‘অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকলে মালিক সমিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা’
৩০ মার্চ ২০১৯ ০৮:১১
ঢাকা: গুলশান-১ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেটে (ডিসিসি মার্কেট হিসেবে পরিচিত) অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকলে দোকান মালিক সমিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকলে দোকান মালিক সমিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু এই মার্কেট নয়, ঢাকা সিটিতে যতগুলো মার্কেট আছে, সেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ কি না কিংবা সেগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আছে কি না সেটা এখন দেখার সময় এসেছে। না থাকলে সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার (৩০ মার্চ) সকালে গুলশান ডিসিসি মার্কেটে আগুন লাগার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র এসব কথা বলেন। সকাল পৌনে ৮টার দিকে তিনি ডিসিসি মার্কেট এলাকায় যান। এর আগে, ভোর পৌনে ৬টার দিকে আগুন লাগে ডিসিসি মার্কেটের কাঁচা ও সুপার মার্কেট অংশে।
ডিসিসি মার্কেটে স্থায়ী বহুতল ভবন তৈরির প্রসঙ্গ টেনে মেয়র বলেন, ডিএনসিসির এই মার্কেটটিতে মামলার জটিলতা আছে। এ কারণে এখানে স্থায়ী মার্কেট করা যাচ্ছে না। আমরা দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে স্থায়ী মার্কেটের দিকে যাব, যেখানে অগ্নি নির্বাপণের যাবতীয় ব্যবস্থা থাকবে।
দুই বছর আগে একই মার্কেটে আগুন লেগেছিল। সেবার তদন্ত কমিটিগুলো যেসব সুপারিশ করেছিল, সেগুলো মানা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এর আগেই মার্কেটে আগুন লেগেছিল। তখন বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়ার কথা হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ী কর্তৃপক্ষ সেই ব্যবস্থা নিয়েছিল কি না, সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখব।
মেয়র আরও বলেন, কিভাবে আগুন লেগেছে, বলা যাচ্ছে না। ফায়ার সার্ভিস সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে আগুন নেভানোর জন্য। এখানে পানির স্বল্পতা রয়েছে। সে কারণে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগবে।
২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি দিবাগত রাত ২টার দিকে আগুন লাগে ডিসিসি মার্কেটের কাঁচা মার্কেট অংশে। ১৫ মিনিটের মধ্যে কাঁচা মার্কেটটি ধসে পড়ে। পরে আগুন পাকা মার্কেটেও ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট প্রায় ১৬ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ডিসিসি কাঁচা ও পাকা মার্কেটে ছয় শতাধিক দোকান ছিল। আগুনে প্রায় আড়াইশ দোকান পুরোপুরি পুড়ে যায় এবং বাকি দোকানগুলোও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে পাকা মার্কেটের সামনের অংশে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অস্থায়ীভাবে দোকান তৈরি করে চালু করা হয় মার্কেট। আর কাঁচা মার্কেটটি সংস্কার করে নতুন করে গড়ে তোলা হয়।
ওই সময় ডিসিসি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয়েছিল। সাত বিঘা জমির ওপর নির্মিত ওই মার্কেটের জায়গায় ১৮ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। সেই অনুযায়ী ২০০৩ সালে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় গুলশান ট্রেড সেন্টার নামের ওই ভবন নির্মাণের দায়িত্ব পায় মেট্রো গ্রুপের আমিন অ্যাসোসিয়েটস ওভারসিজ কোম্পানি। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ভবনের মালিকানা বাড়ানো সংক্রান্ত একটি চুক্তি বাতিল নিয়ে মামলা হয়। এরপর দোকান মালিক সমিতিও মামলা করে। ফলে সেখানে আর ভবনটি নির্মাণ করা যায়নি। সেই ভবন নির্মাণ করতেই পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ করেন ডিসিসি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
সারাবাংলা/কেকে/এসজে/টিআর
অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ডিসিসি মার্কেট ডিসিসি মার্কেটে আগুন দোকান মালিক সমিতি