উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন: নতুন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে আ.লীগ
৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৬:১৬
ঢাকা: উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। চলমান স্থানীয় সরকার বা উপজেলা নির্বাচনে আর দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলটির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো এবং দলীয় কোন্দল কমাতে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। দলীয় মনোনয়ন বাতিলের বিষয়টি ছাড়াও বৈঠকে চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতাকারী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থনকারী মন্ত্রী-এমপি ও দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য মাহাবুব-উল-আলম হানিফ এ প্রসঙ্গে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না রাখলে কেমন হয়, এ বিষয়ে আমরা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের মতামত নিয়েছি, নিচ্ছি। আমাদের কার্যনির্বাহী বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দলটির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া এবং দলীয় মনোনয়ন না দিলে কী হতো, এসব নিয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই সভায় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপনের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারা বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দিন দিন ভোটার উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। আর এবার বিএনপিসহ অধিকাংশ দল নির্বাচন বর্জন করার কারণে ভোটার উপস্থিতি অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের অনেকেই মনে করছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না রেখে উন্মুক্ত রাখতে পারলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে।
নেতারা আরও জানান, কার্যনির্বাহী সংসদের আজকের বৈঠকে চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের সমর্থনকারী দলীয় সংসদ সদস্য, নেতাদের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এর আগে দলের সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। এছাড়া দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হবে জানান নেতারা।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার (উপজেলা) (সংশোধন) বিল-২০১৫-এ বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দু’টি ভাইস চেয়ারম্যান (সাধারণ ও সংরক্ষিত) পদের নির্বাচনের জন্য প্রার্থীকে রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে। ২০১৭ সালে মার্চ মাসে আইনটি পাস হওয়ার পর প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ভোট হয় উপজেলায়। এর দুই বছর পর এবার পঞ্চম উপজেলা পরিষদের ভোট শুরু হয়েছে ৯ মার্চ। চলমান নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি এ পর্যন্ত সর্বনিম্ন ৩৬ শতাংশে নেমেছে।
সারাবাংলা/এইচএ/এসবি