এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৩ শতাংশ, পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
৪ এপ্রিল ২০১৯ ১২:৫৮
ঢাকা: চলতি ২০১৯-২০১০ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-২০১৯’ প্রকাশ উপলক্ষে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ ও ভূটান অঞ্চল) রবার্ট জে রিপোর্টিট প্রকাশ করেন। এ সময় বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট জাহিদ হোসেন প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এর আগে, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ৮ শতাংশ এবং সরকার ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা জানিয়েছিল। তিনটি প্রতিবেদনে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার তিন রকম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে রবার্ট জে বলেন, বিশ্বব্যাংকের নিজস্ব হিসাব-নিকাশ আছে। বিভিন্ন তথ্য ও পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে বিশ্বব্যাংক মনে করছে, এ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হবে। এটা বিশ্বব্যাংকের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ।
বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট জাহিদ হোসেন বলেন, জিডিপিতে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি আর্থিক খাতের সংস্কার করতে হবে। মোটা দাগে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন ছাড়া ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা কঠিন হবে। তবে বাংলাদেশ জিডিপিতে ৭ শতাংশ বা তার বেশি প্রবৃদ্ধি নিয়মিত ধরে রাখতে পারলে ২০১৪১ সালের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বাংলাদেশ কাজ করছে, তা অর্জনে সক্ষম হবে বলে জানান তিনি।
আর্থিক খাতে দুই বাধা
খেলাপি ঋণ ও রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থতাকে দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতায় সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন জাহিদ হোসেন। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি না পাওয়াকেও তিনি অর্থনীতির দুর্বলতার জায়গা বলে অভিহিত করেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, ব্যক্তি খাতে যেভাবে বিনিয়োগ হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হচ্ছে না। ব্যক্তি খাতে ঋণ প্রবাহ কমেছে। শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এর আগে আর্থিক খাতে যেসব দুর্বলতা ছিল, তা আরও বেড়েছে।
রাজস্ব আদায়ের চিত্র তুলে ধরে ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের এই লিড ইকোনমিস্ট বলেন, বাংলাদেশের রাজস্ব খাতে এখনও পরিবর্তন আসছে না। রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। ফলে চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি আরও বাড়বে। ঘাটতির পরিমাণ জিডিপি’র ৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে, তবে তা ৫ শতাংশের নিচে থাকবে। গত অর্থবছরে এই ঘাটতি ছিল ৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
দেশের আমদানি-রফতানির তুলনামূলক চিত্র উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন বলেন, ২০১৮ সালে দেশে ২৫ শতাংশের বেশি আমদানি হয়েছে, সে তুলনায় রফতানি কম হয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরে আমদানি কমেছে, রফতানি কিছুটা বেড়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। ফলে বিভিন্নভাবে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসছে। কিন্তু সে তুলনায় পেমেন্টও (আমদানি বা এলসি খোলার মাধ্যমে ডলার দেশের বাইরে চলে যাওয়া) বাড়ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব মুদ্রা বাজারে পড়ছে।
এদিকে, বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-২০১৯’ প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির পাঁচটি দেশের তালিকার একটি বাংলাদেশ। তালিকার বাকি দেশগুলো হলো— ইথিওপিয়া, ঘানা, ভুটান ও আইভরি কোস্ট।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর