Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্কয়ারসহ ৩ কোম্পানির ওষুধ নকল করার কারখানার সন্ধান


৪ এপ্রিল ২০১৯ ২২:৩৭ | আপডেট: ৫ এপ্রিল ২০১৯ ১২:৩৫

ঢাকা: রাজধানীর গেণ্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডের একটি বাসা থেকে স্কয়ার, ইনসেপটা ও অপসোনিন কোম্পানির নকল ওষুধ তৈরির একটি কারখানা খুঁজে পেয়েছে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ। স্কয়ারের সেকলো-২০, ইনসেপটার ফিনিক্স-২০ ও অপসোনিনের মনটেয়ার-২০ ওষুধ নকল করে তৈরি করা হতো এখানে।

নকল এই কারখানা থেকে পুলিশ অন্তত ৫ কোটি টাকার ওষুধ জব্দ করেছে। একই সঙ্গে আরও যে পরিমাণ ওষুধ তৈরির প্যাকেট, ক্যাপসুল, ট্যাবলেট রয়েছে তা আরও কয়েক কোটি টাকার হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ডিএমপির ডেমরা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে চলে এই অভিযান।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডেমরা জোন গেন্ডারিয়া ও যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশের সহযোগিতায় নকল এই ওষুধের কারখানা আবিস্কার করা হয়। এখান থেকে কয়েকটি প্যাকেজিং মেশিন জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি জব্দ করা হয় কয়েক কোটি টাকার নকল ওষুধের কাঁচামাল।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে আসার আগেই টের পেয়ে পালিয়ে যায় কারখানার মালিকসহ অন্যরা। যারা এরকম নকল ওষুধ তৈরির কারখানা করেছে, তাদের ধরে আইনের আওতায় আনা হবে। ভেজাল ও নকল ওষুধ তৈরি করা একটি বড় অপরাধ। আমরা কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত করা হবে।’

প্যাকেজিং মেশিনের দাম জানতে চাইলে পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যে জানতে পেরেছি, মেশিনের দাম ৯০ লাখ টাকা। এই মেশিন দিয়ে নিখুঁতভাবে স্কয়ার, ইনসেপটা আর অপসোনিন ব্র্যান্ডের ওষুধ প্যাকেজিং হয়ে বের হয়ে আসে। অন্যান্য রুমে আরও কয়েকটি মেশিন আছে। এখানে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা আছে।’

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, ছয় রুমের টিনের চালার একটি স্যাঁতস্যাঁতে বাসা। একজন মানুষ একটি বস্তা বা কার্টন নিয়ে চলতে পারবে এমন সরু গলির ভেতরে বাসাটি। সেখানে শফিকুল নামে এক যুবক এসে ঘটনার বর্ণনা দিতে শুরু করেন। জানতে চাইলে তিনি নিজেকে পুলিশের সোর্স দাবি করেন। শফিকুল বলেন, ‘আমিই পুলিশকে এই নকল ওষুধের কারখানার তথ্য জানিয়েছি।’

তার সাথে থাকা আরেক যুবক মোস্তাফিজ সারাবাংলাকে জানান, গত ৫/৬ মাস হলো এক নারীর কাছ থেকে এই বাসাটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। তারা ক্যাপসুল আর ট্যাবলেটগুলো অন্য জায়গা থেকে তৈরি করে এখানে প্যাকেজিং করত। আকবর আর আক্কাস নামে দুই ব্যক্তি এই কারখানার মালিক। সেখানে আরেকজন কর্মচারী ছিল।’

মোস্তাফিজ জানান, স্কয়ার কোম্পানিতে যারা ওষুধ সেলসের কাজ করেন তাদের তিনি ওই কারখানা থেকে প্রায়ই বেরিয়ে যেতে দেখেছেন। কিভাবে তাদের চিনলেন জানতে চাইলে মোস্তাফিজ বলেন, ‘হিরো মোটরসাইকেল আর পেছনে ব্যাগ। আবার কারখানার মালিকরাও মিটফোর্ড এলাকায় গিয়ে বস্তা বস্তা ওষুধ বিক্রি করতো।’

এই দুই মালিকের বাড়ি কোথায় জানতে চাইলে মোস্তাফিজ বলেন, ‘তাদের বাড়ি চট্টগ্রামে। এরা বেশি দিন এক জায়গায় থাকে না। আর চিপাগলির মধ্যে এরকম বাসা ভাড়া করে তারা এসব নকল ওষুধ তৈরি করে।’

ওষুধ কোম্পানি চাকরি করেন সাহাদাত হোসেন। এ ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সারা মাস চাকরি করে যে টাকা পাওয়া যায় না, একদিন নকল ওষুধ বিক্রি করলে তার চেয়ে বেশি টাকা পাওয়া যায়। এরকম নানা অফার রিপ্রেজেনটিটিভদের কাছে আসে। তবে ক্যারিয়ারের স্বার্থে অনেকেই এই অফার গ্রহণ করেন না।’

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর