শ্রমজীবী মানুষের সন্তান যেন বড় মানুষ হয়: মন্নুজান সুফিয়ান
৯ এপ্রিল ২০১৯ ২৩:০৫
ঢাকা: শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, ‘পোশাক খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণে ফান্ড গঠন করা হয়েছে। এ ফান্ড থেকে অসুস্থ শ্রমিক ও শ্রমিকের মেধাবী শিক্ষার্থীরা সহায়তা পাচ্ছেন। কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের সন্তান যেন শ্রমিক না হয়। তারা যেন বড় বড় মানুষ হয়।’
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) কারওয়ান বাজারের বিজিএমইএ ভবনে তৈরি পোশাক শিল্প খাতে কর্মরত অসুস্থ শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা ও শ্রমিদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় তহবিল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে চিকিৎসা বাবদ ৯৭ জনকে ৩১ লাখ ১০ হাজার টাকা ও শিক্ষাবৃত্তি বাবদ ৮২ জনকে ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে এ ফান্ড গঠিত। মালিকদের আয়ের ওপর নির্ভর করে এটা বাড়তে থাকবে। শ্রমিক সঠিকভাবে শ্রম দিলে মালিকরা উৎপাদিত পণ্য রফতানি করে লাভ করতে পারলে এই তহবিল আরও বড় হবে।’ পোশাক খাতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ-সহিংসতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু লোক আছে যারা মালিকের কল্যাণ চায় না শ্রমিকেরও কল্যাণও চায় না। তারা শুধু শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে তাদের মাঝে সংঘাত বাড়ায়। কোনো কারখানা বন্ধ থাকলে কিংবা ভাংচুর করা হলে মূল ক্ষতিটি হয় শ্রমিকদের। মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন পরে।’
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান সরাসরি পোশাক রফতানিতে আগামী এক বছর নগদ পাঁচ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানান। এ বিষয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পাঁচ শতাংশ হারে আর্থিক সহায়তার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবো। প্রধানমন্ত্রী শুধু শ্রমিকের পক্ষে নয়, মালিকের পক্ষেও আছেন। কারণ শ্রমিক-মালিক একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘ফান্ড সম্পর্কে প্রচার না হওয়ায় অনেক শ্রমিক এ ফান্ড থেকে সুবিধা নিতে পারছে না। এখন আর বিমার টাকা পেতে বেশি দিন সময় লাগে না। আমরা তা খুব দ্রুততার সঙ্গে দিয়ে দিচ্ছি। আমরা আরও দিতে পারি। শ্রমিকের পাশে দাঁড়াতে আমরা প্রস্তুত।’
মজুরি বাড়ায় এই কদিনেই অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন আর ছোট বড় মাঝারি শিল্প বলতে কিছু নেই। এখন সবাই কষ্ট করে যাচ্ছে। শুধু পোশাকের চূড়ান্ত রফতানির ক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশ নগদ সহয়তা চাই। এটি দেওয়া হলে সরকার আমাদের কাছ থেকে আরও বেশি পাবে।’
অনুষ্ঠানে মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রানী খান অভিযোগ করেন, ‘শ্রমিক কল্যাণের ফান্ড পেতে অনেক দেরি হয়। ফলে তা সঠিকভাবে শ্রমিকের কল্যাণে অসে না। তিনি বলেন, বাচ্চা পেটে নিয়ে আবেদন করেন শ্রমিকরা, সেই বাচ্চা অনেক বড় হয়ে গেলেও টাকা হাতে আসে না। অনেকে অসুস্থ্য হয়ে আবার সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু টাকা পান তার পরে।’
বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিকেএমইএর সহসভাপতি মনসুর আহমেদ, বিজেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ নাসির, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম উম্মুল হাছনা, শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি ও জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমআই