দাফন হলো এফআর টাওয়ারের আগুনে প্রাণ হারানো চাঁদপুরের ৩ জনের
৩০ মার্চ ২০১৯ ০৪:০৯
চাঁদপুর: রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারের ভয়াবহ আগুন কেড়ে নিয়েছে ১৯ জনের প্রাণ। তাদের মধ্যে চাঁদপুরের তিন জনকে শুক্রবার (২৯ মার্চ) দাফন করা হয়। এর মধ্যে আতাউর রহমান চঞ্চলকে নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আব্দুল্লাহ আল ফারুক তমালকে রাজধানীর ডেমরার সারুলিয়া ও রেজাউল করিম রাজুর দাফন হয়েছে চট্টগ্রামে।
জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর গুপ্টি ইউনিয়নের শ্রীকালিয়া গ্রামের মুন্সি বাড়ির মকবুল আহমেদের ছেলে আব্দুল্লাহ আল ফারুক তমাল পড়ালেখা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আগুনে দগ্ধ হওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে নেওয়া হয় তাকে। তমালের বন্ধু মিনহাজ উদ্দিন জানান, সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
মিনহাজ আরও জানান, তমাল ঢাবি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০০৬-০৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। ইইউআর বিডি সলিউশনে সেলস ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। আগুনে তার শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গেছে।
তমালের চাচাতে ভাই ফরিদগঞ্জের শ্রীকালিয়া গ্রামের সালাহউদ্দিন জানান, তমালরা সপরিবারে ঢাকার সারুলিয়া থাকেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে তমাল দ্বিতীয়। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
গুপ্টি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গনি পাটওয়ারী বলেন, তমালের পরিবার সারুলিয়াতে থাকে। সেখানেই বিকেল ৩টার দিকে তার দাফন হয়েছে। তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়নি।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাও ইউনিয়নের নাগদা গ্রামের বেনু প্রাধানিয়ার ছেলে রেজাউল করিম রাজু এফআর টাওয়ারের পঞ্চম তলার আসিফ ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। এক ভাই ও তিন বোনের মধ্যে রাজু দ্বিতীয়। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে বনানীতে থাকতেন রাজু। তার বাবা বেনু প্রধানীয়া চট্টগ্রামের একজন ব্যবসায়ী।
রাজুর চাচা শশুরের ছেলে ট্রাভেলস ব্যবসায়ী হাজী জসিম উদ্দিন জানান, কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে বৃহস্পতিবার রাতে আমরা তার মরদেহ শনাক্ত করেছি।
খাদেরগাঁও ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রানু বেগম বলেন, রেজাউল করিম রাজুর বাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ নাগদা গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ি। তবে তারা সবাই চট্টগ্রামে থাকেন। লাশ শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে তার মরদেহ নিয়ে জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
কচুয়া উপজেলার ৩ নম্বর বিতারা ইউনিয়নের বাইছাড়া গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে আতাউর রহমান চঞ্চল এফআর টাওয়ারের ১০ম তলায় হেরিটেজ ট্যুর অ্যান্ড ট্যাভেলসে চাকরি করতেন। ৩ নম্বর বিতারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইসহাক সিকদার জানান, স্ত্রী তাসলিমা বেগম শিউলী, ছেলে এরফানুর রহমান (তাজিন) ও মেয়ে উপমা আক্তারকে নিয়ে মোহাম্মদপুর থাকতেন তিনি।
চঞ্চলের চাচাত ভাই দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান মুন্সী নূরুল আলম বেলাল বলেন, মতিঝিলে ট্রাভেল এজেন্সি ছিল চঞ্চলের। কিছুদিন আগে সে অফিস বনানীতে নিয়ে আসে। ঘটনার সময় চঞ্চল শেষবারের মতো তার ছেলে ইফরানকে ফোন করে বলে, আমি ছাদে। কিন্তু পরে তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাত ৩টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তার লাশ শনাক্ত করা হয়। অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি আনার পর বাদ জুম্মা জানাজা শেষে তার মরদেহ পারিবারিক করস্থানে দাফন করা হয়।
সারাবাংলা/টিআর