Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মৃত্যুই বুঝি মালয়েশিয়ায় টেনে নিয়েছিল আল আমিন-সোহেলকে


৮ এপ্রিল ২০১৯ ২২:১৬

দাদা-দাদীর কোলে বসে আছে সোহেলের আট মাসের সন্তান সোহানা

চাঁদপুর: একটু ভালো উপার্জন করবেন এই আশায় মাত্র সাত মাস আগে ঋণ করে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরভাগল এলাকার আল আমিন। একই কারণে আট মাস আগে দেশটিতে যান হাজীগঞ্জের ৭ নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বশির মেম্বার বাড়ির মো. সোহেল।

প্রবাস জীবনে এক বছর না পেরোতেই মৃত্যুর কাছে হার মেনেছেন তারা। মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জনের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন চাঁদপুরের আল আমিন আর সোহেল। তাদের সঙ্গে মারা গেছেন আরো তিন বাংলাদেশি।

বিজ্ঞাপন

আল আমিন চরভাগল এলাকার আমির হোসেনের ছেলে। পরিবারের সদস্যরা জানান, সাত মাস আগে জীবিকার তাগিতে মালয়শিয়া পাড়ি জমান তিনি। এখনো ঋণের টাকাই পরিশোধ করতে পারেন নি। বাবা-মা ও তিন ভাইয়ের পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। ভাগ্যের চাকা সচল করতে গিয়ে ঋণের বোঝা নিয়েই নিভে গেলো আল আমিনের জীবন প্রদীপ।

ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন আল আমিনের মা।

অন্যদিকে ভিনদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় একমাত্র সন্তান সোহেলকে হারিয়ে পাগলপ্রায় হাজীগঞ্জের আনোয়ার হোসেন দম্পত্তি। মাত্র ৮ মাস আগে বিভিন্ন এনজিও থেকে টাকা ঋণ করে মালয়েশিয়া পাড়ি দেন সোহেল। সেখানে মর্মান্তিক ওই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।

২০১৩ সালে এসএসসি পাশ করেও দেশে কিছু করতে পারছিলেন না তিনি। ভাগ্য বিড়ম্বিত সোহেলকে সম্প্রতি প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ করে মালয়েশিয়া পাঠান তার বাবা।

সোমবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে সোহেলের বাড়িতে দেখা যায়, চলছে শোকের মাতম। দোচালা বাড়ির ভেতর থেকে ভেসে আসছে তার স্ত্রী শাহানারা বেগমের কান্না। সেই কান্না পুরো বাড়ির পরিবেশকে ভারী করে তুলেছে। বাবা আনোয়ার হোসেন আর মা রোকেয়া বেগম বাকরুদ্ধ। সোহেলের একমাত্র মেয়ে আট মাসের সোহানা অবশ্য এসবের কিছুই বুঝতে পারছে না। সে শুধু এই কোল থেকে সেই কোলে ঘুরছে।

বিজ্ঞাপন

বাবা আনোয়ার হোসেন বুক চাপড়ে বলেন, ‘আমার সবকিছুই তো শেষ হয়ে গেলো। সরকারের কাছে আকুল আবেদন আবেদন সরকার যেন আমার ছেলের লাশটা দেশে আনার ব্যবস্থা করে দেয়। শেষ বয়সে এসে যেন ছেলের লাশটা নিজ বাড়িতে মাটি চাপা দিতে পারি।’

আমাকের কুমিল্লা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো বাকি তিনজনের মধ্যে দুজনের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি ও লালমাই উপজেলায়। এদের মধ্যে দাউদকান্দির হাসানপুর ঢাকারগাঁও গ্রামের ইউনুছ মুন্সীর ছেলে রাজিব মুন্সীও ৮ মাস আগে জীবিকার সন্ধানে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। আরেকজন হলেন লালমাই উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে মুহিন। গত বছর অবৈধভাবে বাহরাইন গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ধরা পড়ার পর দেশে ফিরে আসেন। গত বছর আগস্ট মাসে তিন লাখ টাকা ঋণ করে মালয়েশিয়ায় যান।

সারাবাংলা/এসএমএন

চাঁদপুর মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর