বৃষ্টিতে ভিজল নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বইপত্র, অছাত্র তাড়াতে বিক্ষোভ
৩১ মার্চ ২০১৯ ২৩:১৪
হলের অছাত্র ও বহিরাগতদের হল ছাড়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে মুখে রোববার (৩১ মার্চ) রাতের মধ্যেই বহিরাগত ও তিন দিনের মধ্যে অছাত্রদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে হল প্রশাসন। একইসঙ্গে আবাসন সংকট দূর করতে টিনসেড ভবন নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দেয় হল প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সন্ধ্যায় প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিতে হলের বারান্দায় থাকা শিক্ষার্থীদের বইপত্র ও ব্যবহৃত জিনিসিপত্র ভিজে নষ্ট হয়। পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে হলের টিভি কক্ষে জড়ো হোন। তারা হলে অবস্থানরত অছাত্র ও বহিরাগতদের হল ছাড়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। একইসঙ্গে বৈধ সিটের দাবি করতে থাকে। এসময় অছাত্রদের হল ছাড়তে শিক্ষার্থীরা ‘আদু ভাই আদু ভাই, হল ছাড় হল ছাড়’, ‘ছিঃ ছিঃ আদু ভাই, লজ্জা থাকলে হল ছাড়’ স্লোগান দেন। ঘটনার খবর পেয়ে ডাকসু, হল সংসদের নেতারা ও প্রাধ্যক্ষ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি শোনেন।
রোববার রাতে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের টিভিকক্ষে শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ করেন। পরে খবর পেয়ে ছুটে যান ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর, জিএস গোলাম রাব্বানী, এজিএস সাদ্দাম হোসেন, এস এম হল সংসদের ভিপি এস এম কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জুলিয়াস সিজার তালুকদার। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুল আলাম জোয়ার্দার ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে কাজ শুরু করার অঙ্গিকার করেন।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘হলের সবচেয়ে বড় সমস্যা আবাসন সমস্যা। ঝড় বৃষ্টি ও শীতে শিক্ষার্থীদের অনেক কষ্টে বারান্দায় থাকতে হয়। আমি ইতোমধ্যে হল সংসদের নেতাদের সঙ্গে প্রথম সভায় বারান্দা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি। সভার পরে আমরা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ১৫ দিনের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছি। ওই নির্দেশের আর তিনদিন বাকি আছে। তবে শিক্ষার্থীরা যদি চায় তাহলে এই মুহুর্ত থেকেই মেয়াদোত্তীর্ণ ও বহিরাগতদেরকে হল ছাড়তে বাধ্য করা হবে। একইসঙ্গে অনতিবিলম্বে বারান্দায় থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য হল ক্যান্টিনের পাশে টিনসেড নির্মাণ করা হবে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নুরুল হক নুর বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের পর থেকেই নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বৈধভাবে সিট পাওয়ার বিষয়ে আমরা আন্তরিক। রাতের মধ্যেই বহিরাগত ও অছাত্রদের চিহ্নিত করতে হবে। একজন শিক্ষার্থীকেও যেন বারান্দায় থাকতে না হয়। সিট সংকটের কারণে চার জনের কক্ষে প্রয়োজন হলে ছয় জন রাখেন। তবে কেউ বারান্দায় থাকতে পারবে না।’
ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব শেষ পরের দিন থেকেই নৈতিকভাবে হলে ছেড়ে দেওয়া উচিত। রাজনৈতিক সুবিধা নিয়ে কেউ অবৈধভাবে সিট দখল করে হলে থাকলে সেটা মেনে নেওয়া হবে না। রাতের মধ্যেই বহিরাগত ও অছাত্রদের হল থেকে বের করতে হবে। শিক্ষার্থীদের কক্ষভিত্তিক তালিকা করে নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিতে হবে।’
পরে ডাকসু নেতারা বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড চেক করেন।
সারাবাংলা/কেকে/এমআই