Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদ্যুতে রেকর্ড পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে


৮ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:০৫

ঢাকা: চলতি অর্থবছরে (২০১৮-১৯) বিদ্যুৎখাতে রেকর্ড পরিমাণ ভর্তুকি লাগছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুতে ভর্তুকি সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি লাগবে বলে মনে করছে বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা জানান, গ্যাস সংকটের কারণে জ্বালানি তেল নির্ভর (ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল) কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা বেড়ে যাওয়ার কারণেই ভর্তুকি বেড়ে গেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে বিদ্যুৎ কেনায় ভর্তুকি বাবদ চার হাজার ৬শ কোটি ১৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ব্যয় করেছে সরকার। যা ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের মোট ভর্তুকির চাইতে দুইশ কোটি টাকা বেশি।

বিজ্ঞাপন

গত অর্থবছরে বিদ্যুৎখাতে ভর্তুকি ছিল চার হাজার দুইশ কোটি টাকা। ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের অধিকাংশই রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সামনে গ্রীষ্মকাল। সঙ্গত কারণেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাবে। যে কারণে জ্বালানি তেল নির্ভর কেন্দ্রগুলো পূর্ণমাত্রায় চালাতে হবে। এসব কেন্দ্রের বিদ্যুৎ বেশি দামে কেনায় চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেড়ে যাবে।

বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা গ্যাস চেয়ে পাচ্ছি না। যে কারণে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘গত একবছরে গ্যাস সংকটের কারণে জ্বালানি দেল নির্ভরতা বেড়েছে। তেলভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার কারণে এখন ইউনিট প্রতি ৬ টাকায় কিনে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে চার টাকা ৮৪ পয়সায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে ইউনিট প্রতি গড়ে এক টাকা ৪২ পয়সা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে জ্বালানি তেল নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয় ১০/১১ ইউএস সেন্ট। যেখানে ভারত থেকে ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ আমদানিতে ব্যয় হচ্ছে ৮ ইউএস সেন্ট।

ওই কর্মকর্তা জানান, কম দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে ১৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জ্বালানি বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারের অর্থবিভাগের কাছে ভর্তুকির জন্য অতিরিক্ত টাকাও চাওয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে গ্যাস-ভিত্তিক ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ দুই টাকা থেকে সাড়ে তিন টাকা। আর রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালানি তেলে উৎপাদিত বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি খরচ হয় ১৩ টাকা (ফার্নেস অয়েল) থেকে ২৩ টাকা (ডিজেল)।

গত বছরের (২০১৮) জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ও ভারত থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রি করায় লোকসান হয়েছে তিন হাজার ২৮৩ দশমিক ০৯ কোটি টাকা। আর ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এক হাজার ৩৩৫ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে।

খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার বড় বড় কেন্দ্র বানানোর উদ্যোগ নিলেও এখনো পর্যন্ত বেসরকারি খাতের রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের ওপর নির্ভরশীল। এই নির্ভরশীলতা কমাতে না পারলে সামনে লোকসানের পরিমাণ বেড়ে যাবে। যা ভর্তুকির মাধ্যমে মেটাতে হবে।

সারাবাংলা/এইচএ/একে

বিদ্যুৎ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর