জঙ্গলে আটকে মুক্তিপণ আদায়, গ্রেফতার ১
২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ২০:০৫
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: গাজীপুরের জঙ্গলে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার রাতে মিরপুরের এফ ব্লকের ১ নম্বর সড়কের ৪ নম্বর বাসা থেকে শফিকুল ইসলাম ওরফে শামছুল হক ওরফে বাবুল ওরফে মলম বাবু ওরফে ডাকাত লিতু (২৮) নামে অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
পিবিআই ঢাকা মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ এ বিষয়ে বলেন, ‘শাহ আলী থানার রাইনখোলায় রাহাত থাই এলুমিনিয়াম অ্যান্ড গ্লাস হাউসের মালিক আরিফ খান। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলা সদরের সিংরাই এলাকায়। তিনি শাহ আলী থানায় অভিযোগে জানিয়েছিলেন— গত বছরের ৫ ডিসেম্বর দুপুরে বাবুল (২৮) নামে এক ব্যক্তি তার দোকানে এসে জানায়, গাজীপুর চন্দ্রা মহিলা ক্যাডেট কলেজের পেছনে একটি বাড়িতে থাই গ্লাস ও এলুমিনিয়ামের কাজ করা প্রয়োজন। তিন দিন পর ৮ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তি ফের আরিফের দোকানে এসে দাম-দর করে যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৯ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তি আবারও দোকানে আসে। এরপর সে আরিফ ও তার মিস্ত্রি সোহাগ খলিফাকে (২৭) সাথে করে কয়েক দফায় যানবাহন পরিবর্তন করে জঙ্গলে নিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওখানে যাওয়ার পর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে থাকা ওই ব্যক্তির সহযোগীরা আরিফ ও সোহাগকে অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে ফেলে। সেখানে অপহরণকারীরা তাদের হাত-পা বেঁধে মারধর করে। তাদের লোহার রড ও চাপাতির বাট দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারী আঘাত করে। অপহরণকারীরা আরিফের সঙ্গে থাকা নগদ ৭ হাজার টাকা ও ২টি মোবাইল ফোনসেট কেড়ে নেয়। পরে আরিফের মোবাইলফোন দিয়ে তারই স্বজনের সঙ্গে কথা বলে মুক্তিপণের জন্য বিকাশের মাধ্যমে ৮৫ হাজার ৯০০ টাকা আদায় করে।’
বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ‘মুক্তিপণ পাওয়ার পর অপহরণকারীরা আরিফ ও সোহাগের হাত-পা ও চোখ বেঁধে জঙ্গলের পৃথক স্থানে ফেলে রেখে যায়। পরে পথচারীদের সহযোগিতায় মোবাইলে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা বাসায় ফেরেন। ১৯ ডিসেম্বর আরিফ খান বাদী হয়ে শাহ আলী থানায় মামলা (মামলা নম্বর-৭) দায়ের করেন। এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মিরপুরের একটি বাসা থেকে এ চক্রের প্রধান শফিকুলকে গ্রেফতার করা হয়।’
গ্রেফতারের জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য উল্লেথ করে তিনি বলেন, ‘শফিকুলের নেতৃত্বে গড়ে উঠা এ চক্রটি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে ব্যবসায়ীদের অপহরণ করে একইভাবে মুক্তিপণ আদায় করে। মুক্তিপণ আদায় শেষে গহীন জঙ্গল অথবা পরিত্যাক্ত ভবনে ভিকটিমদের ফেলে চলে যায়। চক্রটি কখনো বাসের সাধারণ যাত্রী সেজে পথে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাস যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নিয়ে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শফিকুলের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় খুন, ডাকাতি, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটে নেওয়ার মামলা রয়েছে। এ চক্রের আরও একাধিক সদস্যকে চিহ্নিত করা গেছে এবং তাদেরকেও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে।’
সারাবাংলা/এসআর/আইজেকে