রাকসু ভোটের সংলাপে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ছাত্রনেতাদের
২৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:১০
রাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পর জোরেসোরে চলছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের প্রস্তুতি।
নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে প্রশাসন। তবে সংলাপে ছাত্রলীগের প্রতি পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্র সংগঠনের নেতারা।
ছাত্রনেতাদের অভিযোগ— সংলাপে প্রত্যেক দলের সর্বোচ্চ সাত সদস্য অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু গত ২৪ মার্চ ছাত্রলীগের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে তাদের ২৩ নেতাকর্মী অংশ নেন। এ কমিটির অধীনে রাকসু নির্বাচনের আয়োজন কতটা নিরপেক্ষ হবে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলে দাবি তাদের।
প্রগতিশীল ছাত্রজোটের আহ্বায়ক রঞ্জু হাসান বলেন, ‘গত ২৪ মার্চ ছাত্রলীগের ২৩ নেতাকর্মীকে সংলাপে অংশগ্রহণের সুযোগদানের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বজনপ্রীতি প্রকাশ পেয়েছে। আমরা প্রগতিশীল ছাত্রজোট এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’ আগামী দিনগুলোতে যদি প্রশাসন এ ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখে তবে ডাকসুর মতো রাকসু নির্বাচনও বিতর্কিত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রশাসনের এ ধরনের কর্মকাণ্ড এক প্রকার পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ। আমরা প্রত্যাশা করি, প্রশাসন এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে এবং সবার জন্য সমান অধিকারের সুযোগ প্রদান করবে।’
প্রশাসন যদি কোনো সংগঠনকে বিশেষ সুযোগ প্রদানের চেষ্টা অব্যাহত রাখে তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদল তা প্রতিহত করবে বলেও মন্তব্য করেন কামরুল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর রাকসু নির্বাচনের দাবিতে প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দেয় ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। প্রশাসনও তাদের দাবির প্রতি ইতিবাচকতা দেখিয়ে রাকসু নির্বাচনকেন্দ্রিক ছাত্রসংগঠনগুলোর অভিমত জানতে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের সংলাপ কমিটি গঠন করা হয়। এরপর সংলাপ কমিটি ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর গঠনতন্ত্র ও কমিটির তালিকা জমা নেয়।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে সংলাপের মধ্যদিয়ে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে সংলাপ কমিটি। এরপর ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রদল, ছাত্রমৈত্রীসহ বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ করে কমিটি। সর্বশেষ গত ২৪ মার্চ ছাত্রলীগের সঙ্গে সংলাপ করে প্রশাসন। সবগুলো ছাত্রসংগঠনের কাছে প্রেরিত চিঠিতে অনধিক সাত সদস্য সংলাপে অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়। এমনকি ছাত্রলীগের কাছে পাঠানো চিঠিতেও সাত সদস্যের প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের তুলনায় আমাদের সংগঠন অনেক বড়। আমরা সংলাপ কমিটির কাছে বিষয়টি জানিয়েছিলাম এবং কয়েকজন বেশি আসার অনুমতি চেয়েছিলাম। তিনি আমাদের সাত সদস্যের অধিক আসার অনুমতি দিয়েছেন।’
সংলাপ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের তুলনায় বড় সংগঠন তাই তাদের সাত জনের বেশি অনুমতি দিয়েছি।’
সারাবাংলা/একে/পিএ