‘মেয়েটি যেন একটু শ্বাস নিতে পারে তাই অস্ত্রোপচার’
৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:৩৬
ঢাকা: ‘মেয়েটি শ্বাস নিতে পারছিল না। যেন একটু শ্বাস নিতে পারে, সেই জন্য তার এই অস্ত্রপোচার করা হলো। এখন সে শ্বাস নিতে পারবে।’ ফেনীর সেই মাদরাসা শিক্ষার্থীর অস্ত্রোপচারের পর সারাবাংলার প্রতিবেদককে এসব বলেন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন।
আর ও পড়ুন: সিংগাপুরে নেওয়া যাচ্ছে না ফেনীর দগ্ধ মাদরাসাছাত্রীকে
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বেলা ১১ থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে এই অস্ত্রোপচার চলে। ডা. নাসির বলেন, গতকালই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কিন্তু শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় অস্ত্রোপচার করতে পারিনি। সকালে সিংগাপুরের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরও একই পরামর্শ ছিল। শরীরের কোনো অংশ পুড়ে গেলে চামড়া শক্ত হয়ে যায়। হাত পায়ে হলে এটি নড়ানো যায় না। বুকে হলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এই মেয়েটির যেন শ্বাস নিতে সুবিধা হয়, সেই জন্য অস্ত্রোপচার করা হলো।
তিনি বলেন, এখনো ওর অবস্থা আশঙ্কাজনক। মেয়েটির চিকিৎসার ব্যাপারে আমরা সিংগাপুরের হাসপাতালের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই এখন তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে সকালে সিংগাপুরের চিকিৎসকদের সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকদের ভিডিও কনফারেন্সে কথা হয়। ভিডিও কনফারেন্স শেষে বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের জানান, আগুনে ঝলছে যাওয়া মাদরাসা শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য সিংগাপুরে নেওয়া যাচ্ছে না। মূলত শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করেই তাকে সেখানে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।
রোববার (৭ এপ্রিল) সকালে ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়েটির চিকিৎসা চলছে।
গত ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ-দৌলা ওই শিক্ষার্থীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে শনিবার (৬ এপ্রিল) ওই শিক্ষার্থী মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে অধ্যক্ষের অনুসারী কয়েকজন দুর্বৃত্ত হত্যার উদ্দেশ্যে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সারাবাংলা/এসআর/জেডএফ