আগুনের ভিডিও সরবরাহকারীকে ওয়াহেদ ম্যানসন মালিকের হুমকি
২৭ মার্চ ২০১৯ ১০:৫৪
ঢাকা: চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এক মাস পার হলেও বিধ্বস্ত চুড়িহাট্টায় এখনো প্রাণ ফেরেনি। ক্ষত কেবল শুকাতে শুরু করেছে সেখানে। এরমধ্যেই অভিযোগ পাওয়া গেছে যে, ওয়াহেদ ম্যানসনের মালিক মো. হাসান অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ সরবরাহের অভিযোগ এনে একজনকে হুমকি দিয়েছেন।
ওয়াহেদ ম্যানসনের মালিকের হুমকির পর নিজের নিরাপত্তা চেয়ে গত ২৫ মার্চ চকবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন নন্দ কুমার রোডের বাসিন্দা মো. আজম আলী মিয়া।
আজম আলী মিয়ার করা জিডির একটি অনুলিটি সারাবাংলার হাতে রয়েছে। তার জিডি নম্বর-১১৬৬।
তবে জিডির বিষয়ে কিছুই জানেন না চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীমুর রশিদ তালুকদার। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) তার কাছে জিডির বিষয়ে জানতে চাইলে সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ওয়াহেদ ম্যানসনের মালিক কাউকে হুমকি দিয়েছে, তা জানি না। এমনকি জিডি হয়েছে সেটিও আমার নলেজে নাই।’
গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ওয়াহেদ ম্যানসন থেকে উৎপত্তি হওয়া আগুনে ৭০ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত এক ব্যক্তির ছেলে আসিফ ওয়াহেদ ম্যানসনের মালিকের দুই ছেলেসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনের নামে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। তবে ওই মামলায় ওয়াহেদ ম্যানসনের দুই মালিক হাসান ও সোহেল ওরফে শহীদ হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন।
চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করা আজম আলী মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, জামিনে থাকা অবস্থায় হাসান তার মোবাইল ফোন থেকে গত ২০ মার্চ দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে ফোন করেন। তিনি জানতে চান, আগুন লাগার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ কেন সাংবাদিকদের দিয়েছি। ভিডিও ফুটেজ সরবরাহের কারণেই এখন প্রমাণিত হয়েছে যে, ওয়াহেদ ম্যানসনের দ্বিতীয় তলা থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।
আজম আলী বলেন, ‘সিসিটিভিতে ধারণ করা ওই ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করা না হলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল এটাই সবাই বিশ্বাস করেছিল। ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করে কাজটা ঠিক করি নাই এবং ভবিষ্যতে এ নিয়ে পস্তাতে হবে বলে হুমকি দেন।’
চুড়িহাট্টার নন্দ কুমার রোডের ওয়াহেদ ম্যানসনের ঠিক পাশের ৬৫/৬৬ নম্বর ভবনটিতে ছিল সিসি ক্যামেরা। ওই ভবনের নীচ তলার রাজমহল হোটেলের এক কোণায় সিসিটিভি লাগিয়েছিলেন ভবনটির মালিক আজম আলী মিয়া।
ঘটনার পর উদ্ধার হওয়া রাজমহল হোটেলের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে, ওয়াহেদ ম্যানসনের দ্বিতীয় তলায় বিস্ফোরণের পরই চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে যা বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রচার করে। আগুনের ঘটনায় বিভিন্ন সংস্থার গঠিত তদন্ত কমিটিও যা গুরুত্ব সহকারে নেয় এবং পরবর্তীতে ওয়াহেদ ম্যানসনের কেমিক্যাল গোডাউনকে দায়ী করে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ওয়াহেদ ম্যানসনের মালিক মো. হাসানের সাথে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।
সারাবাংলা/ইউজে/এসএমএন