অটিস্টিকদের পাশে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান
৪ এপ্রিল ২০১৯ ১০:২০
এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় অটিজম এবং অন্যান্য নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আরও নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০১৯ উপলক্ষে বাংলাদেশ ও কাতার মিশনের যৌথ উদ্যোগে এবং অটিজম স্পিকসের সহযোগিতায় আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের একটি সাইড ইভেন্টে তিনি এ আহ্বান জানান।
জাতিসংঘে সদর দফতরে অনুষ্ঠিত ‘অটিজম: প্রতিপালন সেবা কাঠামো এবং পরিবারকেন্দ্রিক যত্ন’ শীর্ষক ইভেন্টে সূচনা বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, বেলারুশ, ওমান, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়া ছিল ইভেন্টটির সহযোগী দেশ। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ‘শুভেচ্ছা দূত’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা তাদের (অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ব্যক্তিদের) বিভিন্ন কষ্টদায়ক ও ক্ষতিকর উপসর্গের প্রশমন করতে চাই। কিন্তু এর মাধ্যমে মানব বৈচিত্র্যের পরিবর্তন ঘটানোর কোনো প্রয়োজন দেখি না। আমরা তাদের সফল, সুখী ও উৎপাদনশীল করে গড়ে তুলতে চাই।
অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে আক্রান্তদের সঠিকভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের গৃহীত পরিবারকেন্দ্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গির কথাও উল্লেখ করেন স্থায়ী প্রতিনিধি। পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট অর্জনসমূহের কথাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমাদের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটিতে সব অংশীজনদের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। আমরা প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এবং নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট অ্যাক্ট ২০১৩ প্রণয়ন করেছি। সরকার ‘উদ্ভাবনীর সংস্কৃতি’ ও অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের সেবাদাতাদের প্রযুক্তিগত সহায়তা গ্রহণকে উৎসাহিত করছে। সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কর্মসূচি প্রতিবন্ধী সংশ্লিষ্ট ই-সেবা এবং ওয়েব ও আইসিটিভিত্তিক সেবার ক্ষেত্রে নব অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ইন্টারনেট, স্মার্টফোন অ্যাপস ও অন্যান্য আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা আজ অনেক কিছু করছে।
রাষ্ট্রদূত মোমেন জানান, ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ ও ল্যাংগুয়েজ থেরাপি, কাউন্সিলিং সার্ভিস, বিনামূল্যে সহায়ক যন্ত্রের বিতরণ, মোবাইল থেরাপি সার্ভিসসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসেবা দিতে বাংলাদেশ সময়োপযোগী ও সফল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের অটিজম রিসোর্স সেন্টারগুলো অটিজম আক্রান্ত শিশুদের জন্য শনাক্তরণ, মূল্যায়ন, থেরাপি ও কাউন্সেলিংসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা দিচ্ছে।
বেলারুশের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু ড্যাপকিউনাস ইভেন্টটির উদ্বোধনীতে অংশ নেন। ইভেন্টটির দ্বিতীয় পর্বে একটি ইন্টার্যাকটিভ প্যানেল আলোচনায় মডারেটর ছিলেন ড. অ্যান্ডি সিহ। প্যানেলিস্টরা অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডার মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেতৃত্বশীল ভূমিকা ও গৃহীত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সারাবাংলা/টিআর
অটিজম অটিজম সচেতনতা দিবস জাতিসংঘে স্থায়ী মিশন মাসুদ বিন মোমেন