সমকামিতা ও ব্যাভিচারের শাস্তি পাথর নিক্ষেপে হত্যা!
২৯ মার্চ ২০১৯ ০৫:০২
সমকামিতা ও ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে হত্যার আইন কার্যকর হতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ব্রুনেইয়ে। আগামী ৩ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে এই আইন। এই আইনের আওতায় যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হবে। ‘একদল মুসলিম’ এই শাস্তি কার্যকরের প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষও করবে।
সিএনএন এর খবরে বলা হয়, ২০১৪ সালে ব্রুনেইয়ে কঠোর বেশকিছু আইন ঘোষণা করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে সেগুলো চালু করা হয়েছে। সর্বশেষ ধাপে যেসব আইন কার্যকর করা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে হত্যার এই আইনটি। ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সবার অগোচরে ব্রুনেই অ্যাটর্নি জেনারেলের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
ব্রুনেইয়ের এসব কঠোর আইনের তাৎক্ষণিকভাবেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল মানবাধিকার সংস্থাগুলো। এসব আইনের মধ্যে চুরির অপরাধ প্রমাণিত হলে অঙ্গচ্ছেদের বিধানও রয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশন্যালের গবেষক রাসেল চোয়া-হাওয়ার্ড এক বিবৃতিতে বলেন, ব্রুনেইকে অবশ্যই ভয়ঙ্কর এসব আইন বাস্তবায়ন থেকে অতি দ্রুত সরে দাঁড়াতে হবে। তাদের দণ্ডবিধি মানবাধিকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রেখে সংশোধন করতে হবে। এই আইন কার্যকর করা থেকে ব্রুনেইকে বিরত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও জরুরিভিত্তিতে নিন্দা জানাতে হবে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ব্রুনেই প্রথম শরিয়া আইন কার্যকর করে। ২০১৪ সালে এই আইন কার্যকর করার পর তা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক হৈ চৈ ফেলেছিল। শরিয়া আইন হলো ইসলামি আইন ব্যবস্থা, যেকানে কঠোর শারীরিক শাস্তির বিধান থাকে।
বোর্নিও দ্বীপে অবস্থিত ব্রুনেইয়ের জনসংখ্যা সাড়ে চার লাখেরও বেশি। ‘মডারেট মুসিলম’ দেশ হিসেবে পরিচিত ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার নিকটবর্তী এই দেশটি গত কয়েকবছর ধরে রক্ষণশীলতার পথে হাঁটছে। এরই মধ্যে দেশটিতে অ্যালকোহল বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের মে মাসে ব্রুনেইয়ের সুলতান ও প্রধানমন্ত্রী হাসান আল বলখিয়া দেশটিতে শরিয়া আইন অনুযায়ী নতুন দণ্ডবিধি প্রবর্তন করেন। আগের আইনের বদলে নতুন আইন ঘোষণার বিষয়ে সরকারি ওয়েবসাইটে বলখিয়াকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, অন্যরা এই আইনকে গ্রহণ করবে ও এই আইনের প্রতি সম্মতি জানাবে, এটা তার সরকার প্রত্যাশা করে না। তবে তার সরকার যেমন অন্যদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, তারাও ব্রুনেই সরকারের প্রতি তেমন সম্মান দেখানোটাই যথেষ্ট।
সারাবাংলা/কেকে/টিআর