গোলকধাঁধার ব্রেক্সিট: এই নাটকের শেষ কোথায়?
২৯ মার্চ ২০১৯ ১৮:৫৫
যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন যা চলছে তা শেক্সপিয়ারের ঐতিহাসিক কোনো নাটককেও হার মানাবে। দেশটির ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগ অর্থাৎ ব্রেক্সিট বিষয়ে গণভোট হয়েছে প্রায় তিন বছর হতে চললো। তবে সবকিছু এখনো যেন শুরুতেই থমকে আছে।
বৃত্তবন্দি এই সময়ে যা যা ঘটেছে তা হলো, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র কয়েক দফা আলোচনা, ‘ফলহীন’ একটি প্রস্তাবনা তৈরি, কেবিনেটের ডজন খানেক মন্ত্রীর পদত্যাগ।
আরও আছে, নাটকীয় অনাস্থা ভোটে মে’র উতরে যাওয়া এবং দুই-দুবার চুক্তির প্রস্তাবে পার্লামেন্টে বিশাল ব্যবধানে পরাজয়। একইসঙ্গে, ব্রেক্সিট বিষয়ে আরও একটি গণভোটের সম্ভাবনাও নাকচ করে দেওয়া যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত ব্রেক্সিট প্রক্রিয়াকে যতটা প্রলম্বিত ও জটিল করা যায় ততটাই করেছেন ওয়েস্ট মিনিস্টারের কর্তাব্যক্তিরা।
চলতি মাসের ২৯ মার্চ (শুক্রবার) মধ্যরাত ১১টায় যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে ব্রিটিশ আইনপ্রণেতাদের ইচ্ছায় আগামী ২২মে পর্যন্ত ‘ব্রেক্সিট ডে’ পেছাতে সম্মত হয়েছেন ইইউ নেতারা।
তবে জোটটি শর্ত হিসেবে জানিয়েছে, বর্ধিত সময়ের মধ্যে পার্লামেন্ট যদি প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’কে আবারও প্রত্যাখ্যান করে তাহলে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বিলম্ব ব্রেক্সিট। নতুবা যুক্তরাজ্যকে ২৩মে থেকে ২৬মে অনুষ্ঠিতব্য ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচনে অংশ নিতে হতে পারে। আবারও ব্রেক্সিটের বিলম্ব সময় বাড়াতে প্রয়োজন হবে ইইউর বাকি ২৭টি দেশেরও অনুমতি।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র ব্রেক্সিট চুক্তিতে সম্মত না হয়ে পার্লামেন্ট সদস্যরা তাদের নিজেদের প্রস্তাবের ওপরও ভোটাভুটি করেছেন গত ২৭ মার্চ। তবে এবারও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো প্রস্তাব। প্রস্তাবগুলো যত ভোটের ব্যবধানে নাকচ হয়েছে তা হলো, ব্রেক্সিটের পর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে একটি একক কাস্টমস ইউনিয়ন (২৬৪-২৭২); যেকোনো চুক্তিই পাস হওয়ার আগে সেটা নিয়ে একটি গণভোটের আয়োজন করা (২৬৮-২৯৫); বিরোধীদল লেবার পার্টি প্রস্তাবিত বিকল্প ব্রেক্সিট পরিকল্পনা (২৩৭-৩০৭); ইইউ’র সঙ্গে একক বাজার বজায় রাখা (১৮৮-২৮৩); চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে এ বিষয়ক আর্টিকেল প্রত্যাহার করা(১৮৪-২৯৩); ১২ এপ্রিল চুক্তিহীন ব্রেক্সিট (১৬০-৪০০); মল্টহাউজ প্ল্যান বি অর্থাৎ উভয়ের শুল্কমুক্ত বাণিজ্য বজায় থাকবে দু বছর পর্যন্ত ও ইইউ বাজেটে অর্থ দিবে যুক্তরাজ্য (১৩৯-৪২২); ইটিএ ও ইইএ সদস্য (৬৫-৩৭৭)।
অর্থাৎ প্রথম সময়সীমা পেরুনোর শেষ সময়েও ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। যুক্তরাজ্যের এমপিরা তাদের প্রধানমন্ত্রীকে তো বিশ্বাস করতে পারছেন নাই উল্টো তাদের নিজেদের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে। তাই লন্ডনের এসব কাণ্ডে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে ইইউ বলেছে, আমাদের যতটুকু করার (ছাড় দেওয়ার) আমরা করেছি। এখন বাকিটা যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়!
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের বর্তমান ‘অচলাবস্থা’ নিয়ে কথা বলার আগে এবার একটু পেছনে ফেরা যাক,
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলার পর একটি আঞ্চলিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার কথা ভাবতে থাকে ইউরোপের দেশগুলো। সেই ভাবনা থেকে ১৯৫১ সালে গঠন করা হয়, ইউরোপিয়ান কোল এন্ড স্টিল কমিউনিটি (ইসিএসসি)। এরপর, ১৯৫৭ সালে রোম চুক্তির মাধ্যমে, ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিটি (ইইসি) এবং উদ্ভব করা হয় ইউরোপিয়ান অ্যাটমিক এনার্জি কমিটির (ইউরোএটম)।
ইউরোপে একতাবদ্ধ হওয়ার এ সময়টাতে এগিয়ে ছিল ৬টি দেশ। দেশগুলো হলো, বেলজিয়াম, পশ্চিম জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, লুক্সেমবার্গ এবং নেদারল্যান্ডস। ইউরোপের শীর্ষ পরাশক্তি যুক্তরাজ্যকে এসময় সংগঠনগুলোতে বেশ কয়েকবার আসার আমন্ত্রণ জানানো হলেও সেসময় ক্লেমন অ্যাটলির নেতৃত্বাধীন লেবার সরকার তাতে আগ্রহ দেখায়নি। অর্থাৎ স্বাধীনভাবে ব্রিটিশ অর্থনীতির গতি সঞ্চারই ইচ্ছা সরকারের মূল লক্ষ্য।
অপরদিকে, ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন সমঝোতায় এগিয়ে যেতে থাকে চুক্তিবদ্ধ দেশগুলো। ইউরোপে অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহন, ক্ষতিকর বাণিজ্য প্রতিযোগিতা প্রত্যাহার, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে অভিন্ন নীতিমালা, বহিঃবাণিজ্যের বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৮ সালে জোটটির সিদ্ধান্ত হয় দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ শুল্ক বিলোপের। যেটি ছিলো ইউরোপে বাণিজ্য সমৃদ্ধিতে ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিটির সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১৯৬৫ সালে ব্রাসেলস চুক্তির মাধ্যমে, ইসিএসসি, ইইসি ও ইউরোএটম’কে একটিমাত্র কমিশনের অধীনে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেটি ইউরোপিয়ান কমিউনিটি বা ইসি নামে পরিচিত পায়। এই ইউরোপীয় কমিশনই ছিল পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূলভিত্তি।
অবশেষে ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও আসে কিছু পরিবর্তন। ফলে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় কমিউনিটিতে যুক্ত হতে প্রথম আবেদন জানায় ১৯৬১ সালে। তবে ইউরোপীয় কমিশন তাদের সবুজ সংকেত দেয় আরও কয়েক বছর পর, ১৯৬৯ সালে। আনুষ্ঠানিকতা সেরে, ১ জানুয়ারি ১৯৭৩ সালে ডেনমার্ক ও আয়ারল্যান্ডকে সঙ্গে নিয়ে ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটির সদস্যপদ লাভ করে যুক্তরাজ্য। সেসময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন কনজারভেটিভ পার্টির এডওয়ার্ড হেথ। ইউরোপীয় কমিউনিটিতে তার যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তটিও সেসময় সহজ ছিল না। যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে তাই শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক। জোট থেকে বের হতে লেবার পার্টি তোড়জোড় করতে থাকে সরকারকে। অবশেষে, ১৯৭৫ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া এক গণভোটে ব্রিটেনের ৬৭ ভাগ লোক ইউরোপীয় কমিউনিটিতে থাকাকে সমর্থন জানায়। এছাড়া জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হয় ফ্রান্স, ডেনমার্কসহ ইউরোপের আরও বেশ কয়েকটি দেশেও।
নতুন মাত্রায় আঞ্চলিক জোট হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ১৯৯২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি, ম্যাসট্রিক্ট চুক্তির মাধ্যমে। এসময় ইইউ দেশগুলোর শিক্ষা, সীমান্ত নিরাপত্তা, প্রযুক্তি উন্নয়ন, ইইউ অভিন্ন নাগরিকত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়গুলো উঠে আসে। আরও আলোচনা করা হয় ইইউ দেশগুলোর একটি অভিন্ন মুদ্রা প্রচলনের। পরবর্তীতে, ০১ জানুয়ারি ২০০২ সাল থেকে ইইউর বেশ কয়েকটি দেশে অভিন্ন মুদ্রা ইউরোর প্রচলন ঘটানো হয়।
প্রথম ইইউ আঞ্চলিক জোটে যোগ দিতে ম্যাসট্রিক্ট চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল ১২টি দেশ। তবে পরবর্তী বিশ বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাংগঠনিক সামর্থ্য বেড়েছে আরও বহুগুণ। জোটে যোগ দিয়েছে দ্বিগুণের বেশি দেশ। ইইউর অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে তুরস্কসহ আরও কয়েকটি দেশের সদস্যপদ। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের যোগ দেওয়া মোট ২৮টি সদস্য দেশ হলো, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, রিপাবলিক অব সাইপ্রাস, চেকপ্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া স্পেন, সুইডেন ও যুক্তরাজ্য।
এছাড়া ইউরোপিয়ান ইকোনমিক এরিয়া (ইইএ) এর আওতায় ইইউর সিঙ্গেল মার্কেট সুবিধা পাওয়া দেশের তালিকায় আছে, আইসল্যান্ড, লিচেস্টেইন ও নরওয়ে। অপরদিকে, সুইজারল্যান্ড ইইউ ও ইইএর সদস্য না হলেও ইইউর অভিন্ন বাজার ব্যবস্থা বা সিঙ্গেল মার্কেটের সুবিধা পেয়ে থাকে।
জোট হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সফলতা
ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) গণ্য করা হয় সবচেয়ে আধুনিক ও সফল আঞ্চলিক-অর্থনৈতিক জোট হিসেবে। দেশগুলোর উন্মুক্ত সীমান্ত ব্যবস্থা, শিক্ষা সুবিধা, সবচেয়ে বড় একীভূত বাজার ব্যবস্থা ও ইইউ নাগরিকত্বের প্রচলন করে জোটটি নিজেদের বেশ উদারমনা ও সহযোগিতা সম্পন্ন হিসেবে প্রমাণ করেছে। মৃত্যুদণ্ড বিলোপের মতো পদক্ষেপ ও মানবাধিকার রক্ষায়ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট, ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস সামগ্রিকভাবে ইইউর সুনাম রয়েছে। এছাড়া, প্রযুক্তি সহায়ক ও পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ গড়তেও ইইউ গ্রহণযোগ্য ভূমিকা রেখেছে চলেছে। বৃহত্তর মানব কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় চেষ্টার স্বীকৃতি স্বরূপ ইইউকে ২০১২ সালে ভূষিত করা হয় শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে। তাই আঞ্চলিক জোট হিসেবে ইইউকে ব্যর্থ বলাটা সমীচীন হবে না মোটেও। ব্রেক্সিট বিরোধীরাও বলতে চাচ্ছেন, উন্নত জীবন কাঠামো ও মানবাধিকার রক্ষায় ইইউ বাকি সবার জন্য রোল মডেল। তাই যুক্তরাজ্যের উচিত নয় ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া।
তবে কেন হলো ব্রেক্সিট? সরে যেতে চায় যুক্তরাজ্য?
প্রায় বিচ্ছিন্ন ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেওয়া নিয়ে যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া ছিল সবসময় মিশ্র ও সন্দেহের। যা ওপরেই উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতিহাসবিদ ভারনন বগদানোর বলেন, ভৌগলিক কারণেই শক্তিশালী নৌবহর কেন্দ্রিক ব্রিটিশরা বিচ্ছিন্ন জাতি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়তো সেসব বিষয় অনেকটা বদলেছে। তবে ব্রিটিশদের মনে কিছু প্রভাব, তবু রয়ে গেছে।
ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সমঝোতার বিষয়ে তিনি বলেন, ব্রাসেলসের (ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দফতর) ক্ষমতার বিষয়ে ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক মানসিকতা রয়ে গেছে। তারা আদেশ দিয়ে অভ্যস্ত, আদেশ নিয়ে নয়।
এছাড়া, ইইউয়ের ভার যুক্তরাজ্যকে বইতে হচ্ছে এমন অভিযোগ ব্রিটিশ নাগরিকদের পুরনো। তাই ইইউতে ব্রিটিশরা সুখী নয়— এমন বিতর্ক নিরসনে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ২০১৫ তার দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনি ইশতেহারে ব্রেক্সিট প্রশ্নে গণভোট ডাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি নিজে ব্রেক্সিটের বিপক্ষে থাকলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৬ সালের ২৩ জুনে ব্রেক্সিট প্রস্তাবে গণভোটের আয়োজন করেন। ওই গণভোটে দেশটির ৫২ ভাগ লোক ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেন। যা ছিল বেশ অবাক করার মতো। ধারণা করা হয়, ব্রেক্সিটের বিপক্ষে থাকলেও অনেকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। নিজের অবস্থানের পক্ষে গণভোটের রায় না আনতে পারায় পদত্যাগ করেন ক্যামেরন। তবে যুক্তরাজ্যের সরকারি ও বিরোধী দল ব্রিটিশদের চাওয়াকে প্রাধান্য দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। প্রধানমন্ত্রী পদে ক্যামেরনের স্থলাভিষিক্ত হন টেরিজা মে। তবে মে’ও ব্রেক্সিটের পক্ষে ছিলেন না। শুধু জনমতের বাস্তবায়নেই ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে কাজ করে চেষ্টা করেছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যে এখন যত লোক ব্রেক্সিটের পক্ষে মত দিয়েছেন গত কয়েক বছর পূর্বে চিত্রটা এমন ছিল না। ব্রিটিশদের বর্তমান সিদ্ধান্তের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
যেখানে নিঃসন্দেহে প্রথম কারণ অর্থনৈতিক,
২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজেটে যুক্তরাজ্য বরাদ্দ দেয় ১৩ বিলিয়ন পাউন্ড। তবে খরচের বিপরীতে আদায় করতে পেরেছে মাত্র সাড়ে চার বিলিয়ন পাউন্ড। অর্থাৎ শুধু ইইউ মেম্বার ও অভিন্ন বাণিজ্য সুবিধা নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্যকে দিতে হযেছে ৮.৫ বিলিয়ন পাউন্ড বেশি। এছাড়া, ব্রিটিশরা মনে করে ইউরোপের নেতৃত্বে ব্রিটেন পিছিয়ে। ইইউর ফাঁদে ফেলে কৌশলে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ করছে জার্মানি।
দ্বিতীয় কারণটা বেকারত্ব,
যুক্তরাজ্যে বেকারত্বের হার উদ্বেগজনকভাবে বেশি। জিডিপি বাড়লেও চাকরির অনিশ্চয়তায় ভোগা ব্রিটিশরা সমতা খুঁজে পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে ব্রেক্সিট পক্ষ অভিযোগ করে আসছে, ইইউর রীতিনীতির কারণে সুষ্ঠু বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানের নীতিমালা প্রণয়ন করতে ব্যর্থ হচ্ছে যুক্তরাজ্য।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অভিবাসন ও নিরাপত্তা,
ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন অনুসারে জোটের সদস্যভুক্ত অন্য কোন দেশের নাগরিকরা যুক্তরাজ্যে থাকতে চাইলে দেশটির তা না বলার অধিকার নেই। তাই পূর্ব ও দক্ষিণ ইউরোপে বেকারত্বে থাকা, অনেক দেশের নাগরিকরা আসছেন যুক্তরাজ্যে বসতি গড়তে। ২০১৬ সালে রোমানিয়া ও বুলগেরিয়াসহ কয়েকটি দেশ থেকে ৯ লাখ ৪২ হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছে যুক্তরাজ্যে। এছাড়া, পশ্চিম ইউরোপ থেকে এসেছে আরও ৮ লাখের কাছাকাছি। যা ব্রিটিশরা দেখছে বাড়তি বিড়ম্বনা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে।
মূলত: এসব কারণে ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্তে ঝুঁকে যুক্তরাজ্যের জনগণ।
সুতোয় ঝুলছে ব্রেক্সিট
ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, যুক্তরাজ্যের জনগণ যতটা সহজভাবে নিয়েছে। তা কার্যকর করাটা ব্রিটেনের রাজনীতিবিদদের জন্য সহজভাবে হচ্ছে না। এমনকি পার্লামেন্টে নিশ্চিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিদের যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ‘ব্রেক্সিট চুক্তির’ বিষয়ে মতের মিল না হওয়ায়, ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত কেবিনেট থেকে পদত্যাগ করেছেন অন্তত ২২জন মন্ত্রী। পদত্যাগ প্রসঙ্গে সাবেক ব্রেক্সিট মন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, কোনো গণতান্ত্রিক দেশ এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ (ব্যাকস্টপ) মেনে নেবে না। বেরিয়ে যাওয়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়া, ব্রেক্সিট বিষয়ে মে ইইউর সঙ্গে কোনো ঐক্যমত্যে না পৌঁছায় বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বরাবরই দায়ী করছেন, সরকারের কৌশল প্রণয়নে ব্যর্থতাকে। বারবার টেরিজা মে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেনও তিনি। তবে প্রধানমন্ত্রী মে তার ওপরে আনা পার্লামেন্টে অনাস্থা উতরে গিয়ে প্রমাণ করেছেন, এখনো তার হাতে সুযোগ রয়েছে।
তবে বাস্তবতা হলো, মে পরপর দুবার প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট প্রস্তাবে হেরেছেন। যেখানে তার নিজ দলের এমপিরও মে’র বিপক্ষে ভোট দেয়। ব্রেক্সিট প্রস্তাবের ওপর প্রথমবার হওয়া ভোটে গত ১৬ জানুয়ারি ৪৩২-২০২ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন মে। সেটি ছিল ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পরাজয়। পরবর্তীতে ১২ মার্চ ব্রেক্সিট চুক্তি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র সংশোধনী প্রস্তাবও পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সে হেরে যায় ১৪৯ ভোটের ব্যবধানে। টেরিজা মের প্রস্তাবের পক্ষে ২৪২ ভোট পড়লেও বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৯১ জন এমপি।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট বিলম্ব প্রস্তাব পাসের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন সায় দেওয়ায় ৭টি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যার প্রতিটি বাস্তবসম্মত। তবে কোনো-কোনোটি সময় সাপেক্ষ।
এগুলো হলো, পুনরায় ইইউর সঙ্গে আবারও আলোচনা, প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট প্রস্তাবের ওপর আবারও পার্লামেন্টে ভোট, প্রধানমন্ত্রীর ওপর অনাস্থা ভোট অথবা সোজা কথায় টেরিজা মে’র পদত্যাগ, ব্রেক্সিটের ওপর আবারও গণভোট, ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের চেষ্টা, নো ডিল ব্রেক্সিট হওয়া, ব্রেক্সিট কার্যকর না হওয়া।
এই পর্যায়ে ওপরের যেকোনো কিছু ঘটা সম্ভব। ব্রেক্সিট এখনো তাই রয়েছে পুরোপুরি অনিশ্চয়তায়।
মে’র চেষ্টা সত্ত্বেও কেন মন গলছে না ব্রিটিশ এমপিদের?
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে, টেরিজা মে’র ব্রেক্সিট চুক্তি বিষয়ে ব্রিটিশ এমপিদের আপত্তি যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রিত নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও ইইউ সদস্য রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড সীমান্তে প্রস্তাবিত ‘ব্যাকস্টপ পলিসি’ নিয়ে। স্পর্শকাতর এই সীমান্তে কঠোর না হতে ইইউ ও যুক্তরাজ্য একমত হলেও তা বাস্তবায়নের কৌশল নিয়ে দ্বিধা রয়ে গেছে। যুক্তরাজ্যে ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে তারা ইউরোপের সিঙ্গেল মার্কেট কাঠামোয় আর অন্তর্ভুক্ত থাকবে না। তাই ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ড নিশ্চিত করতে সীমান্তে যাচাই-বাছাইয়ের মুখোমুখি হওয়ার কথা যুক্তরাজ্যের। এক্ষেত্রে কার্যকর হবে সেফটি নেট হিসেবে পরিচিত ‘ব্যাকস্টপ পলিসি’। অর্থাৎ দুপক্ষের মধ্যে নতুন কোন বাণিজ্য চুক্তির সমঝোতা না হলে শুধুমাত্র নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ইইউর সিঙ্গেল মার্কেট সুবিধা পাবে এবং নিরাপত্তার অংশীদার হবে। তবে ব্রিটিশ এমপিরা আশঙ্কা করছেন, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ইস্যুতে যুক্তরাজ্যকে জিম্মি করবে ইইউ। দুপক্ষের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ সম্পর্ক ও নিরাপত্তার বিষয়কে সামনে রেখে, পুরো যুক্তরাজ্যের জন্য অভিন্ন বাণিজ্য চুক্তির দাবি তাদের। তবে তা দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর বেশি ছাড় এখনই দিতে প্রস্তুত নয় বলে দাবি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র। প্রস্তাবিত ব্যাকস্টপ পলিসি নিখুঁত করতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করলেও ব্রিটিশ এমপিদের মন গলাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
ইইউ যখন ‘কংস মামা’
যুক্তরাজ্য যখন ইইউ ছাড়ার ঘোষণা দেয় তখন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল বলেছিলেন, এবার মান-সম্মান নিয়ে তা বাস্তবায়ন হলেই হলো। যদি ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান ডোনাল্ড টাস্কসহ অনেকে যুক্তরাজ্যের প্রস্থানে আক্ষেপ করেছেন।
টাস্ক রাখঢাক না রেখেই রাগ ঝেড়ে বলেছে, যুক্তরাজ্য একসময় তার ভুল বুঝতে পারবে। যারা ব্রেক্সিট কাণ্ড ঘটিয়েছে ‘নরকে’ তাদের জন্য বিশেষ জায়গা হবে!
তার এমন মন্তব্য বেশ খেপেছিলেন, সাবেক ইউকিপ (ইন্ডিপেনডেন্স পার্টির) নেতা ও ব্রেক্সিট আন্দোলনের পরিচিত মুখ নাইজেল ফারাজে। প্রতিক্রিয়া তিনি বলেন, নিজেদের দেশ নিজেরা চালাতে পারবো। আমার কাছে তো এটাকে স্বর্গ মনে হয়।
তবে যুক্তরাজ্যের প্রতি ইইউর দুর্বলতা দূর হতে সময় লাগেনি। ইইউ বেশ কয়েক দফা বৈঠকের পর সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ব্রেক্সিট বিষয়ে টেরিজা মের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে তার বাইরে ‘খুব বেশি’ আর ছাড় দিতে রাজি নয় তারা। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে যা চলছে তা নিয়ে খুব একটা মাথা ব্যথা নেই তাদের।
এই অবস্থা বিবেচনা করে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেন, আগামী অন্তত দশ বছর ব্রিটেন আর ইইউ একে অপরের ওপর রেগে থাকবে। ইইউ’র প্রতি আগামী ব্রিটিশ প্রজন্মের ধারণার পরিবর্তন হতে চলেছে।
ব্রেক্সিটের পর ইইউ যেসব সমস্যায় পড়বে
পরিস্থিতি যাই থাকুক না কেন তবে, কোন ধরনের চুক্তি ছাড়া যুক্তরাজ্য ইইউ ছাড়ুক তা চায় না পার্লামেন্টের কোন পক্ষই। কারণ সুনির্দিষ্ট কোনো আইনি কাঠামো ছাড়া যুক্তরাজ্যে ইইউ ত্যাগ করলে দেশটিকে ভবিষ্যতে ‘অমীমাংসিত সমস্যা’ মোকাবিলার ঝামেলা পোহাতে হবে। যেমন যুক্তরাজ্যের অংশ নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক আয়ারল্যান্ড সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ হবে। পণ্য ও অন্যান্য জিনিস পরিবহনে বলপ্রয়োগ ও শারীরিকভাবে তল্লাশি চালানো হতে পারে, যা সীমান্তে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। জিব্রাল্টার, সাইপ্রাসের নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা এবং যুক্তরাজ্যের সমুদ্র সীমার অধিকার প্রশ্নে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাড়বে উদ্বেগ। তাই যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট এ ধরনের কোনো পরিস্থিতির মুখে পড়ুক ব্রিটেন। তবে চুক্তিটাও হচ্ছে না কারণ ইইউ সিদ্ধান্তের বাইরে খুব বেশি ছাড় দিবে না যুক্তরাজ্যকে। তবে তাই দেরি করে হলেও যদি ব্রেক্সিট চুক্তির মধ্য দিয়েও যুক্তরাজ্য ইইউ ত্যাগ করে তবু দেশটির অর্থনীতি ভালো ঝড় বইবে।
গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাজ্যের সরকার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে স্বীকার করে নেয়, ব্রেক্সিট কার্যকরের পর নতুন কাঠামোর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে ভালো ঝামেলা পোহাতে হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে যদিও তা নিয়ন্ত্রণযোগ্য।
ওই প্রতিবেদন মতে ২০৩০ সালের মধ্যে ব্রিটেনের অর্থনীতি মোট ৪% সংকীর্ণ হবে। ইইউর সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতা করা গেলে এই ক্ষতি অনেকাংশ এড়ানো যাবে। আর যদি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর হয় তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বাড়বে, অর্থনীতি সংকীর্ণ হবে ১৫ বছরে ৭.৭%। এছাড়া, বের হওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য ইইউকে দিতে হবে ৩৯ বিলিয়ন ডলার।
এক্ষেত্রে অনেকের মতে বিকল্প হতে পারে, ‘নরওয়ে মডেল’ অনুযায়ী যুক্তরাজ্য যদি ইউরোপিয়ান ইকোনমিক এরিয়া বা ইইএ’র অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তাহলে, ইইউ’র মৌলিক নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে তাদের। তবে ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ সদস্য দেশের মর্যাদা পাবে না তারা। এক্ষেত্রে আইনি সীমাবদ্ধতা রাজনৈতিক সদিচ্ছায় বাস্তবায়ন করা হবে। অর্থনীতির সুবিধা হলেও মর্যাদা নিশ্চিত না হওয়ায় এই মডেলে রাজি নন অনেকে।
আবারও কি ইইউতে ফিরতে পারবে যুক্তরাজ্য?
ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন চায় না— এমন একটি গ্রুপের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস (ইসিজে) তাদের রায়ে জানায়, যুক্তরাজ্য চাইলে পুনরায় ইইউতে থেকে যেতে পারে। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে জোটটির বাকি ২৭ সদস্যদের অনুমতি বা সমঝোতার প্রয়োজন হবে না। এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যে আরও একটি গণভোটের প্রয়োজন হতে পারে। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংসদের ওয়েবসাইটে আর্টিকেল ৫০ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে দাখিল করা এক অনলাইন পিটিশনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে ৪১ লাখ ৮০ হাজার সই জমা পড়েছে এই পিটিশনের পক্ষে। তবে প্রধানমন্ত্রী দফতর জানিয়েছেন, তারা এ বিষয়ে এখন ভাবছেন না। আরও একটি গণভোটের আয়োজন করা সহজ বিষয় নয়।
ব্রেক্সিট শব্দের উৎপত্তি
‘ব্রিটেন’ আর ‘এক্সিট’— এই দুই শব্দ মিলিয়ে ব্রেক্সিট শব্দটির প্রথম সূত্রপাত ঘটান পিটার ওয়েলডিং নামের এক ব্রিটিশ। তিনি ব্রিটিশ ইনফ্লুয়েন্স এর প্রতিষ্ঠাতাও। সেটা ২০১২ সালের কথা। যদিও পিটার যুক্তরাজ্যের ইইউতে থাকার পক্ষপাতী ছিলেন। পিটার বলেন, সে সময় গ্রিসের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বিক্ষোভ গ্রেক্সিট নামে এক প্রসঙ্গ উঠেছিল। সে থেকেই ব্রেক্সিট বিষয়টি তার মাথায় আসে। ব্রেক্সিট শব্দটি উল্লেখ করে তিনিই প্রথম টুইট করেন। কিন্তু তার উদ্ভাবিত শব্দ ব্যবহার করে পরবর্তীতে যা ঘটল তা, যুক্তরাজ্যের জন্য কতটা মঙ্গলকর তা সময় নির্ধারণ করে দেবে!
খবর সূত্র, বিবিসি, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, সিএনএন ও উইকিপিডিয়া থেকে সংকলিত।
সারাবাংলা/এনএইচ
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গণভোট টেরিজা মে ব্রেক্সিট ব্রেক্সিট ডে যুক্তরাজ্য