লুই আই কানের অমর সৃষ্টিতে ‘আবহমান বাংলা’
৯ এপ্রিল ২০১৯ ১১:০৯
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের নকশায় আবহমান বাঙালি স্থাপত্যধারা উঠে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল। জাতিসংঘের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত লুই আই কানের অমর সব সৃষ্টি নিয়ে চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী ভাষণে প্রতিমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
জাতীয় সংসদ ভবনের বিভিন্ন তথ্যও উপস্থাপন করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংসদ ভবন এবং একটি স্থাপত্যের বিস্ময়। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় উপকরণ; যার নকশায় তুলে ধরা হয়েছে আবহমান বাঙালি স্থাপত্যধারা; যেখানে কৃত্রিম লেকের মাধ্যম দেখানো হয়েছে নদী-মাতৃক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
সোমবার (৮ এপ্রিল) ‘দ্বীপ থেকে দ্বীপে, লুই আই কান-এর সৃজনশীল পদচারণা’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় জাসিংঘের সদর দফতরে। অনুষ্ঠানটির যৌথ আয়োজক জাতিসংঘে বাংলাদেশ ও এস্তোনিয়ার স্থায়ী মিশন।
এস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণ করা মার্কিন স্থপতি লুই কানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান বলেন, আজ আমরা বিংশ শতকের অন্যতম সেরা স্থপতি লুই আই কান এবং তার অমর সৃষ্টি ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন’সহ অন্যান্য স্থাপনাসমূহকে স্মরণ করছি। ভাবতে অবাক লাগে, এস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা একজন স্থপতি এত দূরের একটি দেশে গিয়ে কীভাবে এমন অনুপম স্বাক্ষর রেখে গেলেন? নিশ্চিতভাবে এটি ছিল তাঁর হৃদয়সৃষ্ট একটি পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, এটি অবশ্যই উত্তর-দক্ষিণের বন্ধুত্বের এক অবিনাশী স্মারক। এই স্থাপত্য বাংলাদেশ ও এস্তোনিয়ার মধ্যে সৃষ্টি করেছে অটুট বন্ধুত্বের বন্ধন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেরা স্থাপত্য বিষয়ক সমালোচক ম্যাকক্যার্টার এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে জাহিদ হাসান রাসেল বলেন, এই ভবন বিংশ শতকের অন্যতম সেরা স্থাপত্য ভাস্কর্য।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি বিভিন্ন সভ্যতা ও যুগের স্থাপত্য কর্মের মেলবন্ধনের একটি অনন্য নিদর্শন হলেও বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই নকশার শিকড় গভীরভাবে প্রোথিত। ‘এ নির্যাস থেকেই এর সৃষ্টি’ – লুই আই কানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটি শুধু সংসদ ভবনই নয়; এটি স্থিতিশীলতা, মর্যাদা ও জাতির গর্বের প্রতীক।
বাংলাদেশের সংসদ ভবনকে লুই আই কানের এর অন্যতম সেরা স্থাপনা হিসেবে উল্লেখ করে এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি মিজ্ কারস্টি কালজুলেইড বলেন, কান এর সৃষ্ট ভাস্কর্যসমূহ ন্যায়, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতীক; যার জন্য জাতিসংঘ কাজ করছে।
লুই আই কান-এর ছেলে ন্যাথানিয়েল ক্যান তার পিতার স্থাপত্য কর্মের দর্শন -‘মানবীয় ঐকমত্য’র কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আজকের পৃথিবীতে এটি বড়ই প্রয়োজন’।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, এস্তোনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি সিভেন জুরগেনসনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাগণ ইভেন্টটিতে অংশগ্রহণ করেন। জনপ্রিয় ফটোগ্রাফার ও স্থপতি আর্নে ম্যাসিক পুরো প্রদর্শনীটির পরিকল্পনা করেন।
সারাবাংলা/এনএইচ