বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন, ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি
২৮ মার্চ ২০১৯ ১৮:৪৩
ঢাকা: রাজধানীর বনানীতে এফআর টাওয়ারের আগুনের সূত্রপাত কিভাবে এবং কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন সারাবাংলাকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
আমরা দেখেছি, এফআর টাওয়ারে প্রচুর দাহ্য পদার্থ ছিল। ভবনের ভেতরে ডেকোরেশন করতে ফোম ও সিনথেটিক ফাইবার উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। এর কারণে প্রচুর ধোঁয়া হয়েছে, আগুন নেভানোর চেষ্টায় আমাদের বেগ পেতে হয়েছে- বলেন সাজ্জাদ হোসেন।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (ঢাকা মেট্রো) জুলফিকার আলী বলেছেন, আট তলার ওপরে এখনো আগুন রয়েছে। আমরা নবম তলার গ্লাস ভেঙে আগুন নেভানোর কাজ করেছি। ভবনটি ২১ তলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আগুন নেভাতে গিয়ে আমাদের বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হতে হয়েছে। ভবনটিতে দুইটি সিঁড়ি থাকলেও খুবই সংকীর্ণ। একটির প্রস্থ ৪ ফুট, আরেকটা ২ ফুট। ভবনটি কোনো ধরনের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল না। আমরা আগুন নেভানোর পাশাপাশি উদ্ধার তৎপরতাও চালিয়েছি।
এদিন বিকেল পৌনে ৫টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছেন ফায়ারের ডিউটি অফিসার মিজানুর রহমান। দুপুর পৌনে ১টার দিকে এফআর টাওয়ারে আগুন লেগে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন ভয়াবহ আকার নিলে নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ২১টি ইউনিট।
এক পর্যায়ে এফআর টাওয়ারের আগুন পাশের দুইটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুরন্ত টেলিভিশন এবং এফএম রেডিও টুডে’র সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই ছাদে আশ্রয় নেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তা করতে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা। বিমান বাহিনীর সদস্যরা তিনটি হেলিকপ্টারে যারা আটকা পড়েছিলেন তাদের নিরাপদে নামিয়ে আনেন। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের ল্যাডার ব্যবহার করে অনেককে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়।
উৎসুক জনতার ভিড় সামলাতে পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের হিমশিম খেতে দেখা যায়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৫ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ২৩ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৪ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর তথ্য জানা গেছে।
সারাবাংলার করেসপন্ডেন্টদের জানানো তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আব্দুল্লাহ আল ফারুক; ইউনাইটেড হাসপাতালে মনির (৫০), মামুন (৩৬) ও মাকসুদুর রহমান (৩২); কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে শ্রীলংকার নাগরিক নিরেশ ভিগ্নে রাজা; অ্যাপোলো হাসপাতালে আমেনা এবং বনানী ক্লিনিকে পারভেজ সাজ্জাদের মরদেহ রয়েছে।
সারাবাংলা/ইউজে/এটি