সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ভিসি কার্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে আন্দোলনরত ঢাবি শিক্ষার্থীরা। এসময় নারীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের ওপর নিপীড়নের কথা তুলে ধরেন। তারা অবিলম্বে দোষী ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সামান্তা শারমিন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের হামলার বর্ণনা দিয়ে কথা বলেন ঢাবি শিক্ষার্থী শ্রবণা শফিক দিপ্তী, ফারহান শাহরিয়ার পুলক, মাসুদ আল মাহদী, আসিক।
ঢাবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলনকারীদের শিক্ষার্থীদের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার ভিসি কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন তারা। এসময় পুনরায় তারা ছাত্রলীগের শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হন। তারা গতকালের হামলার নিন্দা জানিয়ে ৫ দফা দাবি পেশ করেন।
এই ৫ দফা দাবি হচ্ছে- নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বহিস্কার, হামলাকারী অন্য যারা রয়েছে তাদের বহিস্কার ও শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা, প্রক্টরের অপসারণ, আন্দোলনকারীদের ওপর অজ্ঞাতনামা মামলা তুলে নেওয়া এবং অবিলম্বে অধিভূক্ত সাত কলেজের সমস্যা সমাধান করা।
এর আগে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সকালে সংবাদ সম্মেলন করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। তারা আগামী ২৯ তারিখ সারাদেশে সর্বাত্মক শিক্ষা ধর্মঘটের আহ্বান জানান। এছাড়া সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য এক বিবৃতিতে ঢাবি ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগ এবং অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কার দাবি করেন।
এদিকে আন্দোলনকারীরা ঢাবির শিক্ষার্থী নয় বলে দাবি করেছেন ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ হাসান। আবিদ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেউ ভিসিকে অবরুদ্ধ বা ভিসি কার্যালয় ভাঙচুর করতে পারে না। যারা এসব করেছেন তারা কেউ ক্যাম্পাসের নয়। তাদের বেশিরভাগই বহিরাগত ছিল।
শিক্ষার্থীরা জানান, সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল চেয়ে গত ১৫ জানুয়ারি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কর্মসূচি দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে আন্দোলন করতে থাকে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে আন্দোলনে থাকা নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। ওই ঘটনায় আন্দোলনে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে ১৭ জানুয়ারি ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে সেই আশ্বাস বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভিসি কার্যালয় ঘেরাও করে। সেখানে হামলা চালায় ছাত্রলীগের কর্মীরা।
সারাবাংলা/ইউজে/এনএস