর্ভুক্ত না করতে বলা হয়েছে।
নতুন এডিপি তৈরির ক্ষেত্রে আরও বেশকিছু বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা কমিশন থেকে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো— সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও কাঙ্ক্ষিত সুফলপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে এডিপিতে নতুন প্রকল্প গ্রহণের চেয়ে চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ করার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কেবল অনুমোদিত প্রকল্প বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত এবং প্রশাসনিক আদেশ জারি ছাড়া কোনো প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবও করা যাবে না। সম্পদের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে যৌক্তিকতাসহ নতুন প্রকল্প তালিকায় যুক্ত করার প্রস্তাব দিতে হবে। পরিকল্পনা শৃঙ্খলা ও বাজেট ব্যবস্থাপনার স্বার্থে চলতি অর্থবছরে সমাপ্তর জন্য নির্ধারিত কোনো প্রকল্প নতুন এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না।
সারাবাংলা/জেজে/টিআর
২০১৯-২০ অর্থবছর এডিপি পরিকল্পনা কমিশন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি