Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভোটশূন্য ৩০ উপজেলা, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৫ শতাংশ চেয়ারম্যান


৩০ মার্চ ২০১৯ ২২:১৭

ঢাকা: চলমান পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম থেকে চতুর্থ ধাপ মিলিয়ে মোট ৪৪৭টি উপজেলায় নির্বাচন সম্পন্ন হচ্ছে। এরমধ্যে ৩০টি উপজেলায় তফসিল ঘোষণা করা হলেও কোনো ভোট হয়নি। এসব উপজেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান—এই তিনটি পদের সব প্রার্থীই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে,  ২১৭ জন প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১১০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৫৮ জন প্রার্থী রয়েছেন।  এই হিসাবে ২৫ শতাংশ উপজেলা চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন।  নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বিপ্রার্থী না থাকায় বিভিন্ন উপজেলায় অনেকেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের করণীয় কিছুই নেই।’

আরও পড়ুন: চতুর্থ ধাপে ১০৭ উপজেলায় নির্বাচন রোববার

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে প্রথম চার ধাপে ৪৬০টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।  ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ১০মার্চ, দ্বিতীয় ধাপে ১৮ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া চতুর্থ ধাপে ৩১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, পঞ্চম ধাপে আগামী ১৮ জুন ২০ টির মতো উপজেলার নির্বাচন হবে।  ইতোমধ্যে চার ধাপে ৪৬০টি উপজেলায় তফসিল ঘোষণা করা হলেও ১৩টি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।  আর ৩০টি উপজেলার সব প্রার্থী বিনা ভোটি নির্বাচিত হওয়ায় এসব উপজেলায় কোনো ভোট দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। ফলে ভোট হচ্ছে ৪০৭টি উপজেলায়।

প্রথম ধাপে তিন উপজেলায় সব প্রার্থীসহ ২৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

প্রথম ধাপের ৮৭টি উপজেলায় তফসিল ঘোষণা করা হলেও গত ১০ মার্চ নির্বাচন হয়েছে ৭৮টিতে। বাকি ৯টি উপজেলার মধ্যে ৬টি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত থাকে। আর তিনটি উপজেলার সব প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলা তিনটি হলো, জামালপুর জেলার মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ ও নাটোর জেলার নাটোর সদর।  এছাড়া, প্রথম ধাপে ২৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ১৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় ধাপে ৬ উপজেলায় সব প্রার্থীসহ ৪৬ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

 দ্বিতীয় ধাপের ১২৯টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও ১৮ মার্চ নির্বাচন হয়েছে ১১৬টিতে।  অবশিষ্ট ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৭টি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে নওগাঁ সদর, পাবনা সদর, ফরিদপুর সদর, নোয়াখালীর হাতিয়া, চট্টগ্রামের মীরসরাই ও রাউজান—এই ৬টি উপজেলায় সব প্রার্থী বিনা প্রতিপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় কোনো ভোট হয়নি।

এছাড়া দ্বিতীয় ধাপে ৪৬ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

তৃতীয় ধাপে ৬টি উপজেলায় সবপ্রার্থীসহ ৫৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

তৃতীয় ধাপে ১২৭ উপজেলায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও গত ২৪ মার্চ নির্বাচন হয়েছে ১১৬টি উপজেলায়। এরমধ্যে ৬টি উপজেলায় সব প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।  উপজেলা ছয়টি হলো, বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝড়া, নরসিংদীর পলাশ, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, মাদারীপুরের শিবচর ও শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ। বাকি সাত উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়। তৃতীয় ধাপে ৫৫ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

চতুর্ধ ধাপে ১৫ উপজেলায় সবপ্রার্থীসহ ৮৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

চতুর্থ ধাপের ১২২ উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এরসঙ্গে আগের স্থগিত হওয়া ৬টিসহ মোট ১২৮টি উপজেলার নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ৩১ মার্চ নির্বাচন হচ্ছে ১০৭টি উপজেলায়।  এর মধ্যে এই ধাপে রেকর্ড সংখ্যক ১৫টি উপজেলায় সব প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

উপজেলাগুলো হলো, ভোলা সদর, মনপুরা, চরফ্যাশন উপজেলা। ময়মনসিংহের গফুরগাঁও, যশোরের শার্শা, কুমিল্লার লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম, দেবিদ্বার উপজেলা।  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা, ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও সাভার, নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ, ফেনীর পরশুরাম উপজেলা।

এছাড়া চতুর্থ ধাপে মোট ৮৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বদ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।  এর মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৩৯ জন, ভাইস চেযারমম্যান পদে ২২ জন এবং মহিলা ভা্ইস চেয়ারম্যান পদে ২৭ জন প্রার্থী ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হয়েছেন।

দেশে উপজেলা পরিষদের সংখ্যা

১৯৮৫ সালে দেশে প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদ গঠিত হয়। উপজেলা পরিষদ গঠিত হওয়ার সময় দেশে উপজেলার সংখ্যা ছিল ৪৬০টি। ১৯৮৫ ও ১৯৯০ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন হয় ৪৬০টি উপজেলায়। পরবর্তী সময়ে দেশে উপজেলার সংখ্যা বাড়তে থাকায় ২০০৯ সালে ৪৮১টি এবং ২০১৪ সালে ৪৮২টি উপজেলায় নির্বাচন হয়।  চলতি মার্চ মাস থেকে সারাদেশের ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে ৪৮০টিতে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে।  বাকি ১২টি উপজেলায় মেয়াদ শেষ না হওয়ায় এবং আইনি জঠিলতা থাকায় নির্বাচন করা যাচ্ছে না।

সারাবাংলা/জিএস/এমএনএইচ

পঞ্চম উপজেলা নির্বাচন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর