ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের দুই ছেলে ৭ দিনের রিমান্ডে
৮ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:১৮
ঢাকা: পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের দুই ছেলে মো. হাসান ও সোহেল ওরফে শহীদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (৮ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী এ রিমান্ডের আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ডের শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তার চকবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক মোরাদুল ইসলাম আসামিদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ভবনটি মূলত আবাসিক। কিন্তু আবাসিক ভবনকে বাণিজ্যিকভাবে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করলে প্রাণহানি হওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। সে বিষয় জানার পরও আসামিরা ওই ভবনটিকে গুদাম হিসেবে ভাড়া দেয়। এ কারণে আগুনে পুড়ে ৭০ জন লোক মারা গেছেন। আরও বহু লোক আহত হয়েছেন। এছাড়া প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন যানবাহন পুড়ে গেছে। যার দায় মালিক পক্ষ ও ভাড়াটিয়ারা এড়াতে পারেন না।
রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, এই আগুনের ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে কোনো সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠন অন্তর্ঘাত বা সাবোট্যাজ ঘটিয়ে প্রাণহানিসহ সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি করেছে কিনা এবং সরকারকে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত কি না, সে বিষয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।
অন্যদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল করে জামিন প্রার্থনা করেন। আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, আগুনে পুড়ে আসামিদের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। তারা সবাই নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তাদের জন্ম ওই স্থানে, তাদের অস্তিত্বও সেখানে মিশে আছে। আর অস্তিত্বে কেউ আগুন লাগাতে চাইবে না। তাই রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি।
এর আগে, গত ১১ মার্চ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আসামিদের তিন সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। জামিনের মেয়াদ শেষে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর হাইকোর্টের দেওয়া ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আসামিরা আত্মসমর্পণ করে আদালতে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজারের চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনে আগুন লাগে। ভয়াবহ সেই আগুনে মোট ৭১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা আসিফ চকবাজার মডেল থানায় ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সারাবাংলা/এআই/টিআর