এক্সটিংগুইশার-হোস পাইপ কিছুই নেই, ফায়ার বক্স খালি!
১ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:১৭
ঢাকা: ফায়ার বক্স মানেই সেখানে এক্সটিংগুইশার কিংবা হোস পাইপ থাকতে হবে। কিন্তু ২০ তলা ভবনটিতে ফায়ার বক্স থাকলেও সেখানে এগুলোর কোনোটিই নেই। সম্পূর্ণ ফাঁকা পড়ে রয়েছে বক্সটি। শুধু তাই নয়, ওই ভবনের কোথাও অগ্নি নিরাপত্তার আর কোনো ব্যবস্থাও নেই। ২০ তলা ভবনে জরুরি মুহূর্তে বের হওয়ার জন্য নেই কোনো পথ, নেই ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা।
সোমবার (১ এপ্রিল) বনানীর ৩২ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে প্রাসাদ নামের ভবনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখতে পায় ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক দল। ফায়ার সার্ভিসের একজন ফটোগ্রাফার সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি সারাবাংলাকে ওই ভবনের বেশ কয়েকটি ছবিও সরবরাহ করেন।
ছবি সরবরাহের পর ওই ফটোগ্রাফার সারাবাংলাকে বলেন, প্রাসাদ নামে বনানীর একটি ভবনে তল্লাশি করা হয়। ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত তল্লাশি করে দেখা হয়, আদৌ ওই ভবনে অগ্নি নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা আছে কি না। আগুন লাগার মতো জরুরি মুহূর্তে লোকজন কিভাবে বের হয়ে আসবে, ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম আছে কি না এবং তা জরুরি মুহূর্তে বাজে কি না, আগুন নেভানোর মতো নিজস্ব সক্ষমতা আছে কি না— তল্লাশিতে এ বিষয়গুলোই জরিপ করে দেখা হচ্ছে। জরিপ শেষে সিটি করপোরেশনের কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বনানীর ৩২ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর ওই এলাকায় এখন চলছে ভবন তল্লাশির কাজ। ভবনগুলোতে নিরাপদ ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা আছে কি না, তা সরাসরি দেখতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জরিপ করা হচ্ছে। পাশাপাশি রাজউকের পক্ষ থেকেও গুলশান ও বনানী এলাকায় নকশা মেনে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে কি না, তা যাচাই করতে মাঠে নেমেছে তল্লাশি দল।
সোমবার (১ এপ্রিল) বনানীর এফআর টাওয়ারের আশেপাশের অন্তত ১৫টি ভবনে তল্লাশি চালায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তল্লাশিতে কী পাওয়া গেল, তা অবশ্য ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
অন্যদিকে রাজউকের পক্ষ থেকেও বনানীর আশেপাশের ভবনগুলো থেকে তথ্য সরবরাহ করছে। রাজউকের একটি টিম বেশ কয়েকটি ভবনে নকশা মেনে ভবন নির্মাণ হয়েছে কি না, তা তদন্ত করেছে। এরপরই ওইসব ভবনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানা গেছে।
রাজউকের কর্মকর্তারা নকশা সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ভবনগুলো ঘুরে তা মিলিয়ে দেখেছেন বলে জানা গেছে। এফআর টাওয়ারের পাশে ব্লু সি টাওয়ার, ক্লাসিক্যাল টাওয়ার ও সফুরা টাওয়ারেও তদন্ত করেছে রাজউকের টিম।
তবে সাধারণ জনগণ যারা এসব অভিযান দেখছেন তারা বলেছেন, একটি ঘটনার পর এরকম লাফ ঝাঁপ অনেক দেখা যায়। কিছুদিন পর সব থেমে যায়। চুড়িহাট্টার ঘটনার পর কেমিক্যাল গোডাউন নিয়ে কত কিছু করা হলো, এখন আর কিছুই নেই। বনানীর ঘটনার ক্ষেত্রেও তাই হবে। কিছু দিন চলবে এরকম জরিপ কাজ, তারপর সবই আগের মতো চলবে।
সারাবাংলা/ইউজে/জেএএম