চট্টগ্রামে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কথিত বড় ভাই নিহত
৯ এপ্রিল ২০১৯ ০৮:২৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো.সাইফুল(২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। সম্প্রতি কিশোরদের বিরোধ মেটাতে গিয়ে খুন হওয়া এইচ এম লোকমান হোসেন রণি হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই সাইফুল। তিনি একটি কিশোর গ্রুপের কাছে ‘বড় ভাই’ নামে পরিচিত । মঙ্গলবার (০৯ এপ্রিল) ভোরে নগরীর বাকলিয়া থানার খালপাড় কবরস্থান এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রনব চৌধুরী।
গত ০৬ এপ্রিল, নগরীর বাকলিয়া ও গোলপাহাড় এলাকার কিশোরদের দুই পক্ষের মধ্যে প্রেম সংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে গিয়ে গভীর রাতে গুলিতে খুন হন লোকমান। লোকমান গোলপাহাড় এলাকার কিশোরদের কথিত ‘বড় ভাই’ হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে বাকলিয়া এলাকার কিশোরদের ‘বড় ভাই’ হিসেবে পরিচিত নিহত সাইফুল। সাইফুলের গুলিতে লোকমান নিহত হয় বলে এ সংক্রান্ত মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে।
বাকলিয়া থানার ওসি প্রনব চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, সোমবার রাতে ফটিকছড়ি উপজেলার জাফতনগর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মামলার প্রধান আসামি সাইফুল এবং তিন নম্বর আসামি জিয়াউদ্দিন বাবলুকে গ্রেফতার করা হয়। থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে সাইফুলের কাছে জানতে চাওয়া হয় লোকমানকে যে অস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছিল, সেই অস্ত্রের বিষয়ে। সাইফুলের স্বীকারোক্তি মতে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য কল্পলোক আবাসিক এলাকার খালপাড় কবরস্থান এলাকায় গেলে কয়েকজন সন্ত্রাসী তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় উভয়পক্ষে গোলাগুলির একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে। তখনই ঘটনাস্থলে সাইফুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় বলে দাবি ওসি’র।
ওসি জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি এবং দুই রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। গোলাগুলিতে বাকলিয়া থানার এসআই কারিমুজ্জামান ও এএসআই আলমগীর আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ওসি প্রনব।
সাইফুল নগরীর বাকলিয়া থানার সবুজবাগ আবাসিক এলাকার রফিক আহাম্মদের ছেলে। গ্রেফতার জিয়া একই থানার খালপাড় এলাকার কামাল উদ্দিনের ছেলে। অন্যদিকে নিহত লোকমান (৩৫) নগরীর গোলপাহাড় সংলগ্ন বাদশা মিয়া রোডের পশুশালা এলাকায় থাকতেন। তিনি সেখানে একটি কুলিং কর্নার পরিচালনা করতেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, লোকমান ও সাইফুল উভয়ই নিজ নিজ এলাকায় যুবলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিল। উভয়ই নিজ নিজ এলাকায় কিশোরদের গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করত। তবে সাইফুলের বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
জানা যায়, নগরীর খালপাড় এলাকার বাসিন্দা অনীক নামের এক কিশোরের সঙ্গে স্থানীয় একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। অনীক এইচএসসি প্রথম বর্ষ এবং মেয়েটি নবম শ্রেণির ছাত্রী।
সম্প্রতি মেয়েটি অনীককে এড়িয়ে চলা শুরু করে। নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে গোলপাহাড় এলাকার শ্রাবণ নামের আরেক কিশোরের সঙ্গে। শ্রাবণের বন্ধু গোলপাহাড় এলাকার জয় গত শনিবার রাতে খালপাড় এলাকায় যায়। সেখানে তাকে আটকে রাখে অনীকরা।
লোকমান হচ্ছে গোলপাহাড় এলাকায় শ্রাবণ-জয়দের কথিত ‘বড় ভাই’। লোকমানের কাছে এই খবর পৌঁছার পর তারা ৬ জন তিনটি মোটর মাইকেলে করে খালপাড় এলাকায় যায়। সেখানে অনীকদের সঙ্গে ঝগড়া, একপর্যায়ে মারামারির উপক্রম হয়। তখন একটি বাসার দোতলা থেকে অনীকদের কথিত বড় ভাই সাইফুল্লাহ লোকমানকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পরে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় লোকমানের মায়ের দায়ের করা মামলায় এর আগে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/এনএইচ