এক চালানে ৫০ কোটি টাকার ইয়াবা, নেপথ্যে বিদেশি বিনিয়োগ
২ এপ্রিল ২০১৯ ১৮:৩১ | আপডেট: ২ এপ্রিল ২০১৯ ১৮:৩৮
ঢাকা: দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে লাখ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট আনা হয় ঢাকায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে এসব ইয়াবা পাচার করা হতো নৌপথে। আর প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের এই ইয়াবার চালানের পেছনে রয়েছে বিদেশি বিনিয়োগ। প্রায় আট লাখ পিস ইয়াবাসহ পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে আটক করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ও আব্দুল্লাহপুর থেকে এক চালানের আট লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এর বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এসময় পাচারকারী চক্রের আটক তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, এসব ইয়াবা ঢাকার একটি অভিজাত বাসায় এনে খুচরা কারবারিদের কাছে বণ্টন করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই এগুলো জব্দ করা সম্ভব হয়েছে।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আট লাখ পিস ইয়াবার এই চালান মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসে। এই চালানটি হাতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত লাখ লাখ টাকা খরচ হয়। এই অর্থ বিদেশ থেকে বিনিয়োগ করা হয় বলে জানিয়েছে তারা। তবে এখন পর্যন্ত চক্রের মূল হোতা সর্ম্পকে কিছু জানা যায়নি। তার সন্ধানে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।
র্যাব জানায়, গোয়েন্দা তথ্য ছিল, সংঘবদ্ধ মাদক চোরাচালান চক্র মিয়ানমার থেকে মধ্যরাতে নদীপথে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা নিয়ে আসছে। এই চালান প্রথমে যাবে পটুয়াখালীর উপকূল অঞ্চলে, সেখান থেকে আসবে ঢাকায়। ওই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে র্যাব সোমবার ভোরে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় সপ্তবর্ণা নামক একটি লঞ্চ থেকে তুহিন হোসেন (২৫) ও সবুজ (২৬) নামে দু’জনকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছে থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
পরে তুহিন ও সবুজের কাছ থেকে জানা যায়, চক্রের আরেক সদস্য শাহজাহান (৩৫) বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ সড়ক পথে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয় শাহজাহানকে।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই চক্রের কাছ থেকে জানা যায়, চক্রটি গভীর সাগর থেকে ট্রলারের মাধ্যমে পটুয়াখালীর উপকূল এলাকায় ইয়াবা নিয়ে আসে। সেখান থেকে তারা সুবিধামতো নৌ ও স্থল পথে ইয়াবা পাচার করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লে যেন গোটা চালানের ইয়াবা জব্দ না হয়, সে কারণে চালানের ইয়াবে দুই ভাগে ভাগ করে ঢাকায় আনছিল তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, ইয়াবা পাচারকারী এই চক্রে আট থেকে ১০ জন রয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে তারা ইয়াবা পাচারে জড়িত। পাঁচ থেকে ছয় মাস পরপর তারা তিন থেকে পাঁচ লাখ পিস ইয়াবা ঢাকায় আনত। চক্রের মূল হোতাদের গ্রেফতারসহ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান মুফতি মাহমুদ খান।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর