Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অগ্নি-সন্ত্রাসের মামলা একটাও মিথ্যা নয়, বিএনপিকে শেখ হাসিনা


৫ এপ্রিল ২০১৯ ২৩:৫৭

ছবি: ফাইল

‘যারা অগ্নি-সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলাও চলছে। যদিও এখন শুনি বিএনপি খুব চিৎকার করে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একটা মামলাও মিথ্যা নয়।’ শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসময় বিএনপির শাসনামলের দলটির অপকর্ম ও অপশাসনের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা আরও বলেন, যদিও আমরা প্রথমবার ৫ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। যেটুকু অগ্রগতি আমরা করেছিলাম ২০০১-এ বিএনপি আসার পর তা বন্ধ করে দেয়। আবার সেই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, বোমা হামলা গ্রেনেড হামলা, সংসদ সদস্যকে হত্যাসহ নানা অপকর্ম ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি পরিচালনা করেছে।

সেসময়ের দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর দুর্নীতির তো একটা আখড়া ছিল। এমনকি সরকারের মধ্যে সরকার। সরকার এক জায়গায়, আবার হাওয়া ভবন করে সেখান থেকে বসে বসে কমিশন খাওয়া, দুর্নীতি করা, মানি লন্ডারিং, অস্ত্র চোরাকারবারি এহেন অপকর্ম নাই যে তখন করা হয় নাই।

২০০১ সালে বিএনপির শাসনামলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর চালানো নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের এই অপকর্মের কারণে ইমার্জেন্সি শুরু হল। সেখানে আরেক দফা মানুষের ওপর নির্যাতন। ২০০৮ সালে নির্বাচন হল, সেই নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিল এবং ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করলাম। আজকে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের সরকার পরিচালনায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এই চলার পথ খুব সহজ ছিল না। কারণ ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে অগ্নি-সন্ত্রাস আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করা, মানুষের উপর অত্যাচার করা, রাস্তা কেটে ফেলা, গাছ উপড়ে ফেলা, সাধারণ মানুষের চলাফেরার বাস, ট্রাক ট্রেন; এমন কিছু ছিল না তাদের আক্রমণের শিকার হয়নি।

আরও পড়ুন: দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতার কারণ জানতে চেয়েছেন শেখ হাসিনা

নির্বাচন বন্ধের নামে ২০১৩ শেষের দিক থেকে শুরু করা আগুন সন্ত্রাসের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই হলো বিএনপির অপকর্ম। যারা অগ্নি-সন্ত্রাসের সাথে সম্পৃক্ত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা চলছে। যদিও এখন শুনি আমরা তারা খুব চিৎকার করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, একটা মামলাও মিথ্যা না।’

‘আর বিশেষ করে অগ্নি-সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবেই। বেগম খালেদা জিয়ার যে মামলা সে মামলা আওয়ামী লীগের দেওয়া ছিল না। এটা ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সরকারপ্রধান রাষ্ট্রপতি এবং সেনাপ্রধান সবই খালেদা জিয়া নিজের হাতে, নিজের পছন্দের লোক দিয়ে করা। এবং সেখানে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ঘুষ দুর্নীতি মামলায় সে সাজাপ্রাপ্ত ও দণ্ডপ্রাপ্ত।

তারেক জিয়ার বিভিন্ন অপকর্মের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা যে ব্যাপক দুর্নীতি করে অগাধ সম্পদের মালিক সেটা এখনো বোঝা যায়, বিদেশেও থেকেও তাদের যে জীবনযাপন, বিত্ত-বৈভব তার প্রকাশও আমরা দেখতে পাই। এভাবে যারা অপকর্ম করে গেছে বাংলাদেশের জনগণ কখনো তাদের চায়নি।

তিনি বলেন, আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে এগিয়ে যাব। ইনশাল্লাহ, আমরা তা করতে সক্ষম হব। আমাদের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট মজবুত এবং আমরা অর্থনৈতিক যে নীতিমালা গ্রহণ করেছি তার ফলাফলটা তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছায়। অর্থাৎ গ্রাম পর্যায়ের মানুষের দারিদ্র্যের হার কমছে। তাদের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের জীবন-মান উন্নত হচ্ছে। যেটা আমাদের সবথেকে বেশি লক্ষ্য ছিল। আয় বৈষম্য কমিয়ে এনে একেবারে উন্নয়নের ছোঁয়াটা যেন বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে পৌঁছায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্যটা হচ্ছে ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করব, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন উদযাপন করব। কাজেই বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে নিয়ে এসেছি, ইনশাল্লাহ হত-দরিদ্র বলে কেউ থাকবে না।

দেশ নিয়ে সুপরিকল্পিত পরিকল্পনার ফলাফলটা দেশবাসী পাচ্ছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত হবে। আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। আমরা ২০৭১ সালে স্বাধীনতার শতবার্ষিকী উদযাপন করব। যদিও আমরা থাকব না। কিন্তু আমাদের নতুন প্রজন্ম যারা থাকবে, তারা একটা উন্নত দেশের নাগরিক হিসাবে স্বাধীনতার শতবার্ষিকী পালন করবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা পরিচালনা করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। সভায় উপস্থিত ছিলেন, দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ইঞ্জি. মোশাররফ হোসেন, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, একেএম এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ, উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, বদর উদ্দীন আহমদ, এসএম কামাল হোসেন, আমিরুল আলম মিলন, মির্জা আজম, এবিএম রিয়াজুল কবীর কাওছার, পারভীন জামান কল্পনা, ইকবাল হোসেন অপু, আনোয়ার হোসেন, মারফা আক্তার পপিসহ অন্যান্যরা।

সারাবাংলা/এনআর/এনএইচ

আওয়ামী লীগ খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতি বিএনপি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর